বাংলাদেশে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঝরনা বা জলপ্রপাত আছে, যার মধ্যে একটি হলো ঝরঝরি। এটি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার পন্থিছিলা বাজারের পাহাড়ে অবস্থিত। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার পাহাড়ি রেঞ্জের এক গহীন পাহাড়ি ট্রেইলের নাম হলো ঝরঝরি। ট্রেইল বলতে মূলত পাহাড়ি যে কোনো পথকে বোঝানো হয়।
ঝরঝরি ট্রেইল যেন স্রষ্টার নিজের হাতে সাজানো সবুজে মোড়ানো এক অমায়িক ঝরনার ট্রেইল। এই ট্রেইলে মোট ৫টি ঝরনা আছে। ঝরঝরি, স্বর্গের সিঁড়ি, ডেভিল ফলস বা মূর্তি ঝরনা তার উপরে লিমন ঝরনা ও সবার শেষে এক্সট্রিম লেভেলে মইনের মার খুম।
পাহাড়ে ঘেরা সবুজে মোড়ানো ঝরঝরি ট্রেইল শুরু ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পন্থিছিলা বাজার থেকে। বাজারের ভেতর দিয়ে আপনাকে চলে আসতে হবে পূর্বদিকে রেললাইন পর্যন্ত।
সেখান থেকেই শুরু হবে পাহাড়ের দিকে পায়ে হেঁটে যাত্রা। রেল লাইন ছেড়ে পাহাড়ে নামতেই চোখে পরবে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ সবজির বাগান, পাহাড়ি বন আর সবুজে ঘেরা পাহাড়। গন্তব্য তখন মাঠ পেড়িয়ে পাহাড়ি ঝিরিপথ।
এখানে যেন মুহুর্তেই সব রূপ পাল্টে ফেলেছে চির চেনা পৃথিবী। এবার শুরু ঝিরিপথে পা ভিজিয়ে ভিজিয়ে হেঁটে চলা। ঝরঝরি মূলত ঝিরির গোলকধাঁধা। প্রথমবার গেলে অবশ্যই সঙ্গে গাইড নিতে হবে। পাহাড়ি ঝিরির ছড়াছড়ি সেখানে।
ঝিরির সবুজে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর মূল ঝিরি ছেড়ে এবার ধরতে হবে বাঁ দিকের ছোট্ট ছরা। এ পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে দেখা মিলবে পাথরের মাঝে খাঁজ কেটে উপরের দিকে চলে যাওয়া একটা পাহাড়ি পথের।
পথটি নতুনদের জন্য একটু কষ্টসাধ্য। তবে জীবন মায়া ত্যাগ করার মতো কোনো ভয় নেই। এ পথ পারি দিতে প্রয়োজন একটু সতর্কতার আর খানিক পরিশ্রমের।
অন্যদিকে ঝরঝরির আপার স্ট্রিমে বা উপরের দিকে আছে ডেভিল ফলস বা মূর্তি ঝরনা। আছে স্বর্গের সিঁড়ি আর সবার শেষে মানে একদম এক্সট্রিম লেভেলে লিমন ঝরনা ও মইনের মার খুম।
কীভাবে যাবেন ঝরঝরি ঝরনায়?
ঝরঝরিতে যেতে হলে আপনাকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড উপজেলার পন্থিছিলা বাজারে আসতে হবে। সেখান থেকে অটোটে, রিকশায় কিংবা পায়ে হেঁটে রেল লাইন অব্দি গিয়ে তারপর মাটির রাস্তা ধরে ঝিরি অব্দি আসতে হবে।
ঝরঝরি ট্রেইলে অনেকগুলো ঝিরি, যেন গোলকধাঁধা। তাই আগে না গিয়ে থাকলে গাইড নিয়ে যাওয়া ভালো। স্থানীয় গাইড দামাদামি করে ২০০-৩০০ টাকার মাঝে পেয়ে যাবেন। ননএসি বাসে আসা যাওয়া থেকে শুরু করে ১৬০০-১৭০০ টাকার মধ্যেই খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুরে আসতে পারবেন।