ঢাকা ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেটে ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই, ৭ মাস পর অপসারণ!

  • নিউজ বিজয় ডেস্ক :-
  • প্রকাশিত সময় :- ১১:৪০:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২
  • ৬৩৮ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

কতার (২৮) নামে এক গর্ভবতী নারীর সিজার করেন গাইনি চিকিৎসক ডা. তাজিনা শারমিন। সেই সময় পেটে ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করে দেন তিনি। সেই ব্যান্ডেজ বৃহস্পতিবার রাতে বের করা হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে।

এর আগে চিকিৎসকের প্রাথমিক সন্দেহ ছিল পেটে টিউমার হয়েছে। তাই কয়েক দফা দেখানোর পর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে চিকিৎসক আরও নিশ্চিত হন পেটে টিউমার হয়েছে। তাই তাকে দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাতে অপারেশনের পর পেট থেকে টিউমারের পরিবর্তে বের হয়ে আসে ‘ব্যান্ডেজ’।

ভুক্তভোগী নারী সুফিয়া আকতার উখিয়ার রত্নপালং ইউনিয়নের তেলীপাড়া এলাকার জিয়াউদ্দিনের স্ত্রী।

ভুক্তভোগী সুফিয়া আকতারের ভাগিনা সাইমুম উদ্দিন নয়ন জানান, ৭ মাস আগে তার খালা সুফিয়ার সিজার করেন জেনারেল হাসপাতালের ডা. তাজিনা শারমিন। পরে ১৫ দিন পর ওই নবজাতক মারা যায়। দুই মাস আগে হঠাৎ পেটে ব্যথা অনুভব করেন সুফিয়া। ব্যথা বেড়ে গেলে প্রথমে উখিয়ার কোটবাজারের ওরিয়ন হাসপাতালে ডা. সামিয়াকে দেখানো হয়। এসময় সামিয়া ডা. শাহ আলমের কাছে রেফার করেন।

কিন্তু তারা ডা. শাহ আলমকে না দেখিয়ে ডা. তাজিনা শারমিনের কাছে নিয়ে যান। ডা. তাজিনা শারমিন রক্ত জমাট বেঁধেছে দাবি করে ১ মাসের ওষুধ দেন সুফিয়াকে। সেই ওষুধ সেবন করার পরও সুস্থ না হওয়ায় আবারও তাকে দেখানো হয়।

এবার ডা. তাজিনা শারমিন আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ডা. ওসমানুর রশিদের কাছে রেফার করেন। সেই আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট দেখে ডা. তাজিনা শারমিন ধারণা করেন তার পেটে টিউমার হয়েছে এবং সেটি দ্রুত অপারেশন করে বের করতে হবে।

কিন্তু তাজিনা শারমিনের প্রতি আস্থা হারিয়ে তারা ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে ডা. শাহ আলমের কাছে যান। পরে তার পরামর্শ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিকেলে ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে অপারেশন করে পেট থেকে টিউমারের পরিবর্তে বের করেন ব্যান্ডেজ। ব্যান্ডেজ পঁচে তার পেটে ইনফেকশন হয়েছে বলে চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী নারী সুফিয়া আক্তার এ ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক তাজিনা শারমিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ডা. তাজিনা শারমিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, রোগীর পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। যোগাযোগ করলে অবশ্যই আমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতাম।

কিন্তু দুই মাস আগে রক্ত জমাট বেঁধেছে ধারণা করে ওষুধ দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডা. তাজিনা ফোন কেটে দেন।

এদিকে রোগীর স্বজন নয়ন অভিযোগ করে বলেন, ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশন করে বের করা ব্যান্ডেজ প্রথমে রোগীর স্বজনদের দেখালেও পরে গায়েব করে ফেলে। তবে ওই সময় তিনি ব্যান্ডেজের ভিডিও ধারণ করে নেন। কিন্তু পরবর্তীতে ব্যান্ডেজটি ক্লিনারেরা ফেলে দিয়েছে দাবি করে গণমাধ্যমের সামনে আনতে অপারগতা প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসক শাহ আলমের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’

নিউজবিজয়/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

পেটে ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই, ৭ মাস পর অপসারণ!

প্রকাশিত সময় :- ১১:৪০:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২

কতার (২৮) নামে এক গর্ভবতী নারীর সিজার করেন গাইনি চিকিৎসক ডা. তাজিনা শারমিন। সেই সময় পেটে ব্যান্ডেজ রেখে সেলাই করে দেন তিনি। সেই ব্যান্ডেজ বৃহস্পতিবার রাতে বের করা হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে।

এর আগে চিকিৎসকের প্রাথমিক সন্দেহ ছিল পেটে টিউমার হয়েছে। তাই কয়েক দফা দেখানোর পর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে চিকিৎসক আরও নিশ্চিত হন পেটে টিউমার হয়েছে। তাই তাকে দ্রুত অপারেশনের পরামর্শ দেন। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাতে অপারেশনের পর পেট থেকে টিউমারের পরিবর্তে বের হয়ে আসে ‘ব্যান্ডেজ’।

ভুক্তভোগী নারী সুফিয়া আকতার উখিয়ার রত্নপালং ইউনিয়নের তেলীপাড়া এলাকার জিয়াউদ্দিনের স্ত্রী।

ভুক্তভোগী সুফিয়া আকতারের ভাগিনা সাইমুম উদ্দিন নয়ন জানান, ৭ মাস আগে তার খালা সুফিয়ার সিজার করেন জেনারেল হাসপাতালের ডা. তাজিনা শারমিন। পরে ১৫ দিন পর ওই নবজাতক মারা যায়। দুই মাস আগে হঠাৎ পেটে ব্যথা অনুভব করেন সুফিয়া। ব্যথা বেড়ে গেলে প্রথমে উখিয়ার কোটবাজারের ওরিয়ন হাসপাতালে ডা. সামিয়াকে দেখানো হয়। এসময় সামিয়া ডা. শাহ আলমের কাছে রেফার করেন।

কিন্তু তারা ডা. শাহ আলমকে না দেখিয়ে ডা. তাজিনা শারমিনের কাছে নিয়ে যান। ডা. তাজিনা শারমিন রক্ত জমাট বেঁধেছে দাবি করে ১ মাসের ওষুধ দেন সুফিয়াকে। সেই ওষুধ সেবন করার পরও সুস্থ না হওয়ায় আবারও তাকে দেখানো হয়।

এবার ডা. তাজিনা শারমিন আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য ডা. ওসমানুর রশিদের কাছে রেফার করেন। সেই আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট দেখে ডা. তাজিনা শারমিন ধারণা করেন তার পেটে টিউমার হয়েছে এবং সেটি দ্রুত অপারেশন করে বের করতে হবে।

কিন্তু তাজিনা শারমিনের প্রতি আস্থা হারিয়ে তারা ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে ডা. শাহ আলমের কাছে যান। পরে তার পরামর্শ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিকেলে ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে অপারেশন করে পেট থেকে টিউমারের পরিবর্তে বের করেন ব্যান্ডেজ। ব্যান্ডেজ পঁচে তার পেটে ইনফেকশন হয়েছে বলে চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী নারী সুফিয়া আক্তার এ ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক তাজিনা শারমিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ডা. তাজিনা শারমিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, রোগীর পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। যোগাযোগ করলে অবশ্যই আমি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতাম।

কিন্তু দুই মাস আগে রক্ত জমাট বেঁধেছে ধারণা করে ওষুধ দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডা. তাজিনা ফোন কেটে দেন।

এদিকে রোগীর স্বজন নয়ন অভিযোগ করে বলেন, ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশন করে বের করা ব্যান্ডেজ প্রথমে রোগীর স্বজনদের দেখালেও পরে গায়েব করে ফেলে। তবে ওই সময় তিনি ব্যান্ডেজের ভিডিও ধারণ করে নেন। কিন্তু পরবর্তীতে ব্যান্ডেজটি ক্লিনারেরা ফেলে দিয়েছে দাবি করে গণমাধ্যমের সামনে আনতে অপারগতা প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসক শাহ আলমের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’

নিউজবিজয়/এফএইচএন