ঢাকা ০৮:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সারাবিশ্ব বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে: সিইসি

  • নিউজ বিজয় ডেস্ক :-
  • প্রকাশিত সময় :- ১১:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩
  • ২৮৬ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। সংগৃহীত ছবি

শুধু আমরা না, সারাবিশ্ব বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, গাজীপুরে যে নির্বাচন হচ্ছে, এটার গুরুত্বটা নির্বাচন কমিশনের কাছে অত্যাধিক। কারণ আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এর আগে এতো বড় পরিসরের একটা নির্বাচন জাতীয়ভাবে অনেক গুরুত্ব বহন করবে বলে আমরা মনে করি। এজন্যই গাজীপুরের নির্বাচনটা একটা মডেল হোক, আপনাদের সহযোগিতায় আপনাদের সদিচ্ছার উপর ভিত্তি করে এই নির্বাচনটা যেন একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে যে আমরা সরকার বলেন বা নির্বাচন কমিশন বলেন আমরা যেন একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে শুধু আমরা না, সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে। নির্বাচন কিন্তু অর্থহীন নয়, নির্বাচনের গুরুত্ব রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আমাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। আমাদের নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা কথা বলছে, যুক্তরাজ্য কথা বলছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কথা বলছে, জাপান কথা বলছে এবং ইউনাইটেড নেশনস থেকেও কথা হচ্ছে।

বুধবার গাজীপুর শহরের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার অডিটোরিয়ামে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। রির্টানিং অফিসারের স্টাফ অফিসার এএসএম জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই নির্বাচনের আচরণবিধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন গাজীপুর জেলা নির্বাচন অফিসার এ এইচ এম কামরুল হাসান।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনে কালো টাকা ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে না। আমাদের কালো টাকার ছড়াছড়ির সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে উঠে আসতে হবে। যতদূর সম্ভব কালো টাকা বিতরণ প্রতিহত করার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থায় এখনও অনেক অপসংস্কৃতি কালো সংস্কৃতি রয়ে গেছে। রাতারাতি এসব সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব নয়। তবে ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো রকম অনিয়ম দুর্নীতি আমরা বরাদস্ত করবো না। আপনাদের সকলের চেষ্টায় হয়তো একটা সময় আসবে যখন আমরা সুশৃঙ্খলভাবে অহিংসভাবে ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবো। আপনারা যে সরকারটি গঠন করবেন সেটা গণতান্ত্রিক সরকার এবং জনগণের কাছে আপনাদের প্রত্যক্ষ সরাসরি জবাবদিহিতা থাকবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে যতটুকু থাকবে এবং যা কিছু করণীয় তাতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আন্তরিকতা ও চেষ্টার কোনো অভাব থাকবে না। আমরা পুরোপুরি সেই চেষ্টাটাই করবো। কিন্তু আপনাদেরকেও স্ব স্ব অবস্থানে থেকে আপনাদের যে চেষ্টাটুকু সেই চেষ্টা পুরোপুরিভাবে করতে হবে। নির্বাচন কমিশন এককভাবে তেমন কিছু করতে পারবে না। যদি সহযোগী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন তাদের দায়িত্ব শক্তভাবে এবং পেশাগতভাবে ডিসচার্জ করে না থাকেন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা যেহেতু মেট্রোপলিটন এরিয়া এখানে কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্ব জেনারেল ডিস্ট্রিক্ট পুলিশ যেটা আছে তার চেয়ে অধিক। বেশকিছু ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার আমার মনে হয় পুলিশ কমিশানরকে দেওয়া আছে এবং পুলিশের যারা কর্মকর্তা তাদেরকে দেওয়া আছে। কাজেই পুলিশ কমিশানর সাহেব আপনাকে সেই দায়িত্ব যোগ্যতার সঙ্গে, আন্তরিকতার সঙ্গে ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হতে হবে, উৎসবমুখর হতে হবে। আপনাদের মধ্যেও একটা সমঝোতা ও বুঝাপড়া থাকতে হবে। আমরা কেউ সহিংসতা করবো না, উচ্ছৃঙ্খলতা করবো না। ভোটাররা দ্বিধান্বিত হবেন, ভীত হবেন এমন কোনো আচরণ আপনারা করবেন না। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেবো, আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করা হবে যাতে ভোটাররা নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। আপনারা যেমন আমাদের সহায়তা চাইছেন, তেমনি আমরাও আপনাদের সহায়তা চাই।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে যদি কোনো বিচ্যুতি হয়, সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো বিচ্যুতি হয়, আমরা যদি সে অভিযোগ পেয়ে থাকি, সেই অভিযোগ আমরা আমলে নিবো এবং আমাদের সীমিত সামর্থের মধ্যে প্রতিকারের যে বিধান রয়েছে আমরা সেটা নিতে কোনো দ্বিধা করবো না।’

তিনি বলেন, ‘ইভিএম শুধু রংপুরে হয়নি। আরও শত শত জায়গায় হয়েছে। ইভিএমে ভোটাররা ভোট দিতে পেরেছে। বিলম্ব হলেও ভোট দিতে পেরেছে। ইভিএম এর অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। রংপুরে মেকানিক্যাল প্রবলেম হয়েছিল। প্রার্থীরা ইভিএম নিয়ে ডেমনস্ট্রেশন করলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ইভিএমের উপস্থিতি সঠিক উপস্থিত।’

সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আপনারা প্রার্থীরা লেমিনেটেড পোস্টারের কথা বলেছেন। সারা বিশ্বে ক্লাইমেট ক্রাইসিস ওভারকাম করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ পৃথিবীর সকল দেশকে নিতে হচ্ছে। সেইদিকে লক্ষ্য রেখে পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কিছু না করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং আইনগত দায়িত্ব।’

তিনি বলেন, ‘একটা কথা ভুল বুঝবেন না। আমরা যখন সরকার বলি, তখন আওয়ামী লীগকে মিন করি না। সরকার হচ্ছে সরকার, রাষ্ট্র। আমরা সরকার বলি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার, পুলিশ কমিশনারসহ তাদের। তাদের কিন্তু নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশন যে সহায়তা চাইবে তা দিতে এই সরকার বাধ্য এবং তারা আমাদের সেই সহায়তা দিবেন।’

নির্বাচনের অংশ নেওয়া মেয়র পদপ্রার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী এডভোকেট আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, গণফ্রন্ট মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হারুন অর রশীদ, জাকের পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাজু আহম্মেদ। এছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনন্য অতিথিরা মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন। প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অনেক প্রার্থী ভোটারদের এনআইডি কার্ড নিয়ে নিচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটের আগে টাকা দিয়ে ভোট ক্রয় করে। এসব বিষয় দেখার অনুরোধ ও প্রতিকার চান। এছাড়াও ভয়-ভীতি মুক্ত ভোটকেন্দ্র করার দাবি করেন। বৃষ্টির কারণে পোস্টার ছিড়ে যায়, এজন্য তারা পোস্টারগুলো লেমোনেটিং করে প্রচার করার সুযোগ চান। পরে প্রার্থীদের উত্থাপিত সমস্যার বিষয়ে জবাব দেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

বিকালে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একই স্থানে মতবিনিময় সভা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

সারাবিশ্ব বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে: সিইসি

প্রকাশিত সময় :- ১১:১৬:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩

শুধু আমরা না, সারাবিশ্ব বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, গাজীপুরে যে নির্বাচন হচ্ছে, এটার গুরুত্বটা নির্বাচন কমিশনের কাছে অত্যাধিক। কারণ আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এর আগে এতো বড় পরিসরের একটা নির্বাচন জাতীয়ভাবে অনেক গুরুত্ব বহন করবে বলে আমরা মনে করি। এজন্যই গাজীপুরের নির্বাচনটা একটা মডেল হোক, আপনাদের সহযোগিতায় আপনাদের সদিচ্ছার উপর ভিত্তি করে এই নির্বাচনটা যেন একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে যে আমরা সরকার বলেন বা নির্বাচন কমিশন বলেন আমরা যেন একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে শুধু আমরা না, সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে। নির্বাচন কিন্তু অর্থহীন নয়, নির্বাচনের গুরুত্ব রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ আমাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। আমাদের নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা কথা বলছে, যুক্তরাজ্য কথা বলছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কথা বলছে, জাপান কথা বলছে এবং ইউনাইটেড নেশনস থেকেও কথা হচ্ছে।

বুধবার গাজীপুর শহরের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার অডিটোরিয়ামে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। রির্টানিং অফিসারের স্টাফ অফিসার এএসএম জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই নির্বাচনের আচরণবিধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন গাজীপুর জেলা নির্বাচন অফিসার এ এইচ এম কামরুল হাসান।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনে কালো টাকা ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে না। আমাদের কালো টাকার ছড়াছড়ির সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে উঠে আসতে হবে। যতদূর সম্ভব কালো টাকা বিতরণ প্রতিহত করার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থায় এখনও অনেক অপসংস্কৃতি কালো সংস্কৃতি রয়ে গেছে। রাতারাতি এসব সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব নয়। তবে ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো রকম অনিয়ম দুর্নীতি আমরা বরাদস্ত করবো না। আপনাদের সকলের চেষ্টায় হয়তো একটা সময় আসবে যখন আমরা সুশৃঙ্খলভাবে অহিংসভাবে ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবো। আপনারা যে সরকারটি গঠন করবেন সেটা গণতান্ত্রিক সরকার এবং জনগণের কাছে আপনাদের প্রত্যক্ষ সরাসরি জবাবদিহিতা থাকবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে যতটুকু থাকবে এবং যা কিছু করণীয় তাতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আন্তরিকতা ও চেষ্টার কোনো অভাব থাকবে না। আমরা পুরোপুরি সেই চেষ্টাটাই করবো। কিন্তু আপনাদেরকেও স্ব স্ব অবস্থানে থেকে আপনাদের যে চেষ্টাটুকু সেই চেষ্টা পুরোপুরিভাবে করতে হবে। নির্বাচন কমিশন এককভাবে তেমন কিছু করতে পারবে না। যদি সহযোগী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন তাদের দায়িত্ব শক্তভাবে এবং পেশাগতভাবে ডিসচার্জ করে না থাকেন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা যেহেতু মেট্রোপলিটন এরিয়া এখানে কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের গুরুত্ব জেনারেল ডিস্ট্রিক্ট পুলিশ যেটা আছে তার চেয়ে অধিক। বেশকিছু ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার আমার মনে হয় পুলিশ কমিশানরকে দেওয়া আছে এবং পুলিশের যারা কর্মকর্তা তাদেরকে দেওয়া আছে। কাজেই পুলিশ কমিশানর সাহেব আপনাকে সেই দায়িত্ব যোগ্যতার সঙ্গে, আন্তরিকতার সঙ্গে ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হতে হবে, উৎসবমুখর হতে হবে। আপনাদের মধ্যেও একটা সমঝোতা ও বুঝাপড়া থাকতে হবে। আমরা কেউ সহিংসতা করবো না, উচ্ছৃঙ্খলতা করবো না। ভোটাররা দ্বিধান্বিত হবেন, ভীত হবেন এমন কোনো আচরণ আপনারা করবেন না। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেবো, আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করা হবে যাতে ভোটাররা নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। আপনারা যেমন আমাদের সহায়তা চাইছেন, তেমনি আমরাও আপনাদের সহায়তা চাই।’

সিইসি আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে যদি কোনো বিচ্যুতি হয়, সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো বিচ্যুতি হয়, আমরা যদি সে অভিযোগ পেয়ে থাকি, সেই অভিযোগ আমরা আমলে নিবো এবং আমাদের সীমিত সামর্থের মধ্যে প্রতিকারের যে বিধান রয়েছে আমরা সেটা নিতে কোনো দ্বিধা করবো না।’

তিনি বলেন, ‘ইভিএম শুধু রংপুরে হয়নি। আরও শত শত জায়গায় হয়েছে। ইভিএমে ভোটাররা ভোট দিতে পেরেছে। বিলম্ব হলেও ভোট দিতে পেরেছে। ইভিএম এর অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। রংপুরে মেকানিক্যাল প্রবলেম হয়েছিল। প্রার্থীরা ইভিএম নিয়ে ডেমনস্ট্রেশন করলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ইভিএমের উপস্থিতি সঠিক উপস্থিত।’

সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আপনারা প্রার্থীরা লেমিনেটেড পোস্টারের কথা বলেছেন। সারা বিশ্বে ক্লাইমেট ক্রাইসিস ওভারকাম করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ পৃথিবীর সকল দেশকে নিতে হচ্ছে। সেইদিকে লক্ষ্য রেখে পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কিছু না করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং আইনগত দায়িত্ব।’

তিনি বলেন, ‘একটা কথা ভুল বুঝবেন না। আমরা যখন সরকার বলি, তখন আওয়ামী লীগকে মিন করি না। সরকার হচ্ছে সরকার, রাষ্ট্র। আমরা সরকার বলি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিস্ট্রিক্ট কমিশনার, পুলিশ কমিশনারসহ তাদের। তাদের কিন্তু নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশন যে সহায়তা চাইবে তা দিতে এই সরকার বাধ্য এবং তারা আমাদের সেই সহায়তা দিবেন।’

নির্বাচনের অংশ নেওয়া মেয়র পদপ্রার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী এডভোকেট আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, গণফ্রন্ট মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হারুন অর রশীদ, জাকের পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাজু আহম্মেদ। এছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনন্য অতিথিরা মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন। প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অনেক প্রার্থী ভোটারদের এনআইডি কার্ড নিয়ে নিচ্ছে। প্রার্থীরা ভোটের আগে টাকা দিয়ে ভোট ক্রয় করে। এসব বিষয় দেখার অনুরোধ ও প্রতিকার চান। এছাড়াও ভয়-ভীতি মুক্ত ভোটকেন্দ্র করার দাবি করেন। বৃষ্টির কারণে পোস্টার ছিড়ে যায়, এজন্য তারা পোস্টারগুলো লেমোনেটিং করে প্রচার করার সুযোগ চান। পরে প্রার্থীদের উত্থাপিত সমস্যার বিষয়ে জবাব দেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

বিকালে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একই স্থানে মতবিনিময় সভা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন