ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবিধান মেনে সঠিক সময়েই নির্বাচন : প্রধানমন্ত্রী

  • নিউজ বিজয় ডেস্ক :-
  • প্রকাশিত সময় :- ০৩:০৮:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩
  • ৩৩৫ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার দুপুরে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
সংবিধান মেনে সঠিক সময়েই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবনে বুধবার (২১ জুন) বেলা ১২টা ১২ মিনিটে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট সময়ই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একটি গণতান্ত্রিক ধারা অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যায়। রক্ত দিয়েই কিন্তু আমরা গণতান্তিক ধারা অব্যাহত রেখেছি। এছাড়া গণতান্তিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজ দেশেটা এগিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, কোভিড ১৯ এর কারণে অর্থনীতির ওপর একটা চাপ পড়েছে। তখন বিশ্বব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। এদিকে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে। এ জন্য শুধু আমাদের দেশে না প্রতিটা দেশে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া বড় অর্থনীতির দেশ হয়েও ২/৩টা ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় জানিয়ে দলের সভাপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশে কোনো ভোটের অধিকার ছিল না। সব এক জায়গায় বন্দি করে রাখা হতো। আমরাই জনতার ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। যারা এর বিরুদ্ধে বলছে, তারা তো জনগণের কাছে যায় না।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতের ভূমিকার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত তাদের নীতিতে চলে। আর আমাদের দেশের নির্বাচন সংবিধান ও আইন অনুযায়ী যথাসময়ে হবে।

নির্বাচনে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত একটি স্বাধীন দেশ। তারা কী করবে না করবে সেটা তাদের ব্যাপার। তারা তাদের নীতিতে চলবে। এখানে আশা-নিরাশার কিছু নেই। আমাদের সংবিধান আছে। নির্বাচনি আইন আছে। নির্বাচন সেভাবে হওয়ার সেভাবে হবে।

সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার শুরু হয়েছে জানিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশে যারা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রধান আছেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তারা ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়েছেন। যেখানে তারা বলেছেন, তার এখানে খুব ভালো অবস্থায় আছেন। তারা নিজেরাই বলেছেন। ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের যে কথা লেখা ছিল সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখানে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সবাই চলছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের অপপ্রচার আরও হবে জানিয়ে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকে যে বিএনপিসহ কিছু দল মাঠে নেমেছে তাদের অসুবিধা কোথায়। সমস্যাটা কী? মানুষ দুই বেলা ভাত খাচ্ছে। মানুষ কিছুটা চাপে আছে, সেটা বুঝি। মানুষের দুঃখ-কষ্ট আমরা উপলব্ধি করতে পারি৷ সবকিছু সহজ করা যেতে পারে, আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি।

আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে বলে যারা প্রচার চালায় তাদের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, যারা আমাদেরকে ভোট চোর বলে তারা ভোট ডাকাত। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার দল আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর ইলেকশন বলে কিছু ছিল না। ভোটের অধিকার ছিল না। আমরাই আন্দোলন করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। এখন অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। তাদের কথা আলাদা। তারা একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, আমরা ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করলাম আমাদেরই বলে ভোট চোর। আমাদের যারা এটা বলে তারা তো ভোট ডাকাত।

দেশের সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমি মনে করি দেশের যে সচেতন নাগরিক তারা এটাকে গুরুত্ব দেবেন না। তারা বিবেচনা করবে ২০০৯ সালের আগে দেশের অবস্থা কী ছিল আর এখন কী দাঁড়িয়েছে।

বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনসহ বিভিন্ন নাশকতার তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা এসব কেন করছে? ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। এখন কি তারা দেশ বিক্রি করবে? নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে আসতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা। আমার হাত থেকে এদেশের কোনো সম্পদ কারও কাছে বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। ওই গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও (২০০১ সালে) ক্ষমতায় থাকতে পারতাম’

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতিকে রেজিম চেঞ্জের কৌশল (ক্ষমতা বদল) মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সংসদে বলেন, ‘তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে (যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের জোট) বাংলাদেশকে চায়। বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সবকিছু করছে।’

প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এখনো যদি বলি যে, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, আমাদের দেশ কাউকে লিজ দেব, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা নেই, আমি জানি সেটা। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না। আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমি কাউকে খেলতে দেব না। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই।’

‘আর আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো জায়গায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, কাউকে আক্রমণ করবে বা এ ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি’, স্পষ্ট জানিয়ে দেন সরকারপ্রধান।

তিনি প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এমনকি মিয়ানমার থেকে যে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা এল, তারপরও তো মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করিনি। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। এরা যেন ফেরত যায়, সেজন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুরোধ করছি। ঝগড়া বা যুদ্ধ করতে চাইনি। কারণ আমরা জাতির পিতার পররাষ্ট্রনীতিতে চলছি, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন-তারিখ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সংবিধান আছে, নির্বাচন কমিশন আছে, তারা যখন ঘোষণা দেবে, তখন নির্বাচন হবে।’

প্রধানমন্ত্রী জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন জানিয়ে বলেন, ‘সরকারের কার্যক্রম, উন্নয়ন-অগ্রগতি বিবেচনায় জনগণ যদি ভোট দেয়, আছি, না দিলে নাই।’

প্রধানমন্ত্রী গত ১৪-১৫ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট : সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগ দিতে দেশটি সফর করেন।

তার আগে গত ২৩-২৫ মে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেন সরকারপ্রধান।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সর্বশেষ যে তথ্য দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর

সংবিধান মেনে সঠিক সময়েই নির্বাচন : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত সময় :- ০৩:০৮:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার দুপুরে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: ফোকাস বাংলা
সংবিধান মেনে সঠিক সময়েই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবনে বুধবার (২১ জুন) বেলা ১২টা ১২ মিনিটে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট সময়ই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একটি গণতান্ত্রিক ধারা অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যায়। রক্ত দিয়েই কিন্তু আমরা গণতান্তিক ধারা অব্যাহত রেখেছি। এছাড়া গণতান্তিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজ দেশেটা এগিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, কোভিড ১৯ এর কারণে অর্থনীতির ওপর একটা চাপ পড়েছে। তখন বিশ্বব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দা ছিল। এদিকে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন। এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে। এ জন্য শুধু আমাদের দেশে না প্রতিটা দেশে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া বড় অর্থনীতির দেশ হয়েও ২/৩টা ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় জানিয়ে দলের সভাপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশে কোনো ভোটের অধিকার ছিল না। সব এক জায়গায় বন্দি করে রাখা হতো। আমরাই জনতার ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। যারা এর বিরুদ্ধে বলছে, তারা তো জনগণের কাছে যায় না।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতের ভূমিকার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত তাদের নীতিতে চলে। আর আমাদের দেশের নির্বাচন সংবিধান ও আইন অনুযায়ী যথাসময়ে হবে।

নির্বাচনে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত একটি স্বাধীন দেশ। তারা কী করবে না করবে সেটা তাদের ব্যাপার। তারা তাদের নীতিতে চলবে। এখানে আশা-নিরাশার কিছু নেই। আমাদের সংবিধান আছে। নির্বাচনি আইন আছে। নির্বাচন সেভাবে হওয়ার সেভাবে হবে।

সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার শুরু হয়েছে জানিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশে যারা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রধান আছেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তারা ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়েছেন। যেখানে তারা বলেছেন, তার এখানে খুব ভালো অবস্থায় আছেন। তারা নিজেরাই বলেছেন। ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠিতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের যে কথা লেখা ছিল সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখানে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সবাই চলছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের অপপ্রচার আরও হবে জানিয়ে এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকে যে বিএনপিসহ কিছু দল মাঠে নেমেছে তাদের অসুবিধা কোথায়। সমস্যাটা কী? মানুষ দুই বেলা ভাত খাচ্ছে। মানুষ কিছুটা চাপে আছে, সেটা বুঝি। মানুষের দুঃখ-কষ্ট আমরা উপলব্ধি করতে পারি৷ সবকিছু সহজ করা যেতে পারে, আমরা সেটা করার চেষ্টা করছি।

আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে বলে যারা প্রচার চালায় তাদের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, যারা আমাদেরকে ভোট চোর বলে তারা ভোট ডাকাত। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার দল আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর ইলেকশন বলে কিছু ছিল না। ভোটের অধিকার ছিল না। আমরাই আন্দোলন করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। এখন অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। তাদের কথা আলাদা। তারা একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, আমরা ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করলাম আমাদেরই বলে ভোট চোর। আমাদের যারা এটা বলে তারা তো ভোট ডাকাত।

দেশের সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমি মনে করি দেশের যে সচেতন নাগরিক তারা এটাকে গুরুত্ব দেবেন না। তারা বিবেচনা করবে ২০০৯ সালের আগে দেশের অবস্থা কী ছিল আর এখন কী দাঁড়িয়েছে।

বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনসহ বিভিন্ন নাশকতার তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা এসব কেন করছে? ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। এখন কি তারা দেশ বিক্রি করবে? নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে আসতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা। আমার হাত থেকে এদেশের কোনো সম্পদ কারও কাছে বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। ওই গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও (২০০১ সালে) ক্ষমতায় থাকতে পারতাম’

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতিকে রেজিম চেঞ্জের কৌশল (ক্ষমতা বদল) মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সংসদে বলেন, ‘তারা সেন্টমার্টিন চায়, কোয়াডে (যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের জোট) বাংলাদেশকে চায়। বর্তমান সরকারকে হটানোর লক্ষ্যে তারা সবকিছু করছে।’

প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এখনো যদি বলি যে, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, আমাদের দেশ কাউকে লিজ দেব, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা নেই, আমি জানি সেটা। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না। আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আমি কাউকে খেলতে দেব না। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই।’

‘আর আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো জায়গায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, কাউকে আক্রমণ করবে বা এ ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি’, স্পষ্ট জানিয়ে দেন সরকারপ্রধান।

তিনি প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এমনকি মিয়ানমার থেকে যে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা এল, তারপরও তো মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করিনি। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। এরা যেন ফেরত যায়, সেজন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুরোধ করছি। ঝগড়া বা যুদ্ধ করতে চাইনি। কারণ আমরা জাতির পিতার পররাষ্ট্রনীতিতে চলছি, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন-তারিখ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সংবিধান আছে, নির্বাচন কমিশন আছে, তারা যখন ঘোষণা দেবে, তখন নির্বাচন হবে।’

প্রধানমন্ত্রী জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন জানিয়ে বলেন, ‘সরকারের কার্যক্রম, উন্নয়ন-অগ্রগতি বিবেচনায় জনগণ যদি ভোট দেয়, আছি, না দিলে নাই।’

প্রধানমন্ত্রী গত ১৪-১৫ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট : সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগ দিতে দেশটি সফর করেন।

তার আগে গত ২৩-২৫ মে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেন সরকারপ্রধান।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন