করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়াতে গত দুই বছর সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ দুইজন একসঙ্গে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের নির্দেশনা থাকলেও এবার সে বিধিনিষেধ থাকছে না।
এছাড়াও দুই বছর পর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাননি তাঁরা।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, এবছর প্রতিটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তক অর্পণ করতে পারবেন। আগের বিধিনিষেধ থাকছে না। আমরা মনে করি সবার মাঝে সচেতনতাবোধ এসেছে। তবে সুষ্ঠুভাবে দিবসটি উদ্যাপনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের সময় সকলকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অনুরোধ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি উপাচার্য বলেন, সর্বস্থরের জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহিদ মিনারে যাবেন। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্ত্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখার পুল হয়ে শুধুমাত্র প্রস্থান করা যাবে, শহিদ মিনারের দিকে আসা যাবে না। এছাড়া, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও আজিমপুর কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য একটি রুট-ম্যাপও প্রণীত হয়েছে। ম্যাপ যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, একুশে উদযাপনে সার্বিক ব্যবস্থাপনা সমন্বয়ের জন্য শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সাথে অমর একুশে পালনের লক্ষ্যে শহিদ মিনার এলাকায় কোন মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না এবং শহিদ মিনার এলাকায় কোন ব্যানার, পোস্টার বা ছবি টাঙানো যাবে না। প্রবেশপথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। তাদেরকে যথাযথ সহযোগিতা প্রদানের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সহযোগিতা কামনা করে উপাচার্য বলেন, ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সাথে দিবসটি পালন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে একুশে উদ্যাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক গৃহীত সকল কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্য, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাব, অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা ব্রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং গণমাধ্যমসহ সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়াকে, যুগ্ম সমন্বয়কারী সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাকে, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ প্রমুখ।