মেকআপের অন্যতম সৌন্দর্য হল লিপস্টিক। লিপস্টিক ছাড়া সম্পূর্ন মেকআপই যেন ফিকে মনে হয়। অনেকে আবার মেকআপ না করলেও বাহিরে যাওয়ার সময় লিপস্টিক লাগাতে ঠিকই পছন্দ করেন।
সকলেই চান লিপস্টিক দীর্ঘস্থায়ী হোক এবং দেখে যেন মনে হয় লাগানো হয়েছে সদ্য। কিন্তু অনেকেই বাস্তবে লিপস্টিক বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার সমস্যার মুখোমুখি হন। রইল এমন কিছু কৌশল যাতে সারা দিন পরেও নতুনের মতো থাকবে লিপস্টিক।
ঠোঁট যেন না শুকিয়ে যায়
লিপস্টিক উঠে যাবার প্রধান কারণ হল এটি।ঠোঁট শুকিয়ে গেলে,ফেটে গেলে লিপস্টিক ঠোঁটে বসে না। তার ফলে কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যায়।লিপস্টিক ঠিক ভাবে ঠোঁটে বসার জন্য,আগে ঠোঁটকে মসৃণ করতে হয়।তবেই লিপস্টিক ভালোভাবে বসার জায়গাটা পাবে। অমসৃণ ফাটা ঠোঁটে সেটা হয় না। তাই রাতে শোবার আগে রোজ ঠোঁটে লিপবাম লাগান। তাহলে দেখবেন সারাদিন ঠোঁট নরম থাকছে। এক্ষেত্রে একটু ভালো মানের লিপবাম,যাতে ভিটামিন সি, ই, শিয়া বাটার এসব থাকে,এবং রোদে যাবার আগে লিপবাম দিয়ে বেরোন যাতে এসপিএফ দেওয়া আছে,কারণ রোদ লেগেও ঠোঁটের আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়।
লিপ প্রাইমার
ঠোঁট নিয়ে খুব খুঁতখুঁতে? লিপকালার একটুও উঠলে চলবে না? তাহলে ব্যবহার করুন লিপ প্রাইমার। মুখে মেকআপের আগে যেমন ফেস প্রাইমার বা কন্সিলার লাগানো হয়,তেমনই লিপ প্রাইমার লিপস্টিকের জন্য ঠোঁটকে রেডি করে। এর ফলে লিপস্টিক ঠোঁটে অনেকক্ষণ বসে।দোকানে পেয়ে যাবেন লিপ প্রাইমার। না হলে অনলাইনে তো পেয়েই যাবেন।আর একান্তই লিপ প্রাইমার না পেলে,লিপ লাইনারকেই ব্যবহার করুন।লিপ লাইনার দিয়ে আউটলাইন করে নিন। ঠোঁটের ঠিক মাঝের অংশ থেকে বাইরের দিকে লাইন টানুন।আর তারপর পুরো ঠোঁটটা লিপ লাইনার দিয়ে ভরিয়ে দিন।এর ওপর লিপস্টিক দিন। প্রাইমার লাগান বা না লাগান, লিপ লাইনার অবশ্যই লাগাবেন লিপস্টিক লাগানোর আগে।
লিপস্টিক লাগানোর পদ্ধতি
লিপস্টিকের ওপর লিপ গ্লস যদি লাগান তাহলে লিপস্টিক বেশিক্ষণ থাকে। সাথে রাখুন ব্লটিং পেপার।প্রথমে একবার লিপস্টিক লাগিয়ে নিন।এবার লিপস্টিকের ওপর ব্লটিং পেপার চেপে ধরুন যাতে ঠোঁটের অতিরিক্ত তেল বেড়িয়ে আসে।এবার আবার আরেকবার লিপস্টিক দিন।ঘন করে লাগান বা লিপস্টিক লাগানোর আগে, ব্লটিং পেপার চেপে ঠোঁটের অতিরিক্ত তেল বার করে নিন।এবার এক কোট লাগান।লাগানোর পর, ঠোঁটের ওপর টিস্যু পেপার চেপে ধরুন।টিস্যু পেপারের ওপর দিয়ে ফেস পাউডার চেপে চেপে লাগান।এতে ঠোঁটে একটা পাউডারি ম্যাট ফিনিশও আসবে।আর লিপস্টিক অনেকক্ষণ থাকবেও। আর গ্লসি লুক চাইলে এর ওপর আরেক কোট লাগিয়ে নিন।
আরও কিছু টিপস
১। লিপস্টিক অনেকক্ষণ রাখতে ডার্ক শেড ব্যবহার করুন।ডার্ক কালার অনেকক্ষণ থাকে।আর লাইট শেড তাড়াতাড়ি উঠে যায়।যেমন লাল, ডিপ পিঙ্ক, ব্রাউন, কোরাল এসব বেশিক্ষণ থাকে।
২। ঠোঁটকে মাঝে মাঝে এক্সফলিয়েট করুন। কিচ্ছু না,জাস্ট নরম দাঁতের ব্রাশ দিয়ে ঠোঁট আস্তে আস্তে ঘষুন।এতে ঠোঁটের ওপরে থাকা মৃত কোষ উঠে যাবে। লিপস্টিকও অনেকক্ষণ থাকবে।
৩। একটু ভালো ব্র্যান্ডের লিপস্টিক কিনুন, যেগুলো অনেকক্ষণ থাকতে পারে।
৪। আর অবশ্যই লিপস্টিক লাগানোর পর জিভ দেওয়া বন্ধ করুন।
৫। ঠোঁট ফাটা থাকলে আগে সে দিকে মনোযোগ দিতে হবে৷ কারণ ফাটা ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক লাগালে আরও শুকনো লাগে, ফাটা চামড়ার সঙ্গে রংও উঠে যায়৷ অনেকে আবার লিপস্টিক লাগিয়ে তার উপর লিপবাম লাগান, তাতেও লিপস্টিক উঠে যায়৷ তাই ঠোঁট ফাটা থাকলে আগে ঘন হাইড্রেটিং ক্রিম লাগিয়ে ঠোঁটের হাল ফেরাতে হবে৷
৬। একাধিক লেয়ারে লিপস্টিক পরলে রং বেশি সময় টেকে৷ প্রথমে এক কোট লিপস্টিক লাগান৷ রংটা আঙুল দিয়ে একটু মিশিয়ে দিন৷ এরপর একটা টিস্যুতে হালকা পাউডার ছড়িয়ে সেই টিস্যু ঠোঁটে চেপে নিয়ে তার উপর আর এক কোট লিপস্টিক লাগান৷ রং অনেকক্ষণ স্থায়ী হবে৷
৭। যত ট্রান্সফার প্রুফ মেকআপই হোক না কেন, তেলের কাছে সব জব্দ৷ তাই পার্টিতে বা ডিনারে গেলে তেলতেলে, ভাজাভুজি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো৷ খাবার এক একবারে অল্প করে মুখে নিন যাতে ঠোঁটের সংস্পর্শে বড় একটা না আসে৷