উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদীতে ভিটে মাটি হারা শত-শত মানুষ এখন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন। আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরতে শুরু করেছে তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের প্রতিটি ঘরে। ক্ষরস্রোতা নদীর চর যেন এখন বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ, ধু-ধু বালুচরে ফসলের সমারোহে কৃষকের হাসি।
কৃষি বিভাগ বলছে- কৃষকরা যেভাবে ফসলের পরিচর্যা করছে তাতে এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে।
তিস্তাচরের অবহেলিত এই চাষীদের দাবি, সরকারের কোনও নীতি-সহায়তা না পেলেও নিজেদের বুদ্ধি ও অর্থ খরচ করে তপ্ত বালুচরে এমন সবুজের সমারোহ তৈরি করেছেন তারা।
যে তিস্তা নদী বছরে কয়েকবার রূপ বদলায় সেই তিস্তার বুকে বালুর দেশে এখন বিভিন্ন ফসলের সমারোহ। লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তার বিস্তীর্ণ চরে চাষিরা ফলাচ্ছেন সোনার ফসল। ফসলের কাঙ্খিত বাজার মূল্য থাকলে ভালো দাম পাবেন বলে আশাবাদী চরাঞ্চলের কৃষকরা।
কৃষকরা বলছে- তিস্তা এখন চর নয়, চর এখন গ্রামে পরিনত হয়েছে। এবার চরের ১০ হাজার ৮ শত হেক্টরের মধ্যে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে- ভুট্টা, বাদাম, মরিচ,আলু,কুমড়া,টমেটো, পেঁয়াজ। পানি চলে যাবার পরে সবজি চাষে বাম্পার ফলন পাচ্ছেন তারা। ভিটেমাটি হারানো শত-শত মানুষ এখন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন।তিস্তা চরের কৃষক নজরুল,বাবু ও বাদশা নিউজ বিজয়ের পরিবারকে বলেন, এ বছর তিস্তা নদীতে চর বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক মিষ্টি কুমড়া, পেঁয়াজ, রসুন, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেছেন। আর এসব কৃষি পণ্যের ফলনও ভালো হয়েছে। যদি বাজার দাম ভালো পাই তাহলে দুটো টাকার মুখ দেখতে পারবো।
লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তিস্তার চর থেকে কৃষকের উৎপাদিত ফসলের বাজার মূল্য হবে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। তিনি বলেন- চরের জমি চাষে, চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। চলছে প্রদর্শনী। সেই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে চাষিদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ব্লক সুপার ভাইজারগণ কৃষকদের সার্বিক সহায়তায় মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় সমৃদ্ধ হচ্ছে চরাঞ্চলের কৃষি।
আরো পড়ুন>> উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু, জীবনযাত্রায় দূর্ভোগে ছিন্নমূল মানুষ
নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন