ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুর এখন মাদকের নিরাপদ রুট

  • নিউজ বিজয় ডেস্ক :-
  • প্রকাশিত সময় :- ০৫:৫১:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৩১৬ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

রংপুর মহানগরীসহ জেলার আট উপজেলায় মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। প্রতিনিয়তই মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে। উঠতি বয়সিরা এ নেশায় বেশি জড়িয়ে পড়ছেন। প্রায় প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাদক পাচার ও সেবনকারী গ্রেফতার হচ্ছেন। উদ্ধার করা হচ্ছে ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক। এরপরও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না মাদকের ব্যবসা। এছাড়া মাদকের কারণে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মও বেড়েছে। এ নিয়ে অভিভাবক ও সচেতন মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

সূত্র জানায়, ভারত লাগোয়া লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারীসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মাদক প্রথমে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর, লক্ষ্মীটারি, মর্ণেয়া, গজঘন্টা, বড়াইবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করছে। এর পরেই রংপুর মহানগরী হয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে। এছাড়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি, নাগেশ্বরী, কচাকাটা, ভুরুঙ্গামারী থানার বিভিন্ন সীমান্ত পার হয়ে সড়ক পথে রংপুর নগরীতে মাদক আসে। এসব মাদকের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ স্থানীয়রা সেবন করছে। বাদবাকিটা দেশের অন্যান্য অংশে পাচার হয়। এছাড়া দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও জেলাসহ একাধিক রুট দিয়ে রংপুরে মাদক প্রবেশ করছে। এর ফলে রংপুর এখন মাদকের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে।

এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত এক মাসে কমপক্ষে রংপুর অঞ্চলে ১৫টি মাদকের চালান ধরা পড়েছে র‌্যাব ও পুলিশের হাতে। এরমধ্যে গত বুধবার রাতে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বুড়িমারী-রংপুর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহজনক একটি ট্রাক তল্লাশি করা হয়। এ সময় ট্রাকের ভেতর থেকে ১৮৭ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক কারবারি আদিতমারীর দুরাকুটি এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে নবিয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার ভোরে গঙ্গাচড়া উপজেলার বড় রুপাই গ্রামের নাজির হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলামের বাড়িতে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১১ কেজি গাঁজাসহ রবিউলকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার সকালে অপর একটি অভিযানে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার পুষ্প চন্দ্র বর্মণের বসতবাড়ির খাটের নিচ থেকে ১ হাজার ৮৮০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারসহ পুষ্প চন্দ্র ও সেকেন্দার আলীর ছেলে গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার কাকিনা বাজার থেকে রংপুর নগরীর দিকে একটি প্রাইভেট কার বেপরোয়া গতিতে আসছিল। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তারা মহিপুর বাজারে প্রাইভেটকারসহ মাদক কারবারি মেহেদী হাসানকে আটক করে। ওই প্রাইভেটকারে ৩ বস্তা ফেনসিডিলের চালান ছিল। রংপুর নগরীর কলেজ রোডের চারতলা মোড় এলাকার ছয়তলা একটি ভবনের ছাদে টুইন রুফটপ নামে হোটেল খুলে রমরমা মাদকের ব্যবসা চলছিল। ১৪ জানুয়ারি ওই হোটেল থেকে মাদকসহ ৫ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। ১৩ জানুয়ারি রংপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে মিজানুর রহমান নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে ৫৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই রংপুরের কোথাও না কোথাও মাদকের চালান উদ্ধার হচ্ছে। সেইসঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার হচ্ছে। তারপরেও থামছে না মাদকের ব্যবসা। প্রতিনিয়তই এই মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সিরা।

এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, তারা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। প্রতিদিনই মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুন>>কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইয়াবাসহ ২ মাদক কারবারি গ্রেফতার

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

রংপুর এখন মাদকের নিরাপদ রুট

প্রকাশিত সময় :- ০৫:৫১:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রংপুর মহানগরীসহ জেলার আট উপজেলায় মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। প্রতিনিয়তই মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে। উঠতি বয়সিরা এ নেশায় বেশি জড়িয়ে পড়ছেন। প্রায় প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাদক পাচার ও সেবনকারী গ্রেফতার হচ্ছেন। উদ্ধার করা হচ্ছে ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক। এরপরও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না মাদকের ব্যবসা। এছাড়া মাদকের কারণে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মও বেড়েছে। এ নিয়ে অভিভাবক ও সচেতন মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

সূত্র জানায়, ভারত লাগোয়া লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারীসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মাদক প্রথমে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর, লক্ষ্মীটারি, মর্ণেয়া, গজঘন্টা, বড়াইবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করছে। এর পরেই রংপুর মহানগরী হয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে। এছাড়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি, নাগেশ্বরী, কচাকাটা, ভুরুঙ্গামারী থানার বিভিন্ন সীমান্ত পার হয়ে সড়ক পথে রংপুর নগরীতে মাদক আসে। এসব মাদকের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ স্থানীয়রা সেবন করছে। বাদবাকিটা দেশের অন্যান্য অংশে পাচার হয়। এছাড়া দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও জেলাসহ একাধিক রুট দিয়ে রংপুরে মাদক প্রবেশ করছে। এর ফলে রংপুর এখন মাদকের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে।

এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত এক মাসে কমপক্ষে রংপুর অঞ্চলে ১৫টি মাদকের চালান ধরা পড়েছে র‌্যাব ও পুলিশের হাতে। এরমধ্যে গত বুধবার রাতে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বুড়িমারী-রংপুর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহজনক একটি ট্রাক তল্লাশি করা হয়। এ সময় ট্রাকের ভেতর থেকে ১৮৭ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক কারবারি আদিতমারীর দুরাকুটি এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে নবিয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার ভোরে গঙ্গাচড়া উপজেলার বড় রুপাই গ্রামের নাজির হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলামের বাড়িতে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১১ কেজি গাঁজাসহ রবিউলকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার সকালে অপর একটি অভিযানে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার পুষ্প চন্দ্র বর্মণের বসতবাড়ির খাটের নিচ থেকে ১ হাজার ৮৮০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারসহ পুষ্প চন্দ্র ও সেকেন্দার আলীর ছেলে গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার কাকিনা বাজার থেকে রংপুর নগরীর দিকে একটি প্রাইভেট কার বেপরোয়া গতিতে আসছিল। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তারা মহিপুর বাজারে প্রাইভেটকারসহ মাদক কারবারি মেহেদী হাসানকে আটক করে। ওই প্রাইভেটকারে ৩ বস্তা ফেনসিডিলের চালান ছিল। রংপুর নগরীর কলেজ রোডের চারতলা মোড় এলাকার ছয়তলা একটি ভবনের ছাদে টুইন রুফটপ নামে হোটেল খুলে রমরমা মাদকের ব্যবসা চলছিল। ১৪ জানুয়ারি ওই হোটেল থেকে মাদকসহ ৫ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। ১৩ জানুয়ারি রংপুরে মাদকবিরোধী অভিযানে মিজানুর রহমান নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে ৫৩ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই রংপুরের কোথাও না কোথাও মাদকের চালান উদ্ধার হচ্ছে। সেইসঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার হচ্ছে। তারপরেও থামছে না মাদকের ব্যবসা। প্রতিনিয়তই এই মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়ছে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সিরা।

এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন জানান, তারা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। প্রতিদিনই মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুন>>কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইয়াবাসহ ২ মাদক কারবারি গ্রেফতার

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন