ঢাকা ০৫:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেজর হওয়ার পথে কানিজের বাধা হতে পারেনি হুইলচেয়ার

  • নিউজ বিজয় ডেস্ক :-
  • প্রকাশিত সময় :- ০৪:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২
  • ৪৫১ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

মেজর কানিজ ফাতিমা।

কানিজ ফাতিমার কর্মস্থল সাভার ক্যান্টনমেন্টে। তাঁর কক্ষের বাইরে নতুন নামফলক বসেছে। নামের আগে যোগ হয়েছে নতুন পদবি—মেজর। মেজর কানিজ ফাতিমা। ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ৪ জুন ক্যাপ্টেন কানিজ ফাতিমাকে এই মেজর র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। ৫ জুন সাভার ক্যান্টনমেন্টে গিয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। হুইলচেয়ারে বসে কাজ করছিলেন তিনি। কুশল বিনিময়ের পর বললেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুরু থেকেই সহযোগিতা করছে বলেই আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠান আমাকে সাপোর্ট করেছে, প্রতিষ্ঠানের কাজে লাগতে পারি, সে জন্য নিজেও সংগ্রাম করেছি।’কানিজ বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের অধীনে ৩৩ এসটি ব্যাটালিয়নে কর্মরত। তাঁর কর্মজীবনের শুরুও এখানে। কানিজ ফাতিমা শোনালেন সেই গল্প। ২০১১ সাল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন কানিজ। এরপর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণের সময় এক দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। অসুস্থ কানিজকে চিকিৎসার জন্য আনা হলো ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। চিকিৎসা চলে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে। এরপর থাকলেন সাভারের সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড বা সিআরপিতে। এভাবে চিকিৎসা নিতে হয় প্রায় এক বছর।২০১৩ সালে সেনাবাহিনী কানিজকে ৬৯ বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে বিশেষ বিবেচনায় কমিশন প্রদান করে। কমিশনপ্রাপ্তির ২০ দিনের মাথায় বাবাকে হারান। পরিবারে দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। বড় মেয়ে হিসেবে পরিবারের দায়িত্বও তুলে নেন কাঁধে। কানিজ বলছিলেন, ‘পরিবার ও পেশা—দুটিই আমাকে শক্ত হতে সাহায্য করেছে। দুর্বল বা পিছিয়ে থাকার কোনো উপায় ছিল না। আমার পেশাটি চ্যালেঞ্জিং, এখানে সফল হতে হলে মানসিকভাবে শক্ত হতেই হবে।’
কর্মক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে কানিজ বললেন, অন্য দশজনের চেয়ে কাজের ক্ষেত্রে তাঁর পার্থক্য হলো—অন্যরা শারীরিক কসরত, খেলাধুলা করছেন। তিনি এ কাজগুলো করতে পারছেন না। তবে অফিসের ডেস্কে বসে নির্দেশনা দেওয়া, নেতৃত্ব দেওয়া, অফিশিয়াল নথিপত্রের কাজগুলো করছেন তিনি। এর মাধ্যমেই তিনি তাঁর মেধাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। পেশাসংক্রান্ত বই পর্যালোচনার যে প্রতিযোগিতা, তাতে এ পর্যন্ত দুবার পুরস্কার পেয়েছেন কানিজ।
নিউজ বিজয়/নজরুল

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

দিঘলিয়ায় বারাকপুর ৬ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার ধর্ষক গ্রেফতার

মেজর হওয়ার পথে কানিজের বাধা হতে পারেনি হুইলচেয়ার

প্রকাশিত সময় :- ০৪:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২

কানিজ ফাতিমার কর্মস্থল সাভার ক্যান্টনমেন্টে। তাঁর কক্ষের বাইরে নতুন নামফলক বসেছে। নামের আগে যোগ হয়েছে নতুন পদবি—মেজর। মেজর কানিজ ফাতিমা। ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ৪ জুন ক্যাপ্টেন কানিজ ফাতিমাকে এই মেজর র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। ৫ জুন সাভার ক্যান্টনমেন্টে গিয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। হুইলচেয়ারে বসে কাজ করছিলেন তিনি। কুশল বিনিময়ের পর বললেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শুরু থেকেই সহযোগিতা করছে বলেই আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠান আমাকে সাপোর্ট করেছে, প্রতিষ্ঠানের কাজে লাগতে পারি, সে জন্য নিজেও সংগ্রাম করেছি।’কানিজ বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের অধীনে ৩৩ এসটি ব্যাটালিয়নে কর্মরত। তাঁর কর্মজীবনের শুরুও এখানে। কানিজ ফাতিমা শোনালেন সেই গল্প। ২০১১ সাল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন কানিজ। এরপর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তিনি। ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণের সময় এক দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। অসুস্থ কানিজকে চিকিৎসার জন্য আনা হলো ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। চিকিৎসা চলে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে। এরপর থাকলেন সাভারের সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড বা সিআরপিতে। এভাবে চিকিৎসা নিতে হয় প্রায় এক বছর।২০১৩ সালে সেনাবাহিনী কানিজকে ৬৯ বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে বিশেষ বিবেচনায় কমিশন প্রদান করে। কমিশনপ্রাপ্তির ২০ দিনের মাথায় বাবাকে হারান। পরিবারে দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। বড় মেয়ে হিসেবে পরিবারের দায়িত্বও তুলে নেন কাঁধে। কানিজ বলছিলেন, ‘পরিবার ও পেশা—দুটিই আমাকে শক্ত হতে সাহায্য করেছে। দুর্বল বা পিছিয়ে থাকার কোনো উপায় ছিল না। আমার পেশাটি চ্যালেঞ্জিং, এখানে সফল হতে হলে মানসিকভাবে শক্ত হতেই হবে।’
কর্মক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে কানিজ বললেন, অন্য দশজনের চেয়ে কাজের ক্ষেত্রে তাঁর পার্থক্য হলো—অন্যরা শারীরিক কসরত, খেলাধুলা করছেন। তিনি এ কাজগুলো করতে পারছেন না। তবে অফিসের ডেস্কে বসে নির্দেশনা দেওয়া, নেতৃত্ব দেওয়া, অফিশিয়াল নথিপত্রের কাজগুলো করছেন তিনি। এর মাধ্যমেই তিনি তাঁর মেধাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। পেশাসংক্রান্ত বই পর্যালোচনার যে প্রতিযোগিতা, তাতে এ পর্যন্ত দুবার পুরস্কার পেয়েছেন কানিজ।
নিউজ বিজয়/নজরুল