ঢাকা ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানুষজন খাইবে কি! কম দামে কিনে খাওয়ার কিছু নাই

মুলার সের ৪০ টাকা, মানুষজন খাইবে কি? তোমার এগুলা নিউজ করি কী হইবে? তোমা তো আর জিনিসপাতির দাম কমের পাইবেন না। শুক্রবার কাজীর বাজারে সবজি ক্রেতা রিকশাচালক আজগর আলী এসব কথা বলেন। পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও হাতীবান্ধার বাজারগুলোতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। ক্রেতা-বিক্রেতারা উভয়ে শোনালেন পণ্যের চড়া দামের কথা। অন্যদিকে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মাছ, ডিম, চাল ও ডালের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ভোজ্য তেলের দাম কমলেও মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে।
বাজার করতে আসা দিনমজুর আজগর আলি বলেন, সব জিনিসপাতির দাম বাড়তেছে। কিন্তু আয় রোজগার তো বাড়তেছে না।
সবাই শুধু দেশের গরীব মানুষগুলো মারি ফেলে, শুধু বড় লোকেরা বাঁচি থাকলেই চলবে।
দীঘির হাটে আলম মিয়ার বলেন, শীতের সময় নতুন সবজি বাজারে আসে। এই সময়ে সবজির দাম কম থাকার কথা থাকলেও বাজারের চিত্র পুরো উল্টো। গত বছরগুলোর তুলনায় এখন সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ।
একই বাজারের ক্রেতা সাবিনা বেগম বলেন,শীতে সবজির দাম কমে আর এবার খালি বারে আর বারে।কলেজ শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, কম দামে কিনে খাওয়ার মতো কোনো কিছু নাই। যে টাকা বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে সব দ্রব্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতি। বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু না কিনলেই নয়, সেগুলো কিনতে হচ্ছে। বাঁচতে তো হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য এক ক্রেতা বলেন, দেশের সব জিনিসপাতির দাম বেশি। শুধু মানুষের দাম কম। কম দামে কিনে খাওয়ার মতো কোনো জিনিসপত্র নাই।
হাতীবান্ধা হাটখোলার কাঁচামাল ব্যবসায়ী শুক্কুর মিয়া বলেন, শুধু আলু, আদা, রসুন, মরিচ, পেঁয়াজের দামই বাড়েনি। প্রায় সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। সবজি কাঁচা পণ্য হওয়ায় এটা কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি।
সবজি বিক্রেতা আখতার মিয়া বলেন, সব জিনিসেরই দাম বেশি। সবজি তো আর আমরা আবাদ করি না। আমাদের এগুলো চড়া দামে কিনে আনতে হয়। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মোটা চাল ৪০-৫০ টাকা, আঁটাশ ৫৫ টাকা, কাঁঠারী ভোগ ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৪০ টাকা, বয়লার ১৮০ টাকা, লেয়ার ২৯০ টাকা, গরু ৭০০ টাকা, খাসি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, মসুর ডাল ১৬০ টাকা, কপি ৬০, মুলা ৪০, বেগুন ৬০ টাকা। এ ছাড়া আলু প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, প্রতিটি লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লালমনিরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এ.এস.এম মাসুম উদ দৌলা বলেন, নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কোনো অবস্থাতেই পণ্যের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। তারপরেও যারা অনিয়ম করছেন তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় এবং বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নিউজবিজয়/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

মানুষজন খাইবে কি! কম দামে কিনে খাওয়ার কিছু নাই

প্রকাশিত সময় :- ০৩:০৮:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ নভেম্বর ২০২৩

মুলার সের ৪০ টাকা, মানুষজন খাইবে কি? তোমার এগুলা নিউজ করি কী হইবে? তোমা তো আর জিনিসপাতির দাম কমের পাইবেন না। শুক্রবার কাজীর বাজারে সবজি ক্রেতা রিকশাচালক আজগর আলী এসব কথা বলেন। পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও হাতীবান্ধার বাজারগুলোতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। ক্রেতা-বিক্রেতারা উভয়ে শোনালেন পণ্যের চড়া দামের কথা। অন্যদিকে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, মাছ, ডিম, চাল ও ডালের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ভোজ্য তেলের দাম কমলেও মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে।
বাজার করতে আসা দিনমজুর আজগর আলি বলেন, সব জিনিসপাতির দাম বাড়তেছে। কিন্তু আয় রোজগার তো বাড়তেছে না।
সবাই শুধু দেশের গরীব মানুষগুলো মারি ফেলে, শুধু বড় লোকেরা বাঁচি থাকলেই চলবে।
দীঘির হাটে আলম মিয়ার বলেন, শীতের সময় নতুন সবজি বাজারে আসে। এই সময়ে সবজির দাম কম থাকার কথা থাকলেও বাজারের চিত্র পুরো উল্টো। গত বছরগুলোর তুলনায় এখন সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ।
একই বাজারের ক্রেতা সাবিনা বেগম বলেন,শীতে সবজির দাম কমে আর এবার খালি বারে আর বারে।কলেজ শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, কম দামে কিনে খাওয়ার মতো কোনো কিছু নাই। যে টাকা বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে সব দ্রব্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতি। বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু না কিনলেই নয়, সেগুলো কিনতে হচ্ছে। বাঁচতে তো হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য এক ক্রেতা বলেন, দেশের সব জিনিসপাতির দাম বেশি। শুধু মানুষের দাম কম। কম দামে কিনে খাওয়ার মতো কোনো জিনিসপত্র নাই।
হাতীবান্ধা হাটখোলার কাঁচামাল ব্যবসায়ী শুক্কুর মিয়া বলেন, শুধু আলু, আদা, রসুন, মরিচ, পেঁয়াজের দামই বাড়েনি। প্রায় সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। সবজি কাঁচা পণ্য হওয়ায় এটা কখনো বাড়ে আবার কখনো কমে। তবে এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি।
সবজি বিক্রেতা আখতার মিয়া বলেন, সব জিনিসেরই দাম বেশি। সবজি তো আর আমরা আবাদ করি না। আমাদের এগুলো চড়া দামে কিনে আনতে হয়। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি মোটা চাল ৪০-৫০ টাকা, আঁটাশ ৫৫ টাকা, কাঁঠারী ভোগ ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৪০ টাকা, বয়লার ১৮০ টাকা, লেয়ার ২৯০ টাকা, গরু ৭০০ টাকা, খাসি ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ১৪০ টাকা, মসুর ডাল ১৬০ টাকা, কপি ৬০, মুলা ৪০, বেগুন ৬০ টাকা। এ ছাড়া আলু প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, প্রতিটি লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লালমনিরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এ.এস.এম মাসুম উদ দৌলা বলেন, নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কোনো অবস্থাতেই পণ্যের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। তারপরেও যারা অনিয়ম করছেন তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় এবং বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নিউজবিজয়/এফএইচএন