ভারতের আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে বাংলাদেশে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় দু’টি ইউনিটের ১৪৯৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটির ৭৫০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর পর এ প্রথম বিদ্যুৎ আসলো দেশে।
এদিকে আদানির বিদ্যুৎ নিয়ে আগামী ১৩ মার্চ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে। আজ রাত ৯টা পর্যন্ত ৭০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ দেশে আসে। ইউনিটটি পরীক্ষামূলকভাবে পুরো সক্ষমতায় টানা ৭২ ঘণ্টা চলমান থাকলে এটির সিওডি সম্পন্ন ও বাণিজ্যিক উৎপাদন ও সরবরাহ শুরু হবে। কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আগামী ২৬ মার্চ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
পিজিসিবির মুখপাত্র এবিএম বদরুদ্দোজা সুমন রাত ৮টায় জানান, সন্ধ্যা থেকে আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশের গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫ মেগাওয়াট আসছে। পর্যায়ক্রমে এটি বাড়বে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) সূত্র বলছে, আদানির বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার জন্য ভারত এবং বাংলাদেশ প্রান্তে যে গ্রিড লাইন রয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অংশের কাজ শেষ করেছে পিজিসিবি। পিজিসিবির পক্ষ থেকে পিডিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে লাইনটি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তত রয়েছে বলে জানানো হয়।
আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম, বিদ্যুতের সঞ্চালনসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১৩ মার্চ ভারতে যাবে বিদ্যুৎ বিভাগের এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা।
আদানির কেন্দ্রটি ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডা জেলায়। সেখান থেকে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ আসবে চাপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুরে সঞ্চালন উপকেন্দ্রে। সেখান থেকে যাবে বগুড়াতে।
ঝাড়খন্ডের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে সঞ্চালনের জন্য মোট ২৪৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে ভারতে ১১০ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশে ১৩৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন রয়েছে। বাণিজ্যকভাবে চালু হওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা একনাগাড়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখতে হবে। এরপরে ঠিক হবে কেন্দ্রটির স্থাপিত ক্ষমতা। সে অনুযায়ী কেন্দ্রটি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পাবে।
গতমাসে দেওয়া প্রতিটন কয়লার দাম ৪০০ ডলার অনুযায়ী প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ২৫ টাকার বেশি। এর মধ্যে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্র ভাড়া রয়েছে ৫ টাকা ১১ পয়সা। বাংলাদেশে কোনো বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে এতো বেশি পরিমাণ কেন্দ্র ভাড়া দেওয়া হয়নি। এছাড়া বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে আদানিকে কয়লার সিস্টেম লসসহ বেশ কিছু সুবিধা দেয়া হয়েছে যা অন্য কেন্দ্রগুলোকে দেয়া হয়নি।