ঢাকা ০২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বদলগাছীতে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু! স্বামী আটক

নওগাঁর বদলগাছীতে আনজুম নূরে আরশি (১৮) নামে এক গৃহবধুর রহস্য রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। নিহত গৃহবধু বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের কার্তিকাহার গ্রামের শাহ আলম এর মেয়ে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঐ গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসছে। এ ঘটনায় স্বামী এমরান হোসেন (২২) কে আটক করেছে পুলিশ।

সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও গৃহবধুর পরিবারের লোকজনের সাথে কতা বলে জানাযায়, গত ৭/৮ মাস আগে আরশির সাথে ২য় বারের মতো বিয়ে হয় একই উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের হলুদ বিহার গ্রামের মিরাজের ছেলে এমরান হোসেনের। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য শশুর, শাশুড়ি ও তার স্বামী সব সময় তার উপর বিভিন্নভাবে মানষিক ও পাষবিক নির্যাতন করতো। ঈদের এক দিন আগেও তার তার স্বামী ও শাশুড়ি ঐ গৃহবৃধুকে নির্যাতন করেছে। ঈদের দিন আরশিকে নিয়ে তার স্বামী এমরান তার শশুর বাড়িতে বেড়াতে আসে। এবং এখানেই থাকে। ঘটনার দিন রাতে স্বামী-স্ত্রী আরশির চাচার বাড়িতে খাবার খেয়ে এসে শুয়ে পড়েন।

কিন্তু রাত সাড়ে ১২ টার সময় আরশি মারা গেলে তার স্বামী এমরান হোসেন কৌশলে কাউকে কিছু না বলে রাতে তার শশুরবাড়ী থেকে মোটরসাইকেল বেড় করে তার বাবার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে আসতে বলে সে আবারো তার শশুরবাড়ীতে চলে আসে। ঘরে গিয়ে আরশিকে কোলে নিয়ে বলতে থাকে আরশি মারা গেছে। কিন্তু কিভাবে মারা গেছে সে ব্যাপারে কিছুই বলছে না। আরশির মৃত্যু নিয়ে পরিবার ও এলাকায় ব্যাপক সন্দেহ তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছে স্বামী এমরান নেশা করে, সে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।

গৃহ বধুর পিতা শাহ আলম বলেন, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্নভাবে আমার মেয়ের স্বামী, শাশুড়ি ও শশুর মানষিক ও শারিরিকভাবে নির্যতন করে আসছিলো। ঈদের আগের দিনও তার শাশুড়ি, শশুর ও স্বামী যৌতুকের টাকার জন্য আমার মেয়ের উপর প্রচুর নির্যাতন করে। তঁাদের নির্যাতন সইতে না পেরে মেয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে বলে আমকে আজকেই এখান থেকে নিয়ে যাও। মেয়ের বাবা মানসন্মানের ভয়ে মেয়েকে বলে তোমারা ঈদের নামাজের পর আমার বাড়িতে এসো। সেই মোতাবেক ঈদের দিন আমার মেয়েকে নিয়ে জামাই আমার বাড়িতে বেড়াতে আসে এবং এখানেই থাকে। ঘটনার দিন সকালে আমার মেয়ের পার্স ব্যাগ থেকে মেয়েকে কিছু না বলে টাকা বের করে নিয়ে আমার জামাই বাহিরে চলে যায়। মেয়ে পার্স ব্যাগে টাকা না দেখতে পেয়ে আমার মেয়ে না বলে টাকা নিবে কেন বলে জামাইয়ের সাথে কথা কাটাকাটি করে। ঘটনার দিন রাতে আমার ভাইয়ের বাড়িতে মেয়ে-জামাই খাওয়া-দাওয়া করে বাড়িতে আসে। এবং রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত আমার স্ত্রী আমার মেয়ে-জামাই এর ঘরে তঁাদের সাথে বিভিন্ন গল্প করে এসে শুয়ে পড়ে। আমি আমার দোকানে গিয়ে শুয়ে পড়ি। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে শুনতে পাই আমার মেয়ে মারা গেছে। ঐ ছেলে আমার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, সুরতহাল শেষে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য নওগঁা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। তার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আশা হয়েছে। ব্যপক জিজ্ঞাসাবা চলছে। মামলার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আরও পড়ুন>>৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

বদলগাছীতে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু! স্বামী আটক

প্রকাশিত সময় :- ০৬:২৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

নওগাঁর বদলগাছীতে আনজুম নূরে আরশি (১৮) নামে এক গৃহবধুর রহস্য রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। নিহত গৃহবধু বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের কার্তিকাহার গ্রামের শাহ আলম এর মেয়ে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঐ গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসছে। এ ঘটনায় স্বামী এমরান হোসেন (২২) কে আটক করেছে পুলিশ।

সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও গৃহবধুর পরিবারের লোকজনের সাথে কতা বলে জানাযায়, গত ৭/৮ মাস আগে আরশির সাথে ২য় বারের মতো বিয়ে হয় একই উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের হলুদ বিহার গ্রামের মিরাজের ছেলে এমরান হোসেনের। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য শশুর, শাশুড়ি ও তার স্বামী সব সময় তার উপর বিভিন্নভাবে মানষিক ও পাষবিক নির্যাতন করতো। ঈদের এক দিন আগেও তার তার স্বামী ও শাশুড়ি ঐ গৃহবৃধুকে নির্যাতন করেছে। ঈদের দিন আরশিকে নিয়ে তার স্বামী এমরান তার শশুর বাড়িতে বেড়াতে আসে। এবং এখানেই থাকে। ঘটনার দিন রাতে স্বামী-স্ত্রী আরশির চাচার বাড়িতে খাবার খেয়ে এসে শুয়ে পড়েন।

কিন্তু রাত সাড়ে ১২ টার সময় আরশি মারা গেলে তার স্বামী এমরান হোসেন কৌশলে কাউকে কিছু না বলে রাতে তার শশুরবাড়ী থেকে মোটরসাইকেল বেড় করে তার বাবার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে আসতে বলে সে আবারো তার শশুরবাড়ীতে চলে আসে। ঘরে গিয়ে আরশিকে কোলে নিয়ে বলতে থাকে আরশি মারা গেছে। কিন্তু কিভাবে মারা গেছে সে ব্যাপারে কিছুই বলছে না। আরশির মৃত্যু নিয়ে পরিবার ও এলাকায় ব্যাপক সন্দেহ তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছে স্বামী এমরান নেশা করে, সে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।

গৃহ বধুর পিতা শাহ আলম বলেন, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য বিভিন্নভাবে আমার মেয়ের স্বামী, শাশুড়ি ও শশুর মানষিক ও শারিরিকভাবে নির্যতন করে আসছিলো। ঈদের আগের দিনও তার শাশুড়ি, শশুর ও স্বামী যৌতুকের টাকার জন্য আমার মেয়ের উপর প্রচুর নির্যাতন করে। তঁাদের নির্যাতন সইতে না পেরে মেয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে বলে আমকে আজকেই এখান থেকে নিয়ে যাও। মেয়ের বাবা মানসন্মানের ভয়ে মেয়েকে বলে তোমারা ঈদের নামাজের পর আমার বাড়িতে এসো। সেই মোতাবেক ঈদের দিন আমার মেয়েকে নিয়ে জামাই আমার বাড়িতে বেড়াতে আসে এবং এখানেই থাকে। ঘটনার দিন সকালে আমার মেয়ের পার্স ব্যাগ থেকে মেয়েকে কিছু না বলে টাকা বের করে নিয়ে আমার জামাই বাহিরে চলে যায়। মেয়ে পার্স ব্যাগে টাকা না দেখতে পেয়ে আমার মেয়ে না বলে টাকা নিবে কেন বলে জামাইয়ের সাথে কথা কাটাকাটি করে। ঘটনার দিন রাতে আমার ভাইয়ের বাড়িতে মেয়ে-জামাই খাওয়া-দাওয়া করে বাড়িতে আসে। এবং রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত আমার স্ত্রী আমার মেয়ে-জামাই এর ঘরে তঁাদের সাথে বিভিন্ন গল্প করে এসে শুয়ে পড়ে। আমি আমার দোকানে গিয়ে শুয়ে পড়ি। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে শুনতে পাই আমার মেয়ে মারা গেছে। ঐ ছেলে আমার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, সুরতহাল শেষে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য নওগঁা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। তার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আশা হয়েছে। ব্যপক জিজ্ঞাসাবা চলছে। মামলার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আরও পড়ুন>>৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন