ঢাকা ০১:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রংপুরের

পীরগাছায় মধ্যযুগীয় কায়দায় যুবককে নির্যাতন: তিনদিন পর উদ্ধার, গ্রেফতার-১

রংপুরের পীরগাছায় দাদন ব্যবসায়ীর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় সুমন মিয়া (২৮) নামে এক যুবককে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে তিন দিন ধরে শিকলে বেঁধে নির্মম নির্যাতনে ওই যুবক অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে গত শুক্রবার গভীর রাতে পীরগাছা থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এসময় পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে। হাসপাতালে ভর্তি আহত যুবকের অবস্থা অবনতি হলে গতকাল শনিবার তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর এ ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চাপড়া বগুড়াপাড়া গ্রামে। এ ব্যাপারে আজ শনিবার ৪ জনকে আসামী করে পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই যুবকের পিতা শফিকুল ইসলাম ছপু।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চাপড়া বগুড়াপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ছপুর ছেলে সুমন মিয়া (২৮) এর নিকট ধারের ৬০ হাজার টাকা পাওয়ার অযুহাতে গত বুধবার বিকেলে তাকে বাড়ি থেকে অপরহরণ করে নিয়ে যান একই গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী মনজু মিয়া ও তার ছেলে রেজওয়ান, ইমরান ও আরিফ মিয়া। এসময় তারা সুমন মিয়াকে জিম্মি করে টাকা পরিশোধের জন্য তার পরিবারের উপর চাঁপ সৃষ্টি করে। বেকার সুমন মিয়ার কাছে কিসের টাকা পাবেন, এত টাকা তাকে কেন দেওয়া হলো এসব বিষয় তার বাবা ও স্ত্রী জানার চেষ্টা করলেও তাদের কিছু বলা হয়নি। বুধবার থেকে শিকলে বেঁধে রাখা হয় সুমন মিয়াকে। তাকে খাবারও দেয়নি অপহরণকারীরা। উল্টো পানি ভর্তি বোতল দিয়ে তার সারা শরীরে চলে নির্মম নির্যাতন। এক পর্যায়ে সুমন মিয়া পালানো চেষ্টা করলে তাকে ধরে পানিতে চুবানো হয়। হাত-মুখ বেঁধে রাতভর চলে নির্যাতন। এদিকে সুমন মিয়ার বাবা ছপু ও স্ত্রী লাকী বেগম টাকা পরিশোধে সময় চাইলে শুক্রবার রাত ৮ টা পর্যন্ত সময় বেঁেধ দেন অপহরণকারীরা। শুক্রবার রাত ৮ টার পর টাকা না পেয়ে তাকে মেরে ফেলার জন্য বস্তা ও ধারালো ছুরি নিয়ে অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে এমন খবরে ভেঙ্গে পড়েন সুমন মিয়ার পারবার। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে প্রতিকার চাইলে রাত আড়াই টার দিকে পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অপহরণকারী মনজু মিয়ার বাড়ি থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে এবং মনজু মিয়ার ছেলে আরিফ মিয়া (২৪) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আজ সকালে হাসপাতালে গেলে সুমন মিয়ার স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। কি কারণে তাকে এতো টাকা দিলো এবং তার জন্য এভাবে নির্মম ভাবে মারলো জানিনা। সুমন মিয়াও টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি। তবুও আমরা টাকা পরিশোধে সময় চাইলেও তারা শোনেন নি। তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে।
সুমন মিয়ার পিতা শফিকুল ইসলাম ছপু বলেন, ছেলে অবস্থা খারাপ। তাকে রংপুর মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি বিচার চাই।
ঘটনার বিষয় জানতে অভিযুক্ত মনজু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি। তার এক স্বজন আনজু মিয়া বলেন, অটো ভ্যান কেনার জন্য সুমন মিয়া ৬০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। এ টাকা উদ্ধারে তাকে ধরে আনা হয়েছে বলে জানি।
এ ব্যাপারে পীরাগছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা সুমন মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি এবং আরিফ মিয়া নামে একজনকে আটক করি। আজ শনিবার মামলা দায়েরের পর আরিফ মিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে রংপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

নামাজের সময়সূচি: ২২ মে ২০২৪

রংপুরের

পীরগাছায় মধ্যযুগীয় কায়দায় যুবককে নির্যাতন: তিনদিন পর উদ্ধার, গ্রেফতার-১

প্রকাশিত সময় :- ০৬:৫৮:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুন ২০২২

রংপুরের পীরগাছায় দাদন ব্যবসায়ীর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় সুমন মিয়া (২৮) নামে এক যুবককে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে তিন দিন ধরে শিকলে বেঁধে নির্মম নির্যাতনে ওই যুবক অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে গত শুক্রবার গভীর রাতে পীরগাছা থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এসময় পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে। হাসপাতালে ভর্তি আহত যুবকের অবস্থা অবনতি হলে গতকাল শনিবার তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর এ ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চাপড়া বগুড়াপাড়া গ্রামে। এ ব্যাপারে আজ শনিবার ৪ জনকে আসামী করে পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই যুবকের পিতা শফিকুল ইসলাম ছপু।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চাপড়া বগুড়াপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম ছপুর ছেলে সুমন মিয়া (২৮) এর নিকট ধারের ৬০ হাজার টাকা পাওয়ার অযুহাতে গত বুধবার বিকেলে তাকে বাড়ি থেকে অপরহরণ করে নিয়ে যান একই গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী মনজু মিয়া ও তার ছেলে রেজওয়ান, ইমরান ও আরিফ মিয়া। এসময় তারা সুমন মিয়াকে জিম্মি করে টাকা পরিশোধের জন্য তার পরিবারের উপর চাঁপ সৃষ্টি করে। বেকার সুমন মিয়ার কাছে কিসের টাকা পাবেন, এত টাকা তাকে কেন দেওয়া হলো এসব বিষয় তার বাবা ও স্ত্রী জানার চেষ্টা করলেও তাদের কিছু বলা হয়নি। বুধবার থেকে শিকলে বেঁধে রাখা হয় সুমন মিয়াকে। তাকে খাবারও দেয়নি অপহরণকারীরা। উল্টো পানি ভর্তি বোতল দিয়ে তার সারা শরীরে চলে নির্মম নির্যাতন। এক পর্যায়ে সুমন মিয়া পালানো চেষ্টা করলে তাকে ধরে পানিতে চুবানো হয়। হাত-মুখ বেঁধে রাতভর চলে নির্যাতন। এদিকে সুমন মিয়ার বাবা ছপু ও স্ত্রী লাকী বেগম টাকা পরিশোধে সময় চাইলে শুক্রবার রাত ৮ টা পর্যন্ত সময় বেঁেধ দেন অপহরণকারীরা। শুক্রবার রাত ৮ টার পর টাকা না পেয়ে তাকে মেরে ফেলার জন্য বস্তা ও ধারালো ছুরি নিয়ে অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে এমন খবরে ভেঙ্গে পড়েন সুমন মিয়ার পারবার। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে প্রতিকার চাইলে রাত আড়াই টার দিকে পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অপহরণকারী মনজু মিয়ার বাড়ি থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে এবং মনজু মিয়ার ছেলে আরিফ মিয়া (২৪) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আজ সকালে হাসপাতালে গেলে সুমন মিয়ার স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। কি কারণে তাকে এতো টাকা দিলো এবং তার জন্য এভাবে নির্মম ভাবে মারলো জানিনা। সুমন মিয়াও টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি। তবুও আমরা টাকা পরিশোধে সময় চাইলেও তারা শোনেন নি। তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে।
সুমন মিয়ার পিতা শফিকুল ইসলাম ছপু বলেন, ছেলে অবস্থা খারাপ। তাকে রংপুর মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি বিচার চাই।
ঘটনার বিষয় জানতে অভিযুক্ত মনজু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি। তার এক স্বজন আনজু মিয়া বলেন, অটো ভ্যান কেনার জন্য সুমন মিয়া ৬০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। এ টাকা উদ্ধারে তাকে ধরে আনা হয়েছে বলে জানি।
এ ব্যাপারে পীরাগছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা সুমন মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি এবং আরিফ মিয়া নামে একজনকে আটক করি। আজ শনিবার মামলা দায়েরের পর আরিফ মিয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে রংপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।