বরিশালে আবাসিক হোটেলে তরুণীকে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অপরাধে দায়ের করা মামলায় চারজনকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে দায়ের হওয়া এ মামলায় কারাভোগের পাশাপাশি পাঁচ হাজার টাকা করে প্রত্যেককে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার দুপুরে বরিশালের মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনজুরুল হোসেন এ দণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
রায় ঘোষণার সময় চার আসামির মধ্যে তিনজন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মো. মাসুদ (২৮) নামের একজন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক রয়েছেন। তিনি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মিয়াজানপুর এলাকার মো. জামালের ছেলে। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আদালতে উপস্থিত থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড এলাকার আবাসিক ‘হোটেল খান’-এর স্টাফ মো. ইব্রাহীম (৩৮)। ইব্রাহীম বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকান্দি এলাকার সেলিম হাওলাদারের ছেলে। এছাড়া শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের কামারপাড়া এলাকার ফরিদ হাওলাদারের ছেলে ইবাদুল হক (২৪) ও পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা সদরের মোতাহার হোসেনের ছেলে নেছার উদ্দিন (৪০)।
বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাইয়ুম খান কায়সার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, হোটেলে পতিতাবৃত্তি বন্ধে আদালতের এ রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
মামলার বরাতে আদালতের বেঞ্চ সহকারী তুহিন মোল্লা জানান, ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টায় বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড এলাকায় আবাসিক হোটেল খানে অভিযান পরিচালনা করেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক প্রলয় কান্তি দাসের নেতৃত্বাধীন টিম। এ সময় সেখান থেকে ৩০ বছর বয়সি এক নারীকে উদ্ধার ও হোটেল স্টাফসহ চারজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের এসআই প্রলয় কান্তি বাদী হয়ে মডেল থানায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, উদ্ধারকৃত নারীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন হোটেল মালিক ও স্টাফরা।
এ ঘটনায় একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আসাদুল ইসলাম চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার তিন অপরাধীর উপস্থিতিতে ওই দণ্ডাদেশ দেন।