আহমদিয়া কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের জাতীয় সালানা জলাসাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাধারণ মুসল্লি ও পুলিশের সংর্ঘষে আরিফ (২৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন এবং এ ঘটনায় আরও প্রায় ৪০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর আহমদিয়া কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে চৌরঙ্গি মোড়ে একত্র হতে থাকে।
নিহত আরিফ পঞ্চগড় জেলা পৌরসভার ডোকরো পাড়া এলাকার মো ফরমান আলি ড্রাইভারের একমাত্র ছেলে। আরিফ জুম্মার নামাজের পর বিক্ষোভ-মিছিলে যোগ দেয়। পুলিশের বাধার মুখে রাবার বুলেটে সে গুরুতর আহত হলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজে রেফার্ড করেন। পথে অ্যাম্বুলেন্সে তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে।
এদিকে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড়ের ডাকে শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে নামাজ শেষে চৌরঙ্গি মোড়ে মিছিল নিয়ে এবং বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ-মিছিল করে চৌরঙ্গি মোড়ে আসলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে সংর্ঘষ শুরু হয়। বিক্ষোভ-মিছিল ছত্রভঙ্গ হলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে । এসময় পুলিশ পাল্টা জবাবে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে প্রায় ৪০ জন মুসল্লিসহ পুলিশ গুরুতর আহত হন। কয়েকজন মুসল্লিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও ১৭ প্লাটুন বিজিবি যোগ দেয়।
বিক্ষোভ-মিছিল চলাকালীন পঞ্চগড় বাজারে আহমদিয়া কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের দোকান ঘর ও আহমদ নগর তেলিপাড়া এলাকার আহমদিয়াদের বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়াও পুলিশের গাড়ি ভাংচুর এবং মহাসড়কে থাকা ট্রাফিক অফিস জ্বালিয়ে দেয়। শহরের বিভিন্ন এলাকার অলিগলি থেকে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সাথে সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা জেলা শহরের চৌরঙ্গি পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড়।