ঢাকা ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ

  • নিউজ বিজয় ডেস্ক :-
  • প্রকাশিত সময় :- ১২:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩
  • ২৮২ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

বঙ্গবন্ধুর কাছে ছয় দফা ছিল একটা সাঁকো, যাতে চেপে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়া যায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের রোডম্যাপ মুলত রচিত হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা থেকেই। এটি ছিলো রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শী একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণ আন্দোলনের সূচনা হয়।

পাকিস্তানি শাসন-শোষণ বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে লাহোরে এক জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এইদিন অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ৬ দফা উত্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর দাবি আইয়ুব সরকার প্রত্যাখ্যান করে।

বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা দাবির মুখে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খান বিচলিত হয়ে পড়েন। দেশে ফিরে ৬ দফা কর্মসূচি জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সারা দেশে ৩৫ দিনে মোট ৩২টি জনসভায় বক্তৃতা করেন। ছয় দফার সপক্ষে জনমত প্রবল হয়ে ওঠায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন, গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু। ছয় দফা প্রচারকালে তিন মাসে আটবার গ্রেপ্তার হন তিনি। ১৯৬৬ সালের ৮ মে থেকে একটানা ৩৩ মাস কারাবন্দি ছিলেন জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধুর ১৪ বছরের কারাজীবনে এটাই ছিল দীর্ঘ কারাবাস।

বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে নিক্ষেপ করে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়েও ছয় দফার আন্দোলনকে যখন রোধ করা যাচ্ছিল না, তখন বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে চিরতরে তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য আগরতলা মামলা দায়ের করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ১৯৬৬ সালের ৭ জুন সারাদেশে সাধারণ ধর্মঘট আহ্বান করে। এ ধর্মঘটে ঢাকা, টঙ্গি ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআর’র গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন।

এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি। ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সব রাজবন্দির মুক্তির পর মুক্তি লাভ করেন শেখ মুজিব। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

৬ দফা দাবির পক্ষে বাঙালি জাতির সর্বাত্মক রায় ঘোষিত হয় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর দলকে জনগণ বিজয়ী করলেও স্বৈরাচারী পাকিস্তানী শাসকরা সরকার গঠন করতে না দিলে আবারও বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

ঐতিহাসিক ৬ দফার স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির পথপ্রদর্শক। প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায় তিনি চিরকাল ভাস্বর হয়ে থাকবেন।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

দিঘলিয়াতে শেখ মারুফুল ইসলামের আনারস প্রতীকের সমর্থনে উঠান বৈঠকে জনতার ঢল

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ

প্রকাশিত সময় :- ১২:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩

বঙ্গবন্ধুর কাছে ছয় দফা ছিল একটা সাঁকো, যাতে চেপে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়া যায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের রোডম্যাপ মুলত রচিত হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা থেকেই। এটি ছিলো রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শী একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণ আন্দোলনের সূচনা হয়।

পাকিস্তানি শাসন-শোষণ বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে লাহোরে এক জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এইদিন অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ৬ দফা উত্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধুর দাবি আইয়ুব সরকার প্রত্যাখ্যান করে।

বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা দাবির মুখে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খান বিচলিত হয়ে পড়েন। দেশে ফিরে ৬ দফা কর্মসূচি জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সারা দেশে ৩৫ দিনে মোট ৩২টি জনসভায় বক্তৃতা করেন। ছয় দফার সপক্ষে জনমত প্রবল হয়ে ওঠায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন, গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু। ছয় দফা প্রচারকালে তিন মাসে আটবার গ্রেপ্তার হন তিনি। ১৯৬৬ সালের ৮ মে থেকে একটানা ৩৩ মাস কারাবন্দি ছিলেন জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধুর ১৪ বছরের কারাজীবনে এটাই ছিল দীর্ঘ কারাবাস।

বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে নিক্ষেপ করে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়েও ছয় দফার আন্দোলনকে যখন রোধ করা যাচ্ছিল না, তখন বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে চিরতরে তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য আগরতলা মামলা দায়ের করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ১৯৬৬ সালের ৭ জুন সারাদেশে সাধারণ ধর্মঘট আহ্বান করে। এ ধর্মঘটে ঢাকা, টঙ্গি ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআর’র গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন।

এরপর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় পরাধীন বাঙালি জাতি। ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সব রাজবন্দির মুক্তির পর মুক্তি লাভ করেন শেখ মুজিব। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

৬ দফা দাবির পক্ষে বাঙালি জাতির সর্বাত্মক রায় ঘোষিত হয় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর দলকে জনগণ বিজয়ী করলেও স্বৈরাচারী পাকিস্তানী শাসকরা সরকার গঠন করতে না দিলে আবারও বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

ঐতিহাসিক ৬ দফার স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির পথপ্রদর্শক। প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায় তিনি চিরকাল ভাস্বর হয়ে থাকবেন।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন