ঢাকা ১০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামে রাসূল (সা.) এর অবমাননাকারীর শাস্তি

  • ইসলাম ডেস্ক:-
  • প্রকাশিত সময় :- ০৬:০৭:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২
  • ৩০২ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে লানত দিয়েছেন রাসূল (সা.)-এর অবমানাকারীদের
পৃথিবীর যেকোনো ভূখণ্ডে শান্তি-শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার স্বার্থে ধর্ম, ধর্মীয় গ্রন্থ, নবী ও সাহাবিদের সম্মান রক্ষার্থে অত্যন্ত কঠোর আইন অত্যাবশ্যক। অন্যথায় কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটালে ধর্মপ্রাণ মানুষ রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে ও ক্রোধে ফেটে পড়বে। শুরু হবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। শুরু হবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। বিপর্যস্ত হবে মানবতা, ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়।

সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতসীন দল বিজেপির নেত্রী নূপুর শর্মা এবং দলটির এক নেতা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছে। এতে পশ্চিম এশিয়াসহ ইসলামি বিশ্বের একাধিক দেশ ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে অবমানা মারাত্মক অপরাধ।

আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে লানত দিয়েছেন রাসূল (সা.)-এর অবমানাকারীদের। তাদের জন্য অপেক্ষা করছে চরম অপমানজনক শাস্তি। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের ওপর আল্লাহ লানত করেছেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন এমন শাস্তি, যা লাঞ্ছিত করে ছাড়বে।’ (সূরা: আহজাব, আয়াত: ৫৭)।

‘আর যে ব্যক্তি তার সামনে হেদায়েত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও রাসূলের (সা.) বিরুদ্ধাচরণ করবে ও মুমিনের পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ অনুসরণ করবে, আমি তাকে সে পথেই ছেড়ে দেব, যা সে অবলম্বন করেছে। আর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব, যা অতি মন্দ ঠিকানা। (সূরা: নিসা, আয়াত: ১১৫)।

‘রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমানাকারী’র বিষয়ে ইসলামিক স্কলাররা দুটি পয়েন্টে একমত-

১. সে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে।

২. তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

ইমাম আবু ইউসুফ (রহ) বলেন, কোনো মুসলমান যদি রাসূল (সা.)-কে গালি দেয় বা তাঁর দোষ বর্ণনা করে অথবা তার সম্মানকে খাটো করে তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে। তার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। এবার যদি সে তাওবা করে তাহলে তা কবুল হবে অন্যথায় তাকে হত্যা করে ফেলা হবে। এই বিধান নারী পুরুষ উভয়ের জন্যে। (কিতাবুল খারাজ: ১৯৯পৃ.)।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এবং ইমাম শাফেয়ি (রহ.) এর মতানুসারে তাকে হত্যা করবে রাষ্ট্রপ্রধান বা তার প্রতিনিধিরা। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে একথাও লিখেছেন যে, যদি কোনো সাধারণ মানুষ তাকে হত্যা করে ফেলে তাহলে তার ওপর কোনো শাস্তি আসবে না। কেননা মুরতাদ হওয়ার কারণে লোকটি প্রথমেই তার রক্তকে অন্যের জন্য হালাল করে দিয়েছে।

বাদায়েউস সানায়েতে বলা হয়েছে- যদি তাকে কেউ হত্যা করে তওবা করার আগেই তাহলে কাজটি মাকরুহ হলেও হত্যাকারীর ওপর কোনো কিছু আবশ্যক হবে না। কেননা মুরতাদ হওয়ার কারণে রাসূলের (সা.) অবমাননাকারী প্রথমেই তার রক্তকে অন্যের জন্য হালাল করে দিয়েছে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৭/১৩)।

তবে, বর্তমানে ওলামায়ে কেরাম এমত পোষণ করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অবমানকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে চাপ দেবে মুসলিম উম্মাহ। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করবে। নিজের হাতে নবী অবমাননাকারীকে হত্যা করবে না। কারণ এ অনুমতি থাকলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।

শাতেমে রাসূল বা রাসূল (সা.)-কে গালিদাতা কিংবা কটূক্তিকারীকে হত্যার পূর্বে তার থেকে তাওবা চাওয়া হবে কি না বা সে যদি নিজ থেকে তাওবা করে তাহলে কি তাকে হত্যা বাতিল বলে গণ্য হবে কি না- এ বিষয়ে হানাফি মাজহাবের ফতোয়া হলো- তার নিকট তাওবা তলব করা হবে অথবা সে যদি তাওবা করে, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

শাফেয়ি মাজহাবের ইমামদেরর থেকে বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেলেও মাজহাবের ফতোয়া হলো-0 শাতেমের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে। সুতরাং তার থেকে তাওবা চেয়ে ইসলামে ফিরে আসতেও বলা হবে। এবং সে নিজে তাওবা করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে।

ইমামদের মতামত, ফতোয়া ও আলোচনা থেকে এ কথা স্পষ্ট-

১. রাসূল (সা.) এর শানে বেয়াদবিমূলক মন্তব্য, বক্তব্য বা তাঁর প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রূপকারী এবং ধর্মীয় কোনো বিধান নিয়ে ব্যঙ্গকারী উম্মতের সর্বোচ্চ ঐকমত্যে মুরতাদ বলে সাব্যস্ত হবে।

২. তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই।

৩. মৃত্যুদণ্ড প্রদানের দায়িত্ব শাসকদের।

৪. শাসকদের জন্য আবশ্যক এ ধরনের লোকদের চিহ্নিত করে আইনের মাধ্যমে তাদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা। উল্লেখ্য, সাধারণ মুসলমানদের জন্য এক্ষেত্রে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নিউজবিজয়/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

ইসলামে রাসূল (সা.) এর অবমাননাকারীর শাস্তি

প্রকাশিত সময় :- ০৬:০৭:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জুন ২০২২

আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে লানত দিয়েছেন রাসূল (সা.)-এর অবমানাকারীদের
পৃথিবীর যেকোনো ভূখণ্ডে শান্তি-শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার স্বার্থে ধর্ম, ধর্মীয় গ্রন্থ, নবী ও সাহাবিদের সম্মান রক্ষার্থে অত্যন্ত কঠোর আইন অত্যাবশ্যক। অন্যথায় কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটালে ধর্মপ্রাণ মানুষ রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে ও ক্রোধে ফেটে পড়বে। শুরু হবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। শুরু হবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। বিপর্যস্ত হবে মানবতা, ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়।

সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতসীন দল বিজেপির নেত্রী নূপুর শর্মা এবং দলটির এক নেতা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছে। এতে পশ্চিম এশিয়াসহ ইসলামি বিশ্বের একাধিক দেশ ভারতের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে অবমানা মারাত্মক অপরাধ।

আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে লানত দিয়েছেন রাসূল (সা.)-এর অবমানাকারীদের। তাদের জন্য অপেক্ষা করছে চরম অপমানজনক শাস্তি। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের ওপর আল্লাহ লানত করেছেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন এমন শাস্তি, যা লাঞ্ছিত করে ছাড়বে।’ (সূরা: আহজাব, আয়াত: ৫৭)।

‘আর যে ব্যক্তি তার সামনে হেদায়েত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও রাসূলের (সা.) বিরুদ্ধাচরণ করবে ও মুমিনের পথ ছাড়া অন্য কোনো পথ অনুসরণ করবে, আমি তাকে সে পথেই ছেড়ে দেব, যা সে অবলম্বন করেছে। আর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব, যা অতি মন্দ ঠিকানা। (সূরা: নিসা, আয়াত: ১১৫)।

‘রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অবমানাকারী’র বিষয়ে ইসলামিক স্কলাররা দুটি পয়েন্টে একমত-

১. সে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে।

২. তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

ইমাম আবু ইউসুফ (রহ) বলেন, কোনো মুসলমান যদি রাসূল (সা.)-কে গালি দেয় বা তাঁর দোষ বর্ণনা করে অথবা তার সম্মানকে খাটো করে তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে। তার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। এবার যদি সে তাওবা করে তাহলে তা কবুল হবে অন্যথায় তাকে হত্যা করে ফেলা হবে। এই বিধান নারী পুরুষ উভয়ের জন্যে। (কিতাবুল খারাজ: ১৯৯পৃ.)।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এবং ইমাম শাফেয়ি (রহ.) এর মতানুসারে তাকে হত্যা করবে রাষ্ট্রপ্রধান বা তার প্রতিনিধিরা। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে একথাও লিখেছেন যে, যদি কোনো সাধারণ মানুষ তাকে হত্যা করে ফেলে তাহলে তার ওপর কোনো শাস্তি আসবে না। কেননা মুরতাদ হওয়ার কারণে লোকটি প্রথমেই তার রক্তকে অন্যের জন্য হালাল করে দিয়েছে।

বাদায়েউস সানায়েতে বলা হয়েছে- যদি তাকে কেউ হত্যা করে তওবা করার আগেই তাহলে কাজটি মাকরুহ হলেও হত্যাকারীর ওপর কোনো কিছু আবশ্যক হবে না। কেননা মুরতাদ হওয়ার কারণে রাসূলের (সা.) অবমাননাকারী প্রথমেই তার রক্তকে অন্যের জন্য হালাল করে দিয়েছে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৭/১৩)।

তবে, বর্তমানে ওলামায়ে কেরাম এমত পোষণ করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অবমানকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপক্ষকে চাপ দেবে মুসলিম উম্মাহ। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করবে। নিজের হাতে নবী অবমাননাকারীকে হত্যা করবে না। কারণ এ অনুমতি থাকলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।

শাতেমে রাসূল বা রাসূল (সা.)-কে গালিদাতা কিংবা কটূক্তিকারীকে হত্যার পূর্বে তার থেকে তাওবা চাওয়া হবে কি না বা সে যদি নিজ থেকে তাওবা করে তাহলে কি তাকে হত্যা বাতিল বলে গণ্য হবে কি না- এ বিষয়ে হানাফি মাজহাবের ফতোয়া হলো- তার নিকট তাওবা তলব করা হবে অথবা সে যদি তাওবা করে, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

শাফেয়ি মাজহাবের ইমামদেরর থেকে বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেলেও মাজহাবের ফতোয়া হলো-0 শাতেমের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে। সুতরাং তার থেকে তাওবা চেয়ে ইসলামে ফিরে আসতেও বলা হবে। এবং সে নিজে তাওবা করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে।

ইমামদের মতামত, ফতোয়া ও আলোচনা থেকে এ কথা স্পষ্ট-

১. রাসূল (সা.) এর শানে বেয়াদবিমূলক মন্তব্য, বক্তব্য বা তাঁর প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রূপকারী এবং ধর্মীয় কোনো বিধান নিয়ে ব্যঙ্গকারী উম্মতের সর্বোচ্চ ঐকমত্যে মুরতাদ বলে সাব্যস্ত হবে।

২. তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই।

৩. মৃত্যুদণ্ড প্রদানের দায়িত্ব শাসকদের।

৪. শাসকদের জন্য আবশ্যক এ ধরনের লোকদের চিহ্নিত করে আইনের মাধ্যমে তাদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা। উল্লেখ্য, সাধারণ মুসলমানদের জন্য এক্ষেত্রে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

নিউজবিজয়/এফএইচএন