ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) স্থগিত করার সুপারিশ করেছেন জাতিসংঘের চরম দারিদ্র্য এবং মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার অলিভিয়ার ডি শুটার।
সোমবার (২৯ মে) উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, আইনটি প্রয়োগের মাধ্যমে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, বিরোধী রাজনীতিবিদদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। তাই উল্লেখযোগ্যভাবে সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত আইনটি স্থগিত রাখা উচিত।
চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে ১২ দিনের সফর শেষে সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন অলিভিয়ের ডি শ্যুটার। সেখানেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে নিজের এমন অভিমত তুলে ধরেন তিনি।
জাতিসংঘের কর্মকর্তা ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও কক্সবাজার সফর করেন। ১২ দিনের সফরে তিনি শ্রমিক, কৃষক, সুশীল সমাজ ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফর নিয়ে তিনি একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন জাতিসংঘে।
শুটার বলেন, ডিএসএ কার্যকর হওয়ার পর থেকে ২৪০০ জনের বেশি লোককে বিচার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনকে দীর্ঘদিন ধরে আটক রাখা হয়েছে। মানবাধিকারের জন্য যারা লড়াই করে তারা ভীতির মধ্যে থাকবে, এটা স্বাভাবিক নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এরকম ভয়ের পরিবেশে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাবে না। এমনকি অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রেও আইনটি বাধা সৃষ্টি করবে। জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার বিষয়টি উন্নত না করে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বা সামাজিক সুরক্ষা প্রদান সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা স্বীকার করে শুটার বলেন, তবে অগ্রগতির পরিস্থিতি ভঙ্গুর রয়ে গেছে। যারা দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন, তারা যেকোনো সময় আবার দরিদ্র হয়ে যেতে পারেন। কারণ তারা কোনো অর্থনৈতিক ধাক্কা সহ্য করতে পারবে না।
বাংলাদেশ সফরের সময় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে ডি শুটার বলেন, এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্য রয়ে গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের পাশাপাশি দুর্বল সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে আয় ও সম্পদের বৈষম্য বিশেষ করে শহরাঞ্চলে আয়বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।