লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার কলেজের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট মানিক রায়ের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে।
অভিযুক্ত মানিক রায় উত্তর গোতামারী এলাকার মৃত মনোরঞ্জনের ছেলে। সে দইখাওয়া আদর্শ কলেজের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত আছেন। সে দইখাওয়াহাটে তন্দ্রা মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটার দোকানের মালিক।
এ ঘটনায় ঐ গৃহবধূ বাদী হয়ে অভিযুক্ত মানিক রায়ের বিরুদ্ধে ১২ মে লালমনিরহাট জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর গোতামারী এলাকার খগেশ্বর রায়ের ছেলে বনমালী বাবু জীবিকা নির্বাহের তাগিদে ঢাকায় চাকরি করেন। তার স্ত্রী রাণী (ছদ্ম নাম) তার পুত্র সন্তান নিয়ে বাসায় বসবাস করেন। রাণী পরমাসুন্দরী হওয়ায় তার দিকে কুদৃষ্টি পড়ে ওই এলাকার মানিক রায়ের। মানিক রায় নারী লোভী হওয়ায় ঐ নারীকে প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে তার সাথে যৌন চাহিদা মেটানো জন্য উত্যক্ত করে আসছে। এতে রাণী রাজী না হয়ে মানিক রায়কে এসব কু প্রস্তাব থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করে। এরপর মানিক রায় ঐ নারীর সাথে তার যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন পায়তারা ও সুযোগ খুজতে থাকে। এমতাবস্থায় গত ৩ মে রাতে খাওয়া দাওয়া করে রাণী তার ছেলে সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়ে। এই সুযোগে পুর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক মানিক রায় কৌশলে দরজা খুলে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে ঐ নারীর গোপনাঙ্গসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকে। এর এক পর্যায়ে রাণীকে বিবস্ত্র করে তার বুকের উপর উঠে ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে এতে ঐ নারীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘরের ডিম লাইটের আলোতে তার বুকের উপর মানিক রায়কে দেখে সে চিৎকার করতে থাকে। এসময় মানিক রায় ঐ নারীর মুখ চেপে ধরে আবারও তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় ঐ নারী মানিক রায়কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে নিজেকে রক্ষা করে চিৎকার করতে থাকে। নারীর চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসতে থাকলে মানিক রায় কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এদিকে অভিযুক্ত মানিক রায় প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকে ঐ নারীকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন মানিকের আত্মীয় স্বজনেরা। ফলে অসহায় নারী আতংকে রয়েছেন।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে ঐ নারী ৫ মে থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার আদালতে যাবার পরামর্শ দেয়। এরপর তিনি স্থানীয়ভাবে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হলে ন্যায় বিচাররের স্বার্থে ১২ মে লালমনিরহাট আদালতে গিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে মানিক রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এবিষয়ে ঐ নারীর স্বামী বনমালী বাবু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সময় আমি ঢাকায় ছিলাম। এর আগে মানিক রায় আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় কু প্রস্তাব দিলে সে আমাকে বলতো। মানসম্মানের ভয়ে আমি বিষয়টি গোপন রেখে মানিক রায়কে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি। এরপর মানিক রায় প্রায় সময় বিভিন্ন নাম্বার থেকে আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে উত্যক্ত করতে থাকে এবং আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এলাকায় কুৎসা রটায়।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মানিক রায় ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, ঐ নারী একজন চরিত্রহীন মহিলা। অনন্ত নামে এক যুবকসহ তাকে ভুট্টা খেতে দেখে চিল্লাচিল্লি করে এলাকার এক ছেলে। এনিয়ে অনন্ত এলাকার ছেলেটিকে মারধর করে। পরে এলাকাবাসী অনন্তকে আটক করে মারধর করতে গেলে তেড়ে আসে ঐ মহিলা। এনিয়ে তার সাথে ঐ মহিলার কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মহিলাটি মানিক রায়কে তার হাতে থাকা পাতিল দিয়ে মারতে আসে, এসময় মানিক রায়ও তার হাতে থাকা বাশের লাঠি দারা আঘাত করেন বলে স্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগটি সম্পুর্ন মিথ্যা বলে তিনি দাবী করেন।
গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যান মোনাব্বেরুল হক মোনা বলেন, বিষয়টি শোনার পর স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হলে ঐ নারী এতে রাজি না হয়ে আদালতে গিয়ে মামলা করেন।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) বলেন, এবিষয়ে এখনও আদালতে কোন নির্দেশ হাতে পাইনি। পেলে তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
E-mail :- [email protected] । E-mail :- [email protected] মোবাইল- +৮৮০১৭১৩-৬৩৬৬৬১ । বার্তা বিভাগ :- +০১৭১৬-৯৮০০৮৮ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত NewsBijoy24.Com - Popular Online Newspaper of Bangladesh.