ঢাকা ০২:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদ মোবারক

যে গ্রামে পুরুষ নিষিদ্ধ, তবুও অন্তঃসত্ত্বা হন নারীরা

  • নিউজ বিজয় ডেস্ক :-
  • প্রকাশিত সময় :- ০৯:২৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩
  • ৩৭৬ পড়া হয়েছে। নিউজবিজয় ২৪.কম-১৫ ডিসেম্বরে ৯ বছরে পর্দাপন

কেনিয়ার শ্যামবুরু এলাকার উমোজা নামে একটি গ্রামে শুধু নারীদের বাস। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রথা ভেঙে এ গ্রাম স্থাপন করেছে নারীশক্তির অনন্য দৃষ্টান্ত। যেখানে ঠাঁই মিলেছে হাজারও নির্যাতিতার। শোষণের নির্মম ইতিহাসকে পেছনে ফেলে, তারা তৈরি করেছেন নিজস্ব পরিচয়।
প্রায় ৩০ বছর আগে সাম্বুরু সম্প্রদায়ের কয়েকজন নারী গোড়াপত্তন করেন এ গ্রামের। সমাজ থেকে, পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়ে গড়ে তোলেন নিজেদের অভয়াশ্রম। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিপীড়িত নারীরা যোগ দেন তাদের সাথে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু হয় বেঁচে থাকার লড়াই।

উমোজা গ্রামের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেন নোমুকেন বলেন, এখন দিন বদলেছে। একজন মেয়ের জীবনের সিদ্ধান্ত একান্তই তার নিজের। সে কী করবে, কার সাথে জীবন কাটাবে এ সিদ্ধান্তের অধিকার তার। এজন্য প্রথমেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে।

শুরুতে নারীদের আধিপত্য মানতে পারছিল না পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। কয়েক দফা চালানো হয় উচ্ছেদ প্রচেষ্টা। তবে কখনই ভেঙে পড়েননি নারীরা। ক্রমেই তাদের এই সাহসিকতার কথা ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। সাহায্যে এগিয়ে আসে আন্তর্জাতিক অনেক মানবাধিকার সংস্থা।

গ্রামবাসীরা জানান, এখানে থাকতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। কেউ আমাকে চাপ দেয় না কোনো কাজের জন্য। স্বামীর অত্যাচারের ভয় নেই । সন্তানদের নিয়ে বেশ ভালোই আছি।

বর্তমানে গ্রামটিতে সন্তানসহ প্রায় ৪০০ নারী বাস করেন স্বাচ্ছন্দ্যে। চলেন নিজেদের নিয়মকানুনে।

ছেলেসন্তান ১৮ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে মায়ের সঙ্গে। তার পরই ছাড়তে হয় গ্রাম। বর্তমানে পুরুষদের গ্রাম ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে। তবে নিষিদ্ধ রাতযাপন। উমোজার এ জীবনযাত্রা দেখতে ভিড় করেন বিশ্বের নানা প্রান্তের পর্যটকরা। কৃষিকাজের পাশাপাশি হাতে তৈরি গহনা ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক বিক্রি করে উমোজা এখন স্বনির্ভর।

উমোজা গ্রামের নারীরা বলেন, আমরা বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে এসেছি। কিন্তু এ গ্রামে আমরা একটি পরিবার। একই পরিচয়ে পরিচিত আমরা।

পরবর্তী প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেছেন গ্রাম প্রধানরা। শিশুদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি স্কুল। লক্ষ্য একটিই— সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে এক হয়ে এভাবেই নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় ধরে রাখা। কারণ উমোজা মানেই যে একতা।

এদিকে গ্রামটিতে পুরুষ প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়ার পরও গর্ভধারণ করছেন গ্রামের নারীরা। না, কোনো অলৌকিক উপায়ে নয়। আসলে গ্রামের আশপাশের অঞ্চলের পুরুষদের মধ্যে থেকেই নিজেদের পছন্দমতো সঙ্গী নির্বাচন করেন তারা। কিন্তু গর্ভধারণের পর আর সেই পুরুষের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেন না নারীরা। এ গ্রামে সন্তানের অধিকার একান্তভাবেই মায়ের। একাই সন্তানকে বড় করার ভার নেন তারা। আর এভাবেই, নিঃশব্দেই এক আন্দোলন জারি রেখেছেন পৃথিবীর প্রত্যন্ত গ্রামের এ মানুষেরা। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন

যে গ্রামে পুরুষ নিষিদ্ধ, তবুও অন্তঃসত্ত্বা হন নারীরা

প্রকাশিত সময় :- ০৯:২৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

কেনিয়ার শ্যামবুরু এলাকার উমোজা নামে একটি গ্রামে শুধু নারীদের বাস। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রথা ভেঙে এ গ্রাম স্থাপন করেছে নারীশক্তির অনন্য দৃষ্টান্ত। যেখানে ঠাঁই মিলেছে হাজারও নির্যাতিতার। শোষণের নির্মম ইতিহাসকে পেছনে ফেলে, তারা তৈরি করেছেন নিজস্ব পরিচয়।
প্রায় ৩০ বছর আগে সাম্বুরু সম্প্রদায়ের কয়েকজন নারী গোড়াপত্তন করেন এ গ্রামের। সমাজ থেকে, পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়ে গড়ে তোলেন নিজেদের অভয়াশ্রম। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিপীড়িত নারীরা যোগ দেন তাদের সাথে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু হয় বেঁচে থাকার লড়াই।

উমোজা গ্রামের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেন নোমুকেন বলেন, এখন দিন বদলেছে। একজন মেয়ের জীবনের সিদ্ধান্ত একান্তই তার নিজের। সে কী করবে, কার সাথে জীবন কাটাবে এ সিদ্ধান্তের অধিকার তার। এজন্য প্রথমেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে।

শুরুতে নারীদের আধিপত্য মানতে পারছিল না পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। কয়েক দফা চালানো হয় উচ্ছেদ প্রচেষ্টা। তবে কখনই ভেঙে পড়েননি নারীরা। ক্রমেই তাদের এই সাহসিকতার কথা ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। সাহায্যে এগিয়ে আসে আন্তর্জাতিক অনেক মানবাধিকার সংস্থা।

গ্রামবাসীরা জানান, এখানে থাকতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। কেউ আমাকে চাপ দেয় না কোনো কাজের জন্য। স্বামীর অত্যাচারের ভয় নেই । সন্তানদের নিয়ে বেশ ভালোই আছি।

বর্তমানে গ্রামটিতে সন্তানসহ প্রায় ৪০০ নারী বাস করেন স্বাচ্ছন্দ্যে। চলেন নিজেদের নিয়মকানুনে।

ছেলেসন্তান ১৮ বছর পর্যন্ত থাকতে পারে মায়ের সঙ্গে। তার পরই ছাড়তে হয় গ্রাম। বর্তমানে পুরুষদের গ্রাম ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে। তবে নিষিদ্ধ রাতযাপন। উমোজার এ জীবনযাত্রা দেখতে ভিড় করেন বিশ্বের নানা প্রান্তের পর্যটকরা। কৃষিকাজের পাশাপাশি হাতে তৈরি গহনা ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক বিক্রি করে উমোজা এখন স্বনির্ভর।

উমোজা গ্রামের নারীরা বলেন, আমরা বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে এসেছি। কিন্তু এ গ্রামে আমরা একটি পরিবার। একই পরিচয়ে পরিচিত আমরা।

পরবর্তী প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেছেন গ্রাম প্রধানরা। শিশুদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি স্কুল। লক্ষ্য একটিই— সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে এক হয়ে এভাবেই নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় ধরে রাখা। কারণ উমোজা মানেই যে একতা।

এদিকে গ্রামটিতে পুরুষ প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়ার পরও গর্ভধারণ করছেন গ্রামের নারীরা। না, কোনো অলৌকিক উপায়ে নয়। আসলে গ্রামের আশপাশের অঞ্চলের পুরুষদের মধ্যে থেকেই নিজেদের পছন্দমতো সঙ্গী নির্বাচন করেন তারা। কিন্তু গর্ভধারণের পর আর সেই পুরুষের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেন না নারীরা। এ গ্রামে সন্তানের অধিকার একান্তভাবেই মায়ের। একাই সন্তানকে বড় করার ভার নেন তারা। আর এভাবেই, নিঃশব্দেই এক আন্দোলন জারি রেখেছেন পৃথিবীর প্রত্যন্ত গ্রামের এ মানুষেরা। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন