রংপুরের পীরগাছায় পারিবারিক স্কুলে পরিনত হয়েছে নটাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষক ও তার পরিবারের একক আধিপত্য বিস্তারে ভেঙ্গে পড়েছে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম। পালন করা হয়নি ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। দুই বছর আগের ময়লাযুক্ত ব্যানার আর ময়লায় কালো হয়ে যাওয়া জাতীয় পতাকা ঝুলছিল স্কুল ভবনে। বার বার নিজের পরিবারের লোকজন দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন, নিয়োগ বানিজ্যসহ নানা অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবিরের বিরুদ্ধে। এতে করে ক্ষোভে ফুঁসছে অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের নটাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবির যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম-দুর্ণীতি করে আসছেন। তিনি বার বার তার নিজের পরিবার ও শ^শুড় পরিবারের সদস্যেদের দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে এসব অনিয়ম করছেন বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি কোন প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। এতে তার শ^শুর শামছুল আলমকে সভাপতি নির্বাচন করেন। এর আগের এডহক কমিটির সভাপতি ছিলেন তার চাচা শ^শুর শহিদুল ইসলাম। গোপন এই কমিটির মাধ্যমে কিছুদিন আগে আয়া পদে নিয়োগ পান সমন্ধীর স্ত্রী মাজেদা বেগম এবং পরিছন্নতাকর্মী তার জেঠাতো ভাই শাহীন আলম। এছাড়াও স্কুলটির বেশ কয়েকজন সহকারি শিক্ষক তার নিকট আত্মীয় বলে জানা গেছে। ১৯৯৯ সালে স্কুলটিতে এক সঙ্গে ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করা হলেও অজ্ঞাত কারণে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাননি নৈশ্য প্রহরী নুরুল ইসলাম। নিয়োগকৃত অন্য সকলের বেতন-ভাতা হলেও নুরুল ইসলামের বিল করা হয়নি। তার নিকট নেয়া আড়াই লাখ টাকাও ফেরত দেয়া হচ্ছে না।
নৈশ্য প্রহরী নুরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষকের ফুপা শ^শুর হন। সম্প্রতি ১২ লাখ টাকা নিয়ে আয়া ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। সরকারি ভাবে স্কুলটিতে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ হলেও পালন করা হয় না সরকারি কোন অনুষ্ঠান। সরেজমিনে ১৫ আগস্ট স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ নেই স্কুলে। সামনে ময়লায় কালো হয়ে যাওয়া একটি পাতাকা উড়ছে। দুই বছর আগের একটি ময়লা ব্যানার টাঙ্গানো হয়েছে ওয়ালে।
নৈশ্য প্রহরী নুরুল ইসলাম বলেন, সবার বিল হলেও ২২ বছরেও হয়নি আমার বিল। প্রধান শিক্ষক সব কাগজপত্র লুকিয়ে রেখে বলছেন স্কুলে আমার কোন কাগজপত্র নেই। আমার টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।
অভিভাবক সোহরাব হোসেন, নুর আলম মিয়া, আবুল কাশেম, শিরিনা বেগম, আশরাফুল ইসলাম বলেন, এটি একটি পরিবার ভিত্তিক স্কুল। প্রধান শিক্ষকের নিজের পরিবারের লোকজন দিয়ে কমিটি ও শিক্ষক-কর্মচারী দিয়ে চলছে সব কার্যক্রম। ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী থাকলেও প্রতিদিন ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী উপস্থিত হন ২৫-৩০ জন। হয়না কোন সরকারি অনুষ্ঠান। কোটি টাকার ভবন থাকলেও ৫শ টাকার শোক ব্যানার লাগানো হয়নি।
এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, শোক দিবস পালন করা হয়েছে। স্কুলের ফেসবুক আইডিতে দেখেন। আর বিদ্যালয়ে নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় সিমেন্ট পড়ে ব্যানার ও পতাকা এ রকম হয়েছে। বাকি সব নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।
স্কুল কমিটির সভাপতি শামছুল আলম বলেন, সব কিছু তো জামাই দেখেন। আমরাই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছি। আমরা থাকবো তো কে থাকবে। সব প্রক্রিয়া শেষে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পতাকা ও ব্যানারের বিষয়টি জামাই দেখেন।
পীরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা মিয়া বলেন, কমিটি অনুমোদন দেয় শিক্ষা বোর্ড। আর নিয়োগ দেয় ম্যানেজিং কমিটি। এতে যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা দপ্তরে অভিযোগ করতে পারে। তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
E-mail :- [email protected] । E-mail :- [email protected] মোবাইল- +৮৮০১৭১৩-৬৩৬৬৬১ । বার্তা বিভাগ :- +০১৭১৬-৯৮০০৮৮ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত NewsBijoy24.Com - Popular Online Newspaper of Bangladesh.