এবারের বর্ষবরণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে নির্দেশনা আনুযায়ী সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে সকল অনুষ্ঠান বন্ধ করার যে ঘোষণা, তা মানা হবে না বলে জানিয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে বর্ষবরণের দিন বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত শহীদ মিনারে চলবে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।
এ সময় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, পহেলা বৈশাখে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকেল ৪টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, পহেলা বৈশাখে ৬ টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেটি আমরা মানছি না। এবার আমরা যার যার মত সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান শেষ করব।
রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা জানা তারা। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে ঢাবির চারুকলা অনুষদের ডিন নেসার আহমেদ জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রেখে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য- ‘আমরা তো তিমির বিনিশী হতে চাই’। কোন সাম্প্রাদায়িক উস্কানিতে আমরা আতঙ্কিত নই বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরও বলেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রধান অনুসঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। এটি ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যর। বাঙালি জাতির ঐতিহ্য। নাড়ির স্পন্দন। দীর্ঘ বছর চলে আসা বাংলা নববর্ষ উদযাপন ও মঙ্গল শোভাযাত্রায় সরকারের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকা অপ্রয়োজনীয়। নিজস্ব স্বকীয়তায় মঙ্গল শোভাযাত্রা হওয়া উচিৎ। মৌলবাদীরা যত সক্রিয় হবে, মঙ্গল শোভাযাত্রার তত প্রসার ঘটবে, জনপ্রিয়তা বাড়বে। এতে জনসাধারণের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। তাহলেই মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বর্ষবরণ উদযাপনের উদ্দেশ্য সাধিত হবে।
তারা আরো বলেন, মুখোস পরে অনেক সময় দুর্বৃত্তরা অপরাধ করে। তাদের চিহ্নিত করা যায় না। তাই মুখোস আমাদের হাতে থাকবে। থাকবে নানা ধরণের ব্যানার-ফেস্টুন। সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রার পর ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রমনার বট তলা ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান চলবে। ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘আমরা যদি পহেলা বৈশাখ উদযাপন না করি, তাহলে মৌলবাদ শক্তিশালী হবে। পহেলা বৈশাখ একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব। মৌলবাদ ঠেকাতে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে হবে।’ ঈদের পর পর বাঙ্গালীর এই উৎসব হলেও সবাই অংশ নেবে বলে প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও এই আয়োজনের সভাপতি মুহাম্মাদ সামাদের।
এবারো শোভাযাত্রায় দেশীয় লোকজ উপকরণের মোটিফ থাকছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা দেবার নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেষ্টন করে না রাখতে আহবান জানান সংস্কৃতিজনেরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রা উপকমিটি এবং বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নেসার হোসাইন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, অভিনেতা রামেন্দ মজুমদার ও চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী (রণবীর) প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে অনেক সাংস্কৃতিককর্মী অংশ নেন।
আরও পড়ুন>>তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা
নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
E-mail :- [email protected] । E-mail :- [email protected] মোবাইল- +৮৮০১৭১৩-৬৩৬৬৬১ । বার্তা বিভাগ :- +০১৭১৬-৯৮০০৮৮ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত NewsBijoy24.Com - Popular Online Newspaper of Bangladesh.