জন্ম থেকেই জ¦লছি মাগো, আর কতো কাল জ¦ালাবে, গানের এই কলি সত্যি করে দিয়েছে পীরগাছার প্রতিবন্ধী সাথী আক্তারের জীবনে। একটি চেয়ারে সাথে দুই পা ও কোমড় বাঁধা পড়নের ওড়না দিয়ে। ঘন্টার পর ঘন্টা এভাবেই পার করছেন প্রতিবন্ধী শিশু সাথী আক্তার। গর্ভধারনী মা বাধ্য হয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এভাবে বেঁধে রাখেন পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রামগোপাল গ্রামের সার্থী আক্তারকে।
সার্থী আক্তারের বয়স ৯ বছর। হাটতে ও কথা বলতে পারেন না। তাই হামাগুড়ি দিয়ে এদিক-সেদিক চলে যায় এবং সামনে যা পান তাই মুখে নিয়ে খেতে থাকেন। এ জন্যই হতদরিদ্র বাবা শাহীন মিয়া ও গর্ভধারণী মা লাভলী আক্তার ৪ বছর ধরে সার্থী আক্তারকে চেয়ারে বেঁধে রেখে লালন-পালন করছেন।
সরেজমিনে সাথীদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি প্লাষ্টিক চেয়ারে বসা মেয়েটি। তবে তার দুই পা চেয়ারের দুই পায়ার সাথে এবং কোমরের অংশ চেয়ারের পিছনের বডির সাথে কাপড়ের দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা। কাইকে দেখলেই ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকেন সাথী আক্তার। কিন্তু কথা বলার স্বক্ষমতা নেই তার। জন্মের কয়েক বছর পরই তার বাবা-মা জানতে পারেন সাথী প্রতিবন্ধী।
সাথীর মা লাভলী আক্তার বলেন, সাথী জন্মগত প্রতিবন্ধী। সে হাটতে পারে না। কথা বলতে পারেনা। যখন তার বয়স কম ছিল তখন তাকে যেখানে রেখেছি সেখানেই থেকেছে। এখন বয়স বেড়ে যাওয়ায় সে হাটতে না পারলেও হামাগুড়ি দিয়ে ছুটে বেড়ায়। ময়লা-আবর্জনা খায়। এছাড়া কখন কোথায় যায়, কি হয় এই ভয়ে বাধ্য হয়ে তাকে বেঁধে রাখছি। পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ পেটের সন্তানকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা। তা আমাকে করতে হচ্ছে।
সাথীর বাবা শাহীন মিয়া বলেন, আমার অভাবের সংসার। এক দিন কাজ না করলে পেটে ভাত জোটে না। টাকার অভাবে মেয়েটার ঠিকভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো মেয়েটা আমার সুস্থ হতো। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার মেয়েটার সু-চিকিৎসার জন্য আবেদন করছি।
প্রতিবেশিরা জানান, ছোটকালে আদরের সন্তান ছিল সার্থী। কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার সেই আদর এখন নেই। তাকে তুলে খাওয়াতে হয়। প্রসাব-পায়খানা পরিষ্কার করতে হয়। তাকে নিয়ে বেড়ানোর জন্য নেই একটি হুইল চেয়ার। তাই বেঁধে রাখা অবস্থায় এক যায়গায় দিন পার সাথী আক্তারের। বাবা-মায়ের জন্য এটা বড় কষ্টকর। আমরা
স্থানীয় তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল বলেন, সাথীর জন্য একটা হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিতে চেয়েছি। ইনশাআল্লাহ করে দিব। ওর প্রতিবন্ধী ভাতা করে দেওয়া হয়েছে। এরা গরীব মানুষ। ভাতার যে সামান্য টাকা পায় তা দিয়ে ওর খাওয়া ও চিকিৎসা হয়না। আমি সমাজের বিত্তবানদের সাথীর সুচিকিৎসায় এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি।
নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
E-mail :- [email protected] । E-mail :- [email protected] মোবাইল- +৮৮০১৭১৩-৬৩৬৬৬১ । বার্তা বিভাগ :- +০১৭১৬-৯৮০০৮৮ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত NewsBijoy24.Com - Popular Online Newspaper of Bangladesh.