টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল হয়ে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলের সাড়ে ২৬ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। সাসেক-২ নামের এই প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের জমি পাওয়া গেলেও সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি মালিকানার ভূমি অধিগ্রহণে ধীরগতিতে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুর পর ওয়ারিশ সূত্রে রংপুরের পীরগঞ্জের জমির মালিক হয়েছেন শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তাঁদের জমির ওপর দিয়ে যাচ্ছে মহাসড়ক।
প্রধানমন্ত্রীর জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি জানা নেই জানিয়ে সচিব বলেন, 'উন্নয়ন অগ্রগতির প্রেরণা প্রধানমন্ত্রী নিজেই। তাঁর জমি অধিগ্রহণে বাধা থাকার কথা নয়। সে কারণেই আমারও জানা নেই।'
সওজ সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসনের গাফিলতিতে জমি নিয়ে বেগতিক অবস্থা। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের জমি অধিগ্রহণেও নারাজ ছিল জেলা প্রশাসন। সরকারপ্রধানের জমিতে হাত দিতে আমলারা ভয় পাচ্ছিলেন। মহাসড়ক ঘুরিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। পরবর্তী সময়ে রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে বিষয়টি জানায় সাসেক-২ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর জমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবার এমনই। তাঁরা দেশের জন্য ব্যক্তিগত স্বার্থ ত্যাগে সর্বদা প্রস্তুত থাকেন।
স্পিকার জানান, প্রয়াত ওয়াজেদ মিয়ার জমির সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তাঁর দুই সন্তানের আবেগ জড়িত হলেও প্রধানমন্ত্রীকে জানানো মাত্রই তিনি বলেছেন, 'সবার জমি অধিগ্রহণ হলে, আমারটা কেন হবে না? রাস্তার জন্য সাধারণ মানুষের জমি নেওয়া হচ্ছে, আমার জমি সবার আগে নেওয়া হোক।'
সওজ সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জের ফতেহপুর বুজরুক মৌজার চার নম্বর দাগে ছয় শতাংশ এবং পাঁচ নম্বর দাগে আট শতাংশ বাণিজ্যিক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুতে ওয়ারিশসূত্রে এই জমির মালিক হয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
কিশোরগাড়ী মৌজার এক হাজার ১০১ নম্বর দাগে ১৫ শতাংশ বাণিজ্যিক জমি ওয়াজেদ মিয়া এবং তাঁর তিন ভাই আবদুল জলিল মিয়া, আবদুল খালেক মিয়া ও আবদুল ওয়াহেদ মিয়ার নামে এসএ রেকর্ড হয়েছে। এ জমির ছয় শতাংশ মহাসড়কের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে, যার দেড় শতাংশের মালিকানা ছিল ওয়াজেদ মিয়ার। তাঁর মৃত্যুর পর এর দুই আনার মালিকানা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাকি অংশের মালিকানা পেয়েছেন তাঁদের দুই সন্তান। এ ছাড়া বাজিতপুর মৌজার ৮০৯ নম্বর দাগে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের আরও ১১ শতাংশ ডাঙ্গা (কৃষি) জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এডব্লিউএম রায়হান শাহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর ছেলেমেয়ের মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, দুই লাখ ৭৯ হাজার টাকা শতাংশ দরে সাড়ে ১৫ শতাংশ বাণিজ্যিক জমির জন্য ৪৩ লাখ ২৪ হাজার ৫০০ এবং ৭৫ হাজার টাকা দরে ১১ শতাংশ কৃষি জমির জন্য আট লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে। শেখ হাসিনা নিজ নামে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৩১২ টাকা ক্ষতিপূরণ। তাঁদের ক্ষতিপূরণের চেক জেলা প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিবকে বুঝিয়ে দিয়েছে।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের চাচাত ভাই তাজিমুল ইসলাম শামীম বলেন, শেখ হাসিনা, জয়, পুতুলসহ তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
E-mail :- [email protected] । E-mail :- [email protected] মোবাইল- +৮৮০১৭১৩-৬৩৬৬৬১ । বার্তা বিভাগ :- +০১৭১৬-৯৮০০৮৮ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত NewsBijoy24.Com - Popular Online Newspaper of Bangladesh.