রংপুরের কাউনিয়ায় ফারুক হোসেন (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রের লাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের রাজিব গ্রামে নিজ বাড়ী থেকে ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ফারুক হোসেন উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের রাজিব গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের বড় ছেলে এবং মীরবার কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র।
স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, গত রবিবার রাতে পিতা মাতা ও ছোট ভাইবোনদের সাথে রাতের খাবার খেয়ে নিজ শয়ন ঘরে একাই ঘুমিয়ে পড়েন ফারুক হোসেন। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ফারুকের মা ফাতেমা বেগম প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে বেড়িয়ে দেখেন ছেলের ঘরে আলো জ্বলছে। কিন্তু ফারুক আগে কোন দিন ঘরে আলো জ্বালিয়ে ঘুমাতেন না। ঘরের মধ্যে আলো জ্বালা দেখে মায়ের সন্দেহ হলে ছেলেকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে ফাতেমা বেগম টিনের ফাঁক দিয়ে দেখতে পান ঘরের ধর্নায় গলায় ওড়না পেঁচানো ছেলে ফারুক হোসেন ঝুলছে। চিৎকারে তার সিদ্দিকুর রহমান বিছানা থেকে উঠে গিয়ে স্বামী স্ত্রী মিলে ধর্ণায় ঝুলান্ত ছেলের মরদেহ মাটিতে নামিয়ে ফেলে।
ফারুকের পিতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তার বড় ছেলে ফারুক হোসেন লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির সহযোগি কাজ করতো। কিন্তু তার ছেলে লেখাপড়ায় মনযোগী না হয়ে মোবাইল ব্যবহারে খুবই আশক্ত ছিল। এজন্য প্রায় তিনি রাগারাগি করতেন। গত রবিবার রাত ৯ টার দিকে ঘরে তার সাথে ভাত খাবার সময় ফারুক হোসেন আবারও মোবাইল ব্যবহার করেন। এসময় তিনি রাগ হয়ে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন। এরপর খাবার খেয়ে ফারুক নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। ছেলের মা রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরে আসার সময় ঘরে ছেলের দেহ ঝুলতে দেখে চিৎকার দেয়।
টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, কলেজ ছাত্র ফারুক হোসেন জেদী স্বভাবের ছিল। রবিবার রাতে তার পিতা তাকে রাগারাগি করেছিল। পিতার সাথে অভিমান করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারনা করতে পারে।
তিনি বলেন, ফারুকের পিতা সিদ্দিকুর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। জমিজিরাত বলতে তাদের কিছুই নেই। সিদ্দিকুর তিস্তার ডানতীর রক্ষা বাঁধের ধারে সরকারি জমিতে ঘর তুলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। অভাবেব সংসারে খাবার জোগার করতে সিদ্দিকুর দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষি শ্রমিকের কাজ করনে। সে গত কয়েকদিন আগে বগুড়ায় কৃষি শ্রমিকের কাজ করে বাড়ীতে আসে। তার আশা ছিল ছেলে লেখাপড়া করে বৃদ্ধ বয়সে তাদের দেখভাল করবে। কিন্তু সেই আশা তার পুরণ হলো না।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান জানায়, গতকাল সোমবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। কিন্তু কলেজ ছাত্র ফারুক নিজ শয়ন ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার কোন কারণ জানাতে পারে নাই পরিবারের লোকজন।
ওসি মাসুমুর রহমান বলেন, ওই কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল সোমবার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নিহতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে কাউনিয়া থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
E-mail :- [email protected] । E-mail :- [email protected] মোবাইল- +৮৮০১৭১৩-৬৩৬৬৬১ । বার্তা বিভাগ :- +০১৭১৬-৯৮০০৮৮ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত NewsBijoy24.Com - Popular Online Newspaper of Bangladesh.