প্রায় ১০ বছর ধরে ঈদ এলেই টাঙ্গাইলের কালিহাতী-ঘাটাইল উপজেলার বীরবাসিন্দা-ভোজদত্ত দাখিল মাদরাসার ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি রেখেছে প্রশাসন। এ কারণে ছয়টি গ্রামের মানুষ ঈদের নামাজ আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের বাসিন্দাদের বিরোধের জেরে এক ব্যক্তি খুন হওয়ায় ১০ বছর ধরে এ ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করে রাখা হয়েছে। এবারও ঈদের দিন ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে প্রশাসন।বীরবাসিন্দা-ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠে আধিপত্য নিয়ে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ভোজদত্ত, নারাঙ্গাইল, বাগোলের পাড়া, চদুলী পাড়া ও ডালুয়াবাড়ি এবং পার্শ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ২০১২ সালে বিরোধের সৃষ্টি হয়। বিরোধ নিরসনের জন্য ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর দুই উপজেলার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উপস্থিতিতে এক বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বীরবাসিন্দা গ্রামের আবদুল গফুর নামে এক ব্যক্তি আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। এরপর যে কোনো সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় ওই বছরের ২৬ নভেম্বর ঈদুল আজহার দিন জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠ ও এর আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
এ ঘটনার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় গত ১০ বছর ধরে প্রতি বছরই দুই ঈদে ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠে জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে ১৪৪ ধারা জারি করে আসছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এবারও একই নির্দেশনা বজায় রাখার নির্দেশনা চেয়ে চিঠি দেয় উপজেলা প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (০১ মে) অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল হাশেম স্বাক্ষরিক এক চিঠিতে ঈদুল ফিতরের দিন বীরবাসিন্দা-ভোজদত্ত দাখিল মাদরাসার ঈদগাহ মাঠে ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪ ধারার আদেশ জারি করেন। তবে এলকাবাসীর দাবি, আগের মতোই শতশত মুসল্লিকে নিয়ে একসঙ্গেই ঈদের নামাজ আদায় করতে চান তারা। বর্তমানে তারা ঈদের দিন বিভিন্ন মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন। তারা মনে করেন, ভবিষ্যতে আর ১৪৪ ধারা জারি না করে সবাই মিলেমিশে যাতে এ ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা শাহআলম জানান, ২০১২ সালের ঘটনার পরের বছর তিনি ওই ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজে ইমামতি করেছেন। তখন তিনি মনে করেছিলেন যে প্রতিবছরই শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু পরে দীর্ঘ নয় বছর ধরে ঈদ এলেই ওই মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তবে তিনিও চান সবাই মিলেমিশে এ ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করুক।ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিয়া চৌধুরী জানান, আগামী ঈদুল ফিতরের নামাজেও এ মাঠে ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
নিউজ বিজয়/নজরুল
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
E-mail :- [email protected] । E-mail :- [email protected] মোবাইল- +৮৮০১৭১৩-৬৩৬৬৬১ । বার্তা বিভাগ :- +০১৭১৬-৯৮০০৮৮ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত NewsBijoy24.Com - Popular Online Newspaper of Bangladesh.