ঢাকা ০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬ দেশে খাদ্যাভাবে মারা যেতে পারে সাড়ে ৭ লাখ মানুষ!

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্বের ২০ দেশে ভয়ংকর খাদ্যভাব (দুর্ভিক্ষ) দেখা দেবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ৬ জুন সোমবার বিশ্ব খাদ্য সংস্থার গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী ইথিয়োপিয়া, নাইজেরিয়া, সাউথ সুদান, ইয়েমেনে সবচেয়ে বেশী খাদ্য সংকটের আশংকা করা হয়েছে। এ তালিকায় আফগানিস্তান এবং সোমালিয়াও রয়েছে।
গত জানুয়ারির তালিকায় এ দুটি দেশ ছিল না। এ ৬ দেশে খাদ্য সংকটে সাড়ে ৭ লাখ মানুষের মৃত্যুর আশংকাও করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশী মৃত্যু হতে পারে দাঙ্গা-সংঘাতে লিপ্ত ইথিয়োপিয়ায়। সে সংখ্যা ৪ লাখ। ২০১১ সালে সোমালিয়ায় সৃষ্ট খাদ্যাভাবের চেয়েও ইথিয়োপিয়ায় ভয়ংকর অবস্থা দেখা দিতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কঙ্গো, হাইতি, সাহেল, সুদান এবং সিরিয়ার অবস্থাও খারাপ হতে পারে। মহামারির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে এসব দেশ। এ তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কেনিয়া। এঙ্গোলা, লেবানন, মাদাগাস্কার এবং মোজাম্বিকের সাথে শ্রীলংকা, বেনিন, কাবো ভার্ডে, জিম্বাবুয়ে, গীনি এবং ইউক্রেনও যুক্ত হয়েছে চরম খাদ্যাভাবে পড়ার আশংকার তালিকায়। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মহাপরিচালক কু ডঙ্গু এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন, ২০১১ এবং ২০০৭-২০০৮ সালে আরব স্প্রীংয়ের কারণে ৪৮ দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, গৃহদাঙ্গা এবং লাগাতার বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছিল। সে সময়ের খাদ্য-সংকটের চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে বর্তমানের ইউক্রেন যুদ্ধজনিত কারণে।
জাতিসংঘ সংস্থাসমূহের উপরোক্ত গবেষণা জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য এবং জ্বালানীর মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির জন্যে ইউক্রেন যুদ্ধকেই এককভাবে দায়ী করা হচ্ছে। এরফলে করোনায় অর্থনৈতিক সেক্টরের টালমাটাল অবস্থাকে ত্বরান্বিত করছে। আর এমন পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে গ্রাস করছে গোটাবিশ্বকেই। ‘খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার আলোকে হাঙ্গার হটস্পটস-ফাও-ডব্লিউএফপির আগাম সতর্কতা’ শীর্ষক জাতিসংঘের এ হুশিয়ারিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, এক্ষুণি যদি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হই-তাহলে নিদারুন একটি পরিস্থিতিতে নিপতিত হবে বিশ্ব মানবতা। মানবিকতার স্বার্থে যতটা দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঢেউ, করোনা মহামারি, দেনার দায় এবং সবশেষে ইউক্রেন যুদ্ধজনিত কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। খরা, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক দেশেই খাদ্য উৎপাদন কমেছে। অথবা উৎপাদিত খাদ্য-শস্য মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এসব বিষয়ে দৃষ্টিপাতের আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, ‘আমরা খাদ্য ঘাটতি, আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। এমনি অবস্থায় মানুষের খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষমতাকে হ্রাস করায় কোটি কোটি মানুষকে অভাব-অনাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। খাদ্য-নিরাপত্তাহীনতা চরমে উঠার আশংকা করা হচ্ছে। এমন একটি সংকট থেকে উত্তরণে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী-যাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয় এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ অত্রিক্রম করা যায়। বিশ্বখাদ্য সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিজলী গভীর উদ্বেগের সাথে উল্লেখ করেছেন, ডুবন্ত মানুষেরা নাক পানির ওপরে ভাসিয়ে বাঁচার প্রানান্ত চেষ্টায় আছেন। সে মানুষগুলোকে রক্ষার্থে আমরা অবিশ্বাস্য রকমের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। গরিবের চেয়ে গরিবদেরই শুধু নয়, এমন নাজুক অবস্থা অন্যদেরকেও গ্রাস করতে পারে।
নিউজ বিজয়/নজরুল

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

এবার রাষ্ট্রপতির অপসারণ চাইলেন সারজিস আলম

৬ দেশে খাদ্যাভাবে মারা যেতে পারে সাড়ে ৭ লাখ মানুষ!

প্রকাশিত সময় :- ০৫:১৮:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০২২

ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্বের ২০ দেশে ভয়ংকর খাদ্যভাব (দুর্ভিক্ষ) দেখা দেবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ৬ জুন সোমবার বিশ্ব খাদ্য সংস্থার গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী ইথিয়োপিয়া, নাইজেরিয়া, সাউথ সুদান, ইয়েমেনে সবচেয়ে বেশী খাদ্য সংকটের আশংকা করা হয়েছে। এ তালিকায় আফগানিস্তান এবং সোমালিয়াও রয়েছে।
গত জানুয়ারির তালিকায় এ দুটি দেশ ছিল না। এ ৬ দেশে খাদ্য সংকটে সাড়ে ৭ লাখ মানুষের মৃত্যুর আশংকাও করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশী মৃত্যু হতে পারে দাঙ্গা-সংঘাতে লিপ্ত ইথিয়োপিয়ায়। সে সংখ্যা ৪ লাখ। ২০১১ সালে সোমালিয়ায় সৃষ্ট খাদ্যাভাবের চেয়েও ইথিয়োপিয়ায় ভয়ংকর অবস্থা দেখা দিতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কঙ্গো, হাইতি, সাহেল, সুদান এবং সিরিয়ার অবস্থাও খারাপ হতে পারে। মহামারির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে এসব দেশ। এ তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কেনিয়া। এঙ্গোলা, লেবানন, মাদাগাস্কার এবং মোজাম্বিকের সাথে শ্রীলংকা, বেনিন, কাবো ভার্ডে, জিম্বাবুয়ে, গীনি এবং ইউক্রেনও যুক্ত হয়েছে চরম খাদ্যাভাবে পড়ার আশংকার তালিকায়। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মহাপরিচালক কু ডঙ্গু এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন, ২০১১ এবং ২০০৭-২০০৮ সালে আরব স্প্রীংয়ের কারণে ৪৮ দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, গৃহদাঙ্গা এবং লাগাতার বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছিল। সে সময়ের খাদ্য-সংকটের চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে বর্তমানের ইউক্রেন যুদ্ধজনিত কারণে।
জাতিসংঘ সংস্থাসমূহের উপরোক্ত গবেষণা জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য এবং জ্বালানীর মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির জন্যে ইউক্রেন যুদ্ধকেই এককভাবে দায়ী করা হচ্ছে। এরফলে করোনায় অর্থনৈতিক সেক্টরের টালমাটাল অবস্থাকে ত্বরান্বিত করছে। আর এমন পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে গ্রাস করছে গোটাবিশ্বকেই। ‘খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার আলোকে হাঙ্গার হটস্পটস-ফাও-ডব্লিউএফপির আগাম সতর্কতা’ শীর্ষক জাতিসংঘের এ হুশিয়ারিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, এক্ষুণি যদি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হই-তাহলে নিদারুন একটি পরিস্থিতিতে নিপতিত হবে বিশ্ব মানবতা। মানবিকতার স্বার্থে যতটা দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঢেউ, করোনা মহামারি, দেনার দায় এবং সবশেষে ইউক্রেন যুদ্ধজনিত কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। খরা, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক দেশেই খাদ্য উৎপাদন কমেছে। অথবা উৎপাদিত খাদ্য-শস্য মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এসব বিষয়ে দৃষ্টিপাতের আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, ‘আমরা খাদ্য ঘাটতি, আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছি। এমনি অবস্থায় মানুষের খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের ক্ষমতাকে হ্রাস করায় কোটি কোটি মানুষকে অভাব-অনাহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। খাদ্য-নিরাপত্তাহীনতা চরমে উঠার আশংকা করা হচ্ছে। এমন একটি সংকট থেকে উত্তরণে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী-যাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয় এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ অত্রিক্রম করা যায়। বিশ্বখাদ্য সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিজলী গভীর উদ্বেগের সাথে উল্লেখ করেছেন, ডুবন্ত মানুষেরা নাক পানির ওপরে ভাসিয়ে বাঁচার প্রানান্ত চেষ্টায় আছেন। সে মানুষগুলোকে রক্ষার্থে আমরা অবিশ্বাস্য রকমের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। গরিবের চেয়ে গরিবদেরই শুধু নয়, এমন নাজুক অবস্থা অন্যদেরকেও গ্রাস করতে পারে।
নিউজ বিজয়/নজরুল