ঢাকা ০২:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হারাগাছে টাইলস শ্রমিকের মৃত্যু: পুলিশ-চিকিৎসকের ভিন্ন বক্তব্য

 
   NewsBijoy24.Com সর্বশেষ খবর পেতে টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে নয়ন চন্দ্র (২৩) নামে এক টাইলস শ্রমিক মারা গেছে। বুধবার দুপুরে পীরগাছা উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্বশ্বানে তার সৎকার করা হয়। তবে ওই যুবকের মৃত্যু নিয়ে পুলিশ ও চিকিৎসকের ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ওই যুবক কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে পৌরসভার হাজিরপাড়া গ্রামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বসতবাড়িতে টাইলসের কাজ করার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে হারাগাছ ৩১ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। নয়ন চন্দ্র পীরগাছা উপজেলার অনন্তরাম বসশ্যপাড়া গ্রামের নির্মল চন্দ্র রায়ের ছেলে।
হাসপাতালের চিকিৎসকের ভাষ্য, ওই যুবক শারীরিক লক্ষণ অনুযায়ী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সে মারা গেছেন। তবে শ্রমিক ও পুলিশের ভাষ্য মতে, গরমে হিটস্ট্রোকে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
হারাগাছ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল মোহন্ত জানান, নয়ন চন্দ্রসহ চারজনের একটি টিম গত কয়েকদিন ধরে হারাগাছ পৌর এলাকার হাজিরপাড়া গ্রামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বসতবাড়িতে টাইলস শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছিলেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে তিনি (নয়ন চন্দ্র) বাথরুমের দরজা বন্ধ করে ভেতরে একাই টাইলস ফিটিংয়ের কাজ করেন। এসময় টিমের অন্য শ্রমিকরা পাশের ঘরে কাজ করছিলেন। দীর্ঘক্ষণ নয়ন চন্দ্রের সারা না পেয়ে অন্য শ্রমিকরা ডাকাডাকির পর দরজা ভেঙে বাথরুমের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করে হারাগাছ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। পরে ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হারাগাছ থানা পুলিশে অবগত করেন। খবর পেয়ে মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
ওই বাড়িতে টাইলস ফিটিংয়ের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ভাষ্য মতে, নয়ন চন্দ্র অতিরিক্ত গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে পুলিশকে তারা জানায়।
তবে হারাগাছ ৩১ শয্যা হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহানুর রহমান জানান, মঙ্গলবার দুপুর প্রায় পৌনে দুইটার দিকে কয়েকজন শ্রমিক নয়ন চন্দ্র নামে এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসাপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা যান। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহানুর রহমান আরও বলেন, নিহত নয়ন চন্দ্রের বাম হাতের মুঠো শক্ত এবং ওই হাতের ছোট আঙ্গুলে জখম ছিল। ডান হাত ও দুই পা এবং শরীর স্বাভাবিক ছিল। কোথাও জখম ছিল না। যদি শরীরের কোন স্থান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় তাহলে সেই স্থান শক্ত হবে। নয়ন চন্দ্রের বামের হাতের মুঠো শক্তের লক্ষণ অনুযায়ী বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।তবে হাসপাতালে আসা শ্রমিকরা ওই যুবকের মৃত্যুর সঠিক কারণ বলতে পারেননি।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, ওই যুবকের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে প্রচন্ড তাপদাহ বিরাজ করছিল। স্থানীয়রা, শ্রমিক এবং নিহতের পরিবারের ধারণা, প্রচন্ড গরমে হিটস্ট্রোক করে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তবে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নয়, যে ঘরে ওই যুবক টাইলস ফিটিংয়ের কাজ করছিলেন, সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ ছিল না।
ওসি রেজাউল করিম বলেন, ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের মুচলেখা নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই রাতেই লাশ হস্তন্তর করা হয়। তবে এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
পীরগাছা উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান বলেন, নিহত ওই যুবকের বাড়ী তার এলাকায়। মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি নিজেই মঙ্গলবার রাতে হারাগাছ থানায় গিয়েছিলেন। প্রচন্ড গরমে নাকি ওই যুবকের মত্যু হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। গতকাল বুধবার ওই যুবকের মরদেহ পীরগাছা উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্বশ্বানে সৎকার করেছে পরিবারের লোকজন।

নিউজবিজয়/এফএইচএন

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার আর নেই

হারাগাছে টাইলস শ্রমিকের মৃত্যু: পুলিশ-চিকিৎসকের ভিন্ন বক্তব্য

প্রকাশিত সময় :- ০৯:৫০:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জুন ২০২২
 
   NewsBijoy24.Com সর্বশেষ খবর পেতে টেলিগ্রাম চ্যানেল জয়েন করুন।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে নয়ন চন্দ্র (২৩) নামে এক টাইলস শ্রমিক মারা গেছে। বুধবার দুপুরে পীরগাছা উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্বশ্বানে তার সৎকার করা হয়। তবে ওই যুবকের মৃত্যু নিয়ে পুলিশ ও চিকিৎসকের ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ওই যুবক কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে পৌরসভার হাজিরপাড়া গ্রামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বসতবাড়িতে টাইলসের কাজ করার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে হারাগাছ ৩১ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। নয়ন চন্দ্র পীরগাছা উপজেলার অনন্তরাম বসশ্যপাড়া গ্রামের নির্মল চন্দ্র রায়ের ছেলে।
হাসপাতালের চিকিৎসকের ভাষ্য, ওই যুবক শারীরিক লক্ষণ অনুযায়ী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সে মারা গেছেন। তবে শ্রমিক ও পুলিশের ভাষ্য মতে, গরমে হিটস্ট্রোকে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
হারাগাছ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল মোহন্ত জানান, নয়ন চন্দ্রসহ চারজনের একটি টিম গত কয়েকদিন ধরে হারাগাছ পৌর এলাকার হাজিরপাড়া গ্রামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বসতবাড়িতে টাইলস শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছিলেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে তিনি (নয়ন চন্দ্র) বাথরুমের দরজা বন্ধ করে ভেতরে একাই টাইলস ফিটিংয়ের কাজ করেন। এসময় টিমের অন্য শ্রমিকরা পাশের ঘরে কাজ করছিলেন। দীর্ঘক্ষণ নয়ন চন্দ্রের সারা না পেয়ে অন্য শ্রমিকরা ডাকাডাকির পর দরজা ভেঙে বাথরুমের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করে হারাগাছ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। পরে ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হারাগাছ থানা পুলিশে অবগত করেন। খবর পেয়ে মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
ওই বাড়িতে টাইলস ফিটিংয়ের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ভাষ্য মতে, নয়ন চন্দ্র অতিরিক্ত গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে পুলিশকে তারা জানায়।
তবে হারাগাছ ৩১ শয্যা হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহানুর রহমান জানান, মঙ্গলবার দুপুর প্রায় পৌনে দুইটার দিকে কয়েকজন শ্রমিক নয়ন চন্দ্র নামে এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসাপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা যান। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোহানুর রহমান আরও বলেন, নিহত নয়ন চন্দ্রের বাম হাতের মুঠো শক্ত এবং ওই হাতের ছোট আঙ্গুলে জখম ছিল। ডান হাত ও দুই পা এবং শরীর স্বাভাবিক ছিল। কোথাও জখম ছিল না। যদি শরীরের কোন স্থান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় তাহলে সেই স্থান শক্ত হবে। নয়ন চন্দ্রের বামের হাতের মুঠো শক্তের লক্ষণ অনুযায়ী বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।তবে হাসপাতালে আসা শ্রমিকরা ওই যুবকের মৃত্যুর সঠিক কারণ বলতে পারেননি।
এ ব্যাপারে রংপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, ওই যুবকের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মঙ্গলবার দুপুরে প্রচন্ড তাপদাহ বিরাজ করছিল। স্থানীয়রা, শ্রমিক এবং নিহতের পরিবারের ধারণা, প্রচন্ড গরমে হিটস্ট্রোক করে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তবে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নয়, যে ঘরে ওই যুবক টাইলস ফিটিংয়ের কাজ করছিলেন, সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ ছিল না।
ওসি রেজাউল করিম বলেন, ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের মুচলেখা নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই রাতেই লাশ হস্তন্তর করা হয়। তবে এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
পীরগাছা উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান বলেন, নিহত ওই যুবকের বাড়ী তার এলাকায়। মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি নিজেই মঙ্গলবার রাতে হারাগাছ থানায় গিয়েছিলেন। প্রচন্ড গরমে নাকি ওই যুবকের মত্যু হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। গতকাল বুধবার ওই যুবকের মরদেহ পীরগাছা উপজেলার কেন্দ্রীয় শ্বশ্বানে সৎকার করেছে পরিবারের লোকজন।

নিউজবিজয়/এফএইচএন