লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় বিয়ের প্রলোভনে মুসলিম তরুণীকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগে বিদ্যুৎ চন্দ্র (২০) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (১৬ জুলাই) সকালে আটক বিদ্যুৎ চন্দ্রকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল রাতে উপজেলার পুর্ব সিন্দুর্না এলাকা থেকে বিদ্যুৎ চন্দ্রকে আটক করে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী।
বিদ্যুৎ চন্দ্র ঐ এলাকার বিমল চন্দ্রের ছেলে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করার সুবাদে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার এক তরুণীর সাথে ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিদ্যুৎ চন্দ্র। এরপর বিদ্যুৎ ঐ মেয়েটিকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। পরে মেয়েটি বিদ্যুতের ধর্মীয় পরিচয় পাওয়ার পর তার সাথে সম্পর্ক ছিন্নকরার চেষ্টা করলে বিদ্যুৎ মুসলিম হয়ে তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিলে মেয়েটি পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়।
একমাস আগে বিদ্যুৎ চন্দ্র মুসলিম হয়ে বিয়ে করার জন্য মেয়েটিকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে একই সাথে বসবাস করা শুরু করে। এরপর মেয়েটি তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিলে বিদ্যুৎ চন্দ্র উল্টো মেয়েটিকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হবার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং মেয়েটিকে প্রতি রাতে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটিকে জোরপূর্বক শাঁখা সিঁদুর পড়াতে গেলে বাধ সাধে মেয়েটি। এনিয়ে উভয়ের মাঝে বাকবিতন্ডা শুরু হলে বিষয়টি এলাকাবাসী জেনে যায়।
ফলে উভয়কে ডেকে স্থানীয় আমিনুর মেম্বারের বাড়ির উঠানে বসে বিস্তারিত শুনেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তারা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করতে না পেরে ছেলে মেয়ে উভয়কে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে থানায় দেয়। পরে ঐ দিন রাতে মুসলিম মেয়েটি বাদী হয়ে থানায় বিদ্যুৎ চন্দ্র এর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ দেয়।
এবিষয়ে সিন্দুর্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, বিষয়টি শোনার পর আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে সবকিছু শুনে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে তাদের থানা পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয়।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক বিদ্যুতের বিরুদ্ধে মেয়েটি বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা করেছে। বিদ্যুৎ চন্দ্রকে আজ সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং মেয়েটির কোন অবিভাবক না থাকায় তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।