লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় অবস্থিত হাতীবান্ধা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে সিজারের পর নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগ ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা শহরে অবস্থিত হাতীবান্ধা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে সিজারের সময় মাথায় আঘাত পাওয়ায় তড়িঘরি করে নবজাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে শিশুটির মৃত্যু হয়।
জেলার পাটগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট এলাকার নাজমুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা বেগমের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা এলাকায় বাবার বাড়িতে প্রসব ব্যাথা শুরু হলে প্রথমে বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাতীবান্ধা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে নিয়ে আসা হয়। পরে পরীক্ষা নীরিক্ষা শেষে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে সিজারে একটি পুত্র সন্তান জন্মলাভ করেন। সিজারের পর নবজাতকের মাথায় আঘাত জনিত কারণে অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষনিক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথিমধ্যে নবজাতকের মৃত্যু হয়।
নবজাতকের খালা মর্জিনা বেগম জানান, সোমবার রাতে প্রসব ব্যাথা শুরু হলে প্রথমে বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে ভালো চিকিৎসার জন্য রোগীকে হাতীবান্ধা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সিজার করার পর নবজাতকের মাথায় আঘাত পাওয়ায় অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষনিক রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হলে পথিমধ্যে শিশুটির মৃত্যু হয়।
হাতীবান্ধা ক্লিনিকের ডা: রামিম হাসানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, রোগীর পরিবারের চাপাচাপির কারনে সিজার করার সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। তিনি আরও জানান রোগী ও নবজাতকের অবস্থা ভালো ছিলনা। তবে ওই নবজাতকের মৃত্যুর দায়ভার তিনি নিতে রাজি হননি।
স্থানীয় লোকজন জানান, হাতীবান্ধা শহরে বেশ কয়েকটি নামে বেনামে ক্লিনিক ও প্যাথলজি গড়ে উঠেছে। এসব ক্লিনিক ও প্যাথলজিতে নিয়মনীতির তোয়াক্তা না করে হাতুড়ি চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। ওইসব ক্লিনিকে নবজাতকের তাৎক্ষনিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার মত তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। তবে ব্যবসা করার জন্য ঝুঁকি নিয়ে সিজারের মত অপারেশন গুলো করে থাকেন। ফলে প্রায় সময় চিকিৎসকদের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে প্রতিনিয়ত নবজাতক ও রোগীর মৃত্যু ঘটনা ঘটছে।
হাতীবান্ধা ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু বলেন, রোগী ও নবজাতকের অবস্থা ভালো ছিলেনা। তাদের পরিবারের অনুরোধে সিজার করা হয়েছে। তবে আমাদের বিরুদ্ধে পরিবারের কোন অভিযোগ নেই।
হাতীবান্ধা উপজেলার স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার আনোয়ারুল হক বলেন, বিষয়টি শুনেছি, খোঁজ খবর নিয়ে তদন্ত করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন