সূর্যের বুকে উঠেছে প্রলয়ঙ্করী সৌরঝড়। এর প্রভাব পড়তে চলেছে পৃথিবীর বুকে। বন্ধ হতে পারে ইন্টারনেট পরিষেবা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী দুই বছরে এ ঝড়ের তীব্রতা আরো বাড়বে। কারণ সৌরচক্রের সবচেয়ে কঠিন সময়টি আসতে চলেছে।
২০২৫ সালে ‘সোলার ম্যাক্সিমাম’ পর্বে পা রাখবে সূর্য। ১১ বছরের সৌরচক্রের এই সময়টিতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে সূর্যপৃষ্ঠ। ২০২৪ থেকেই ঝড়ের প্রকোপ টের পাওয়া যাবে।
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ঝড়ের দাপটে বেশ ভুগতে হবে সৌর পরিবারের অধিবাসী পৃথিবীকে। সম্পূর্ণ ভেঙে পড়তে পারে ডিজিটাল পৃথিবী ও তার আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা! কারণ ইন্টারনেট ছাড়া এখন অচল এই পৃথিবী।
মহাকাশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌরঝড়ের তাণ্ডবে সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়তে পারে ইন্টারনেট পরিষেবা। আরও দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, আসন্ন বিপদের জন্য কেউ তৈরি নয়।
ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে একজোড়া শব্দ- ‘ইন্টারনেট অ্যাপোক্যালিপস।’ ভুয়ো খবর যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য নেটিজেনদের সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
২০২৫ সালে সৌরঝড়ের তাণ্ডবে সত্যিই ইন্টারনেট ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে কি না, তা নিয়ে তারা মন্তব্য করেনি। বরং ‘গুজব’ আটকানোয় জোর দিয়েছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞানীরা না চাইলেই বা কী! লোক মুখে ছড়িয়ে পড়েছে ‘বিপদ-বার্তা।’
পুরো পৃথিবী এখন নেটনির্ভর। এর মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন চলছে বিশ্বজুড়ে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, বিষয়টা কি সত্যি, নাকি পুরোটাই ‘হাইপ?’
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিকগুলোতে লেখা হয়েছে, ‘পুরোটা কাল্পনিক নয়।’
সত্যিই একটি প্রকাণ্ড শক্তিশালী সৌরঝড় আসতে চলেছে। তাতে ইন্টারনেট ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি দৈনিকের রিপোর্টে পুরোনো ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- ১৮৫৯ সালের ‘ক্যারিংটন ইভেন্ট।’ টেলিগ্রাফের তারে আগুন ধরে গিয়েছিল। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অপারেটররা মারা যান। সৌরঝড়ের জেরে কিউবেক দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল।
ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপিকা সঙ্গীতা আব্দু জ্যোতি বলেন, ‘সাম্প্রতিককালে প্রকাণ্ড সৌরঝড় আমরা দেখিনি। ফলে আমরা জানি না, পরিকাঠামোতে ঠিক কী প্রভাব পড়বে।’
তার প্রকাশিত রিপোর্ট ‘সোলার সুপারস্টর্ম : প্ল্যানিং ফর অ্যান ইন্টারনেট অ্যাপোক্যালিপস’ থেকেই শেষ দুই শব্দযুগল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
জ্যোতির বক্তব্য, ঝড়ের তাণ্ডবে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে যাওয়া কেবল। কয়েক মাস ধরে চলতে পারে এই ‘বিপর্যয়।’
সূত্র: টাইমস নাউ নিউজ