মাগুরার শালিখা উপজেলা সদরের আড়পাড়ায় সিলগালা করে দেওয়া অবৈধ ক্লিনিকে নার্সের অপারেশনে নির্জনা খাতুন (১৩) নামে এক কিশোরী মারা গেছেন।
নির্জনা শালিখার পুকুরিয়া গ্রামের নাজমুল মোল্যার মেয়ে। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
রোববার (৫ জুন) বিকালে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ক্লিনিক মালিকের স্ত্রী ও মাগুরা সদর হাসপাতালের স্টাফ নার্স করিমুন্নেছাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পালিয়ে গেছেন ঘটনায় জড়িত থাকা করিমুন্নেছার স্বামী বাচ্চু মিয়া ।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে চালিয়ে আসা আল হেরা প্রাইভেট হাসপাতাল নামের ক্লিনিকটি গত ২৯ মে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান। কিন্তু তা অমান্য করে করিমুন্নেছা তার স্বামী বাচ্চু মিয়ার সহায়তায় গোপনে ওই ক্লিনিকে রোগী ভর্তি ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
নিহতের চাচা ডাবলু মোল্যা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার (৪ জুন) পেটে ব্যথা নিয়ে নির্জনা ক্লিনিকে ভর্তি হয়। রোববার (৫ জুন) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন করেন নার্স করিমুন্নেছা। দুপুরে মেয়েটি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে দ্রুত যশোরে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি নার্স করিমুন্নেছার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
ঘটনা জানতে পেরে দুপুরে মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান, শালিখা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ ডা. আবজাল হোসেন ও শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে নার্স করিমুন্নেছাকে গ্রেপ্তার করে।
তবে নার্স নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, যশোর থেকে আসা একজন চিকিৎসক মেয়েটির অপারেশন করে এবং তিনি তাকে সহায়তা করেছেন। কিন্তু তিনি যশোরের ওই চিকিৎসকের নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারেননি।
মাগুরার সিভিল সার্জন বলেন, করিমুন্নেছা নিজে যদি অপারেশন করে থাকেন তাও অপরাধ আবার একজন সরকারি কর্মচারি হয়ে যদি কোন ডাক্তারকে প্রাইভেট ক্লিনিকে সহায়তা করেন সেটিও অপরাধ। আমরা তার বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলাম জানান, নার্স কারিমুন্নেছাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।