ভারতের হিমালয়ার ছোট রাজ্য সিকিমে ব্যাপক বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় ৬ সেনা সদস্যসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বন্যায় নিখোঁজ রয়েছে বহু মানুষ।এতে অন্তত তিন হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। রাজ্যটির প্রায় ২২ হাজার মানুষের জীবন ক্ষতির মুখে ফেলেছে এই বন্যা।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা রয়টার্স, এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনো ১৬ জন সেনাসহ ৭০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। সেনাবাহিনী ও ভারত তিব্বত সীমা পুলিশের অনেকগুলি ছাউনি, গাড়ি এবং বহু বসতবাড়ি নদীর পানিতে ভেসে গেছে। সেইসঙ্গে দুই হাজার ৫০০ পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির সরকারি একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইতিমধ্যে অন্তত ১৪টি ব্রিজ ধসে গেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সিকিমের বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া পর্যটকদের হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সিকিমের তিস্তা নদীতে এমন ভয়াবহ পানির তোড় আর ধ্বংসলীলা তারা কখনও দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না।
সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনাক হ্রদের ওপরে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয় গত মঙ্গলবার ও বুধবার মাঝরাতের পরে। তার সঙ্গে গত কয়েকদিনের একটানা বৃষ্টিপাতও ছিল। লোনাক হ্রদের ওপর ওই মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে তিস্তায় পানির পরিমাণ হঠাৎই খুব বেড়ে যাওয়ায় চুংথাম বাঁধ খুলে দিতে হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাঁধটির কয়েকটি জায়গা ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে।
দেশটির জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানাচ্ছে, কয়েকজন ট্রেকার, সেনা এবং ভারত-তিব্বত সীমা পুলিশের কয়েকজন সদস্যও নিখোঁজ রয়েছেন।
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, এক ঘণ্টায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১০ সেন্টিমিটার অথবা আধঘণ্টায় পাঁচ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে সেটাকেই মেঘভাঙা বৃষ্টি বা ক্লাউড বার্স্ট বলা হয়। মূলত সেই বৃষ্টিপাতের পর পার্বত্য সিকিম রাজ্যের লোনাক হ্রদ বুধবার উপচে পড়ে এবং এর ফলে বড় বন্যা দেখা দেয়।
এদিকে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত ভারতের সিকিম রাজ্য বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রবল বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যের যোগাযোগব্যবস্থা। এই অবস্থায় রাজ্যটিতে ভ্রমণ স্থগিত করতে পর্যটকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাংয়ের সরকার।