নাটোর: নাটোরের সিংড়ায় নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ব্যবহৃত গাড়ির চাপায় সোহেল আহমেদ জীবন (৩৫) নামে এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সোমবার (০৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের নিঙ্গইন এলাকায় পেট্রোল পাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল আহমেদ পৌর শহরের বালুয়া বাসুয়া মহল্লার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। কর্মজীবনে তিনি আগপাড়া শেরকোল বন্দর উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক এবং বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুরন্ত সংবাদের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি সিংড়া প্রেসক্লাবের সদস্য, পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সহ-সভাপতি, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হাইওয়ে পুলিশের ঝলমলিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. রেজওয়ানুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সোহেল আহমেদ জীবন মোটরসাইকেল নিয়ে তার কর্মস্থল আগপাড়া শেরকোল বন্দর উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের নিঙ্গুইন এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়িটি মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। মোটরসাইলেটি গাড়ির নিচে ঢুকে যায়। এতে গুরুতর আহত হন সাংবাদিক সোহেল আহমেদ জীবন। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে মানসী দত্ত অন্য একটি গাড়িতে চলে যান। এ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে গাড়ি দুটি উদ্ধার করে। পরে নলডাঙ্গা ইউএনও সুখময় সরকার ও সিংড়া উপজেলা ইউএনও মো. সামিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, নলডাঙ্গার ইউএনওর স্ত্রী মানসী দত্ত মৌমিতা সিংড়া গোল ই আফরোজ সরকারি কলেজের প্রভাষক। স্বামীর সরকারি জিপ ব্যবহার করে তিনি নিয়মিত তার কর্মস্থলে যাতায়াত করে থাকেন।তবে নলডাঙ্গা ইউএনও সুখময় সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দুর্ঘটনার সময় ওই গাড়িতে তার স্ত্রী ছিলেন না। আজকে তেল নেওয়ার জন্য সিংড়ার ওই পেট্রোল পাম্পে তার ব্যবহৃত গাড়িটি পাঠানো হয়েছিল। সেখানে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গাড়িটি। আগেও কয়েকবার সেখান থেকে তেল সংগ্রহ করা হয়েছিল। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নলডাঙ্গাতে পেট্রোল পাম্প থাকলেও অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। সেজন্য সময়মত তেল পাওয়া যায় না বলেই সিংড়ার ওই পাম্প থেকে তেল নেওয়া হয়। সিংড়ার ইউএনও এম এম সামিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ওই সাংবাদিকের চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম। তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পরিবারকে সহযোগিতা করার কথা জানান তিনি।
নিউজ বিজয়/নজরুল