দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে নানা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা। দফায় দফায় কর্মসূচি ঘোষণা করে কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। অবশেষে তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ। একইসঙ্গে দেশের সব কারাখানা খোলা রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত বৈঠকে শ্রমিকদের ১৮ দাবি মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে সারাদেশের সব শিল্পকারখানা খোলা রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রমিকপক্ষ এবং মালিকপক্ষের বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিউজ্জামান।
এর আগে গতকাল সোমবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সরকারের কাছে ১৮টি দাবি উত্থাপন করে শ্রমিক পক্ষ। তাদের দাবিগুলো হলো-
১. মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনপূর্বক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে
২. যে সব কারখানায় ২০২৩ সালে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে
৩. শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে
৪. কোনো শ্রমিকের চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে/চাকরিচ্যুত হলে একটি বেসিকের সমান অর্থ প্রদান করতে হবে, এর সাথে সাংঘর্ষিক শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্য ধারাসমূহ সংশোধন করতে হবে
৫. সব প্রকার বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে
৬. হাজিরা বোনাস (২২৫ টাকা), টিফিন বিল (৫০ টাকা), নাইট বিল (১০০ টাকা) সব কারখানায় সমান হারে বাড়াতে হবে
৭. সব কারখানায় প্রভিডেন্ড ফান্ড ব্যবস্থা চালু করতে হবে
৮. বেতনের বিপরীতে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ১০ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে
৯. শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে
১০. বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং করা যাবে না; বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
১১. সব প্রকার হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে
১২. ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইন করতে হবে
১৩. কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ প্রদান করতে হবে
১৪. জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে
১৫. রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশনস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে তদন্তান্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
১৬. শ্রম আইন অনুযায়ী সব কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে
১৭. অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে ও
১৮. নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করতে হবে।
নিউজবিজয়২৪ডট কম/এফএইচএন