ঢাকা ০৯:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ পরিবার বন্দনার দিন শেষ

শেখ পরিবার নিয়ে যত বেশি বন্দনা করা যায়, কূটনৈতিক বা প্রশাসনিক মহলে তত বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তেমনি শেখ মুজিবের স্ত্রী রেনুকে নিয়ে মরক্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশীদের বই লেখার অন্যতম কারণ ছিল ক্যারিয়ারে উন্নতি করা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার (১৫ মার্চ)
ভেরিফাইড এক ফেসবুক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পোস্টে প্রেস সচিব বলেন, একুশে বইমেলা ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩— এই তিন বছর ধরে বইমেলায় শেখ মুজিব ও শেখ পরিবার নিয়ে লেখা বইগুলো প্রায় সব স্টল দখল করে করেছিল। এটি ছিল নিজের আনুগত্য প্রকাশের সহজ উপায়। একইসঙ্গে এটি ছিল বড় অঙ্কের অর্থ আয়ের সুযোগ। বাংলাদেশে লেখকদের বই খুব একটা বিক্রি হয় না। কিন্তু কোনো সরকারি সংস্থা যদি আপনার বইয়ের হাজার হাজার কপি কিনে ফেলে, তাহলে তো লটারি লেগে যায়!

তিনি পোস্টে লেখেন, পতিত স্বৈরাচার যুগে অনেক লেখক ও প্রকাশক শেখ বন্দনার বই লিখে ও সরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে গিয়েছিলেন।

হারুন আল রশীদ নিজেকে জেমস জয়েস-পড়ুয়া, লিওপোল্ড ব্লুম-উপাসক সাহিত্যপ্রেমী হিসেবে জাহির করতে চান লিখে শফিকুল আলম লেখেন, বাস্তবে তিনি (হারুন আল রশীদ) লেখেন শেখ মুজিবের নিহত স্ত্রী রেনুকে নিয়ে। ইতিহাসের নিরপেক্ষ গবেষক বলবেন, রেনুর কোনো ঐতিহাসিক অবদান নেই। পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিব যখন কারাগারে ছিলেন, তখন বেগম মুজিব পরিবার সামলাতেন—ব্যস, এটাই তার ভূমিকা। কোনো স্মৃতিকথায় কখনোই তাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকায় দেখা যায়নি।

পোস্টে তিনি আরও লেখেন, তাহলে রেনুকে নিয়ে বই লেখার কারণ ছিল নিজ ক্যারিয়ার উন্নতি। কারণ শেখ পরিবার নিয়ে যত বেশি বন্দনা করা যায়, কূটনৈতিক বা প্রশাসনিক মহলে তত বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। হারুন আল রশীদ এটা খুব ভালোভাবেই জানতেন।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম কূটনীতিক হারুন আল রশীদের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা নিয়ে পোস্টে লেখেন, আগস্ট ১৫- এর পরবর্তী ঘটনাবলী সম্পর্কে তার বোঝাপড়া স্পষ্টভাবেই প্রমাণ করে যে, তার বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা একেবারেই শূন্য। তার বোধশক্তি কতটা ভোঁতা। একেবারে বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ, প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের ভেতর দেখা যাওয়া সেই স্বার্থান্বেষী, তোষামোদকারী চাটুকারদের মতোই।

তিনি পোস্টে আরও লেখেন, তার (হারুন আল রশীদ) মিথ্যাচারের অন্যতম কারণ ছিল কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের পথ সহজ করা। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে আমি এমন শত শত আশ্রয়প্রার্থী কাহিনি দেখেছি। ভুয়া ও সাজানো নির্যাতনের গল্প শুনিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। আর যদি এর সঙ্গে লিওপোল্ড ব্লুম ও ইউলিসিস উপন্যাস যোগ করা যায়, তবে তা আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

প্রেস সচিব শফিকুল ইসলামের পোস্ট দেখার পর নেটে সার্চ দিয়ে দেখা যায়, গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) নিজের ফেসবুকে ইংরেজিতে একটি পোস্ট করেছেন কূটনীতিক হারুন আল রশিদ। সেই পোস্টে নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারের গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছেন। বৈধ সরকারকে উৎখাত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা দখলের অভিযোগ করেছেন। তিনি বর্তমানে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চাচ্ছেন বলে জানাগেছে।

বিগত সরকারের সময়ে কানাডায় উপ হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালনের পর ২০তম বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা হারুনকে মরক্কোতে রাষ্ট্রদূত করা হয়। গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বিগত সরকারের সরকারের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন তিনি। পাশাপাশি শেখ পরিবার নিয়ে বই লিখেছেন এই কূটনীতিক।

AA
নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন :-

নিউজ বিজয়ের সম্পর্কে

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

এইচবিএল প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর: আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন অঙ্গীকার

শেখ পরিবার বন্দনার দিন শেষ

প্রকাশিত সময়:- ০৩:৪৫:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

শেখ পরিবার নিয়ে যত বেশি বন্দনা করা যায়, কূটনৈতিক বা প্রশাসনিক মহলে তত বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তেমনি শেখ মুজিবের স্ত্রী রেনুকে নিয়ে মরক্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশীদের বই লেখার অন্যতম কারণ ছিল ক্যারিয়ারে উন্নতি করা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার (১৫ মার্চ)
ভেরিফাইড এক ফেসবুক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পোস্টে প্রেস সচিব বলেন, একুশে বইমেলা ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩— এই তিন বছর ধরে বইমেলায় শেখ মুজিব ও শেখ পরিবার নিয়ে লেখা বইগুলো প্রায় সব স্টল দখল করে করেছিল। এটি ছিল নিজের আনুগত্য প্রকাশের সহজ উপায়। একইসঙ্গে এটি ছিল বড় অঙ্কের অর্থ আয়ের সুযোগ। বাংলাদেশে লেখকদের বই খুব একটা বিক্রি হয় না। কিন্তু কোনো সরকারি সংস্থা যদি আপনার বইয়ের হাজার হাজার কপি কিনে ফেলে, তাহলে তো লটারি লেগে যায়!

তিনি পোস্টে লেখেন, পতিত স্বৈরাচার যুগে অনেক লেখক ও প্রকাশক শেখ বন্দনার বই লিখে ও সরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে গিয়েছিলেন।

হারুন আল রশীদ নিজেকে জেমস জয়েস-পড়ুয়া, লিওপোল্ড ব্লুম-উপাসক সাহিত্যপ্রেমী হিসেবে জাহির করতে চান লিখে শফিকুল আলম লেখেন, বাস্তবে তিনি (হারুন আল রশীদ) লেখেন শেখ মুজিবের নিহত স্ত্রী রেনুকে নিয়ে। ইতিহাসের নিরপেক্ষ গবেষক বলবেন, রেনুর কোনো ঐতিহাসিক অবদান নেই। পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিব যখন কারাগারে ছিলেন, তখন বেগম মুজিব পরিবার সামলাতেন—ব্যস, এটাই তার ভূমিকা। কোনো স্মৃতিকথায় কখনোই তাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ভূমিকায় দেখা যায়নি।

পোস্টে তিনি আরও লেখেন, তাহলে রেনুকে নিয়ে বই লেখার কারণ ছিল নিজ ক্যারিয়ার উন্নতি। কারণ শেখ পরিবার নিয়ে যত বেশি বন্দনা করা যায়, কূটনৈতিক বা প্রশাসনিক মহলে তত বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। হারুন আল রশীদ এটা খুব ভালোভাবেই জানতেন।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম কূটনীতিক হারুন আল রশীদের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা নিয়ে পোস্টে লেখেন, আগস্ট ১৫- এর পরবর্তী ঘটনাবলী সম্পর্কে তার বোঝাপড়া স্পষ্টভাবেই প্রমাণ করে যে, তার বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা একেবারেই শূন্য। তার বোধশক্তি কতটা ভোঁতা। একেবারে বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ, প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের ভেতর দেখা যাওয়া সেই স্বার্থান্বেষী, তোষামোদকারী চাটুকারদের মতোই।

তিনি পোস্টে আরও লেখেন, তার (হারুন আল রশীদ) মিথ্যাচারের অন্যতম কারণ ছিল কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের পথ সহজ করা। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে আমি এমন শত শত আশ্রয়প্রার্থী কাহিনি দেখেছি। ভুয়া ও সাজানো নির্যাতনের গল্প শুনিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। আর যদি এর সঙ্গে লিওপোল্ড ব্লুম ও ইউলিসিস উপন্যাস যোগ করা যায়, তবে তা আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

প্রেস সচিব শফিকুল ইসলামের পোস্ট দেখার পর নেটে সার্চ দিয়ে দেখা যায়, গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) নিজের ফেসবুকে ইংরেজিতে একটি পোস্ট করেছেন কূটনীতিক হারুন আল রশিদ। সেই পোস্টে নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারের গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার অপচেষ্টা করেছেন। বৈধ সরকারকে উৎখাত করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা দখলের অভিযোগ করেছেন। তিনি বর্তমানে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চাচ্ছেন বলে জানাগেছে।

বিগত সরকারের সময়ে কানাডায় উপ হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালনের পর ২০তম বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা হারুনকে মরক্কোতে রাষ্ট্রদূত করা হয়। গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বিগত সরকারের সরকারের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন তিনি। পাশাপাশি শেখ পরিবার নিয়ে বই লিখেছেন এই কূটনীতিক।

AA
নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন