লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পরও দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আজ রোববার সংগঠনটির বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশজুড়ে হওয়া সর্বশেষ হামলায় আরও শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো সাড়ে তিন শতাধিক মানুষ।
লেবাননের রাজনৈতিক নেতারা ইমরায়েলি এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডকে “গণহত্যা” বলে উল্লেখ করেছেন। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অবিরাম হামলার কারণে আরও একটি রক্তাক্ত দিনের স্বাক্ষী হয়েছে লেবানন। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, নিরলস ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে সারাদেশে অন্তত ১০৫ জন নিহত এবং আরো ৩৫৯ জন আহত হয়েছেন।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণ সিডনের কাছে আইন আল-দেলবে একটি হামলায় দুটি আবাসিক ভবনকে সম্পূর্ণ গুড়িয়ে গেছে এবং এতে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ঘটনাস্থলে আশ্রয় নেওয়া অনেক বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।
লেবাননের বেশ কিছু রাজনীতিবিদ এই হামলাকে “গণহত্যা” বলে বর্ণনা করেছেন। যদিও ইসরায়েল বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। তবে লেবাননের কর্মকর্তারা বলেছেন, দক্ষিণ লেবানন, বেকা, বালবেক-হারমেল গভর্নরেট এবং বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে বাড়িঘরের পাশাপাশি অন্যান্য ভবনগুলোতে হামলা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বৈরুতসহ দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় হিজবুল্লাহ। গতকাল দক্ষিণ বৈরুতে ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত একটি ভবন থেকে নাসরুল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েল দাবি করেছে, নাসরুল্লাহকে হত্যায় চালানো হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ পর্যায়ের আরও ২০ নেতা নিহত হয়েছেন।
হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের শত্রুতা বেশ পুরোনো। ২০০৬ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়েছিল তারা। এরপর গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েল হামলা চালালে হামাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা হামলা চালাচ্ছিল ইসরায়েলও। তবে ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর হিজবুল্লাহর পেজার ও ওয়াকি–টকিতে হামলার পর থেকে লেবাননে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
নিউজবিজয়২৪ডট কম/এফএইচএন