ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটে কবিরাজ প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে স্বামী স্ত্রীর যাবজ্জীবন

লালমনিরহাটে কবিরাজ প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে স্বামী ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার ( ৯ অক্টোবর) বিকেলে লালমনিরহাট আদালতের দায়রা জজ মোঃ মিজানুর রহমান এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে দবিয়ার রহমান (৪০) ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম(৩৩)।

মৃত প্রেমিকা কবিরাজ শাহিনা বেওয়া আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া শিল্পকুঠি এলাকার ভ্যান চালক মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী এবং একই উপজেলার পুর্ব ভেলাবাড়ি গ্রামের একরামুল হকের বোন।

আদালতের রায়ে প্রকাশ, স্বামীর মৃত্যুর পর শাহিনা বেওয়া ছোট ভাই একরামুল হকের বাড়ির পাশে বাড়ি করে বসবাস করে আসতেন। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ও কবিরাজি করে এক ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন শাহিনা বেওয়া। কবিরাজি করতে গিয়ে দবিয়ার রহমানের সাথে ডার পরিচায়। পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। এর এক পর্যায়ে শাহিনা বেওয়া বিয়ের জন্য চাপ দিলে ক্ষিপ্ত হন প্রেমিক দবিয়ার রহমান। বিষয়টি জানা জানি হলে দবিয়ার রহমানের স্ত্রী শাহিনা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী স্ত্রী পরামর্শ করে শাহিনা বেওয়াকে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর ডেকে নেয়। পরে তারা কৌশলে ওই দিন রাতে শাহিনা বেওয়াকে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি পাকার মাথা এলাকায় তিস্তা নদীর চরে নিয়ে হাত পা বেঁধে শ্বাস রোধে হত্যা করে সটকে পড়ে। পরদিন ৭ নভেম্বর স্থানীয়দের খবরে সদর থানা পুলিশ শাহিনা বেওয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ওই দিন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মৃত শাহিনা বেওয়ার ছোট ভাই একরামুল হক। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা(এসআই) মশিউর রহমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার রহস্য উৎঘাটন করে অভিযুক্ত দবিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগমকে গ্রেফতার করে।

গত ২০২১ সালের ৩১ মার্চ অভিযুক্ত দবিয়ার ও তার স্ত্রী শাহিনার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানী শেষে অভিযুক্তদের উপস্থিতিতে সোমবার( ৯ অক্টোবর) মামলার রায় ঘোষনা করেন আদালত।

রায়ে বলা হয়, কবিরাজ শাহিনা বেওয়া হত্যার দায়ে আসামী দবিয়ার রহমান ও শাহিনা বেগম প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক বছর সশ্রম কারাদন্ডে দ্বন্ডিত করা হয়।

রায়ে আদালত আরও উল্লেখ করেন, আসামীদের নাবালক সন্তানরা ইতিম হবে মর্মে তাদেরকে মৃত্যুদ্বন্ডে দ্বন্ডিত করা হয়নি। তাদের হাজতবাসের সময় সাজা থেকে বাদ যাবে বলেও উল্লেখ করেন আদালত। আদালতের সরকারী কৌশলী (পিপি) অ্যাডভোকেট আকমল হোসেন আহমেদ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিউজবিজয়/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

রিজার্ভ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটলো, জানা গেল নতুন তথ্য

লালমনিরহাটে কবিরাজ প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে স্বামী স্ত্রীর যাবজ্জীবন

প্রকাশিত সময় :- ১০:৩৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩

লালমনিরহাটে কবিরাজ প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে স্বামী ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার ( ৯ অক্টোবর) বিকেলে লালমনিরহাট আদালতের দায়রা জজ মোঃ মিজানুর রহমান এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে দবিয়ার রহমান (৪০) ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম(৩৩)।

মৃত প্রেমিকা কবিরাজ শাহিনা বেওয়া আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া শিল্পকুঠি এলাকার ভ্যান চালক মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী এবং একই উপজেলার পুর্ব ভেলাবাড়ি গ্রামের একরামুল হকের বোন।

আদালতের রায়ে প্রকাশ, স্বামীর মৃত্যুর পর শাহিনা বেওয়া ছোট ভাই একরামুল হকের বাড়ির পাশে বাড়ি করে বসবাস করে আসতেন। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ও কবিরাজি করে এক ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন শাহিনা বেওয়া। কবিরাজি করতে গিয়ে দবিয়ার রহমানের সাথে ডার পরিচায়। পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। এর এক পর্যায়ে শাহিনা বেওয়া বিয়ের জন্য চাপ দিলে ক্ষিপ্ত হন প্রেমিক দবিয়ার রহমান। বিষয়টি জানা জানি হলে দবিয়ার রহমানের স্ত্রী শাহিনা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী স্ত্রী পরামর্শ করে শাহিনা বেওয়াকে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর ডেকে নেয়। পরে তারা কৌশলে ওই দিন রাতে শাহিনা বেওয়াকে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি পাকার মাথা এলাকায় তিস্তা নদীর চরে নিয়ে হাত পা বেঁধে শ্বাস রোধে হত্যা করে সটকে পড়ে। পরদিন ৭ নভেম্বর স্থানীয়দের খবরে সদর থানা পুলিশ শাহিনা বেওয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ওই দিন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মৃত শাহিনা বেওয়ার ছোট ভাই একরামুল হক। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা(এসআই) মশিউর রহমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার রহস্য উৎঘাটন করে অভিযুক্ত দবিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগমকে গ্রেফতার করে।

গত ২০২১ সালের ৩১ মার্চ অভিযুক্ত দবিয়ার ও তার স্ত্রী শাহিনার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় ২২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানী শেষে অভিযুক্তদের উপস্থিতিতে সোমবার( ৯ অক্টোবর) মামলার রায় ঘোষনা করেন আদালত।

রায়ে বলা হয়, কবিরাজ শাহিনা বেওয়া হত্যার দায়ে আসামী দবিয়ার রহমান ও শাহিনা বেগম প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক বছর সশ্রম কারাদন্ডে দ্বন্ডিত করা হয়।

রায়ে আদালত আরও উল্লেখ করেন, আসামীদের নাবালক সন্তানরা ইতিম হবে মর্মে তাদেরকে মৃত্যুদ্বন্ডে দ্বন্ডিত করা হয়নি। তাদের হাজতবাসের সময় সাজা থেকে বাদ যাবে বলেও উল্লেখ করেন আদালত। আদালতের সরকারী কৌশলী (পিপি) অ্যাডভোকেট আকমল হোসেন আহমেদ রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিউজবিজয়/এফএইচএন