বিশেষজ্ঞরা আপনাকে আমাকে সুস্থ থাকার জন্য লবণ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটি উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাকের কারণ। অনেকের ধারণা শরীরে লবণ প্রবেশ করলে শরীরে পানি জমে, মুখে ফোলাভাব আসে। বেশি লবণ খাওয়া শরীরের জন্য নিশ্চয়ই ক্ষতিকারক। তাই বলে অতিরিক্ত কম লবণ খাওয়াও বিপজ্জনক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে একজন ব্যক্তির প্রতিদিন ৫ গ্রাম লবণ খাওয়া উচিত। একেবারেই লবণ না খেলে কিংবা খুব কম লবণ খেলে কোমা-র মতো গুরুতর পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে।
রক্তে সোডিয়াম কমে গেলে কী কী সমস্যা হতে পারে? চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
হাইপোনেট্রিমিয়া: শরীরে সোডিয়ামের স্বাভাবিক মাপ হলো– ১৩৫ মিলিইক্যুইভ্যালেন্ট প্রতি লিটারে (mEq/L)। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা এর থেকে কমে গেলে সেই পরিস্থিতিকে হাইপোনেট্রিমিয়া বলে। এক্ষেত্রে পেশি ও কোষ ফুলে যেতে থাকে, রক্তচাপও কমে যায়।
দৈনিক ২.৪ গ্রামের কম লবণ খেলে সোডিয়ামের অভাবে কিডনি বেশি পরিমাণে লবণ জমা করবে। তখনই ইলেকট্রোলাইট ইমব্যাল্যান্স দেখা দেয়। এতে ব্ল্যাক-আউট, মাথা ব্যথা, ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। একারণেই যারা কিটো ডায়েট করেন, তাদের অনেকের ক্ষেত্রেই সোডিয়াম কমে যাওয়ার ফলে মাথা-ঘোরা, গা গোলানোর মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
হাইপোনেট্রিমিয়া সাধারণত ৩ ধরণের হয়। কম, মাঝারি ও বেশি। যখন সোডিয়াম 120 mEq/L-এর কম হয়ে যায়, তখন সিজার, মস্তিষ্কের অসুস্থতা এমনকি কোমা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনসুলিন রেজিসট্যান্স: বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, লবণ কম খেলে বা একেবারেই না খেলে রক্তে ইনসুলিন রেজিসট্যান্সের ক্ষমতা বেড়ে যেতে পারে। এতে টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
হার্ট অ্যাটাক: রক্তে সোডিয়াম কমে গেলে হার্ট কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। এতে প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি: বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, লবণ কম খাওয়া, অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের মধ্যে এলডিএল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ যথাক্রমে ৪.৬ এবং ৫.৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে লবণ কম খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
আর তাই লবণ বেশি না খেলেও পরিমাণ মতো খান। নয়তো বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।
নিউজবিজয়/এফএইচএন