শেষ পর্যন্ত লড়াইটা জিতেই গেলেন যৌনকর্মীরা। দেশের বিভিন্ন পতিতালয় থেকেও এই দাবি সব সময়েই উঠে আসত যে যৌনকর্মকে কাজ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। কিন্তু ফল মেলেনি। তবে আজ
যুগান্তকারী এ নির্দেশ দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ফলে দেশটিতে এবার যৌনপেশা আইনি বৈধতা পেল। অর্থাৎ ভারতের সমস্ত যৌনকর্মীরা এবার থেকে ‘যৌনশ্রমিক’ হিসেবেই স্বীকৃতি পাবেন। একইসঙ্গে শীর্ষ আদলতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, যৌনকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনওভাবেই ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারবে না পুলিশ। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, যৌনপেশার সঙ্গে জড়িতদেরও অন্য পেশার মতোই সমমর্যাদা এবং সমান অধিকার দিতে হবে। এই পর্যবেক্ষণকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ যৌনপেশা নিয়ে এই যুগান্তকারী নির্দেশিকা জারি করেছে। যৌনকর্মীদের নিয়ে মোট ছ’দফা নির্দেশিকা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২৭ জুলাই এই বিষয়ে কেন্দ্রের মতামত জানানোরও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের এই বেঞ্চের বক্তব্য, বেঞ্চ বলেছে, ‘‘যৌনকর্মীরাও আইনের চোখে সমান সুরক্ষার অধিকারী। একজন প্রাপ্তবয়স্ক যৌনকর্মী নিজের সম্মতিতেই যৌনতা বিক্রি করছেন। সে ক্ষেত্রে পুলিশ অকারণ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কোনও ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা যাবে না। সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ এই দেশের প্রত্যেক নাগরিককে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার দিয়েছে।’’অর্থাৎ একটি যৌনপল্লী কিংবা রেড লাইট এলাকায় অকারণে কোনও যৌনকর্মীকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে যৌনপল্লী চালানো এখনও আইনসিদ্ধ হয়নি ভারতে। তবে সেখানে দাঁড়িয়ে কোনও যৌনকর্মী যৌনতা বিক্রি করলে তা আইনের চোখে বৈধই হবে। পাশাপাশি, কোনও মা যৌনকর্মীর সন্তানকে তার মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া যাবে না, কোনও যৌনকর্মী যদি যৌন হেনস্থা বা অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন, তা দ্রুততার সঙ্গে খতিয়ে দেখতে হবে। যৌনকর্মীদের পরিচয় যেন প্রকাশ্যে না আসে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্র: টিওআই।
নিউজ বিজয়/নজরুল