ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেপ্তার, ভারতীয় শিক্ষককে ফেরত পাঠানোর পেছনে কারণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টরাল অ্যাসোসিয়েট হিসেবে কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত গবেষক ড. বদর খান সুরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়াও চলছে। তিনি ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠবাদ ও সংখ্যালঘুদের অধিকার’ বিষয়ে ক্লাস করাতেন। খবর এনডিটিভির।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্রের বিবৃতি অনুসারে, মি. সুরি ‘ইরাক ও আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর তার ডক্টরেট গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য’ মার্কিন ভিসা পেয়েছিলেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, গত সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে ভার্জিনিয়ার বাড়ির বাইরে মুখোশধারী এজেন্টরা তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে ‘হামাসের পক্ষে প্রচারণা চালানো’ এবং ‘একজন পরিচিত বা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন— ‘সুরি ছিলেন একজন বিদেশি শিক্ষার্থী, যিনি জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার সময় হামাসের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে ইহুদিবিরোধী মনোভাব প্রচার করেছেন।’

ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন আরও জানান, সুরি ‘একজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী’, যিনি হামাসের সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। ১৫ মার্চ মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবের আদেশের ভিত্তিতে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন (আইএনএ) ২৩৭(এ)(৪)(সি)(আই) ধারা অনুযায়ী বহিষ্কারের উপযুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়।

কে এই বদর খান সুরি?

ড. বদর খান সুরি জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির এডমন্ড এ. ওয়ালশ স্কুল অব ফরেন সার্ভিসের আওতাধীন আলওয়ালিদ বিন তালাল সেন্টারে মুসলিম-খ্রিস্টান সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক হিসেবে কাজ করছিলেন।

তিনি ২০২০ সালে নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার নেলসন ম্যান্ডেলা সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট রেজোলিউশন থেকে শান্তি ও সংঘাত গবেষণায় পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘সংক্রমণকালীন গণতন্ত্র, বিভক্ত সমাজ ও শান্তির সম্ভাবনা: আফগানিস্তান ও ইরাকে রাষ্ট্র গঠনের চ্যালেঞ্জ’।

তিনি মূলত ধর্ম, সংঘাত ও শান্তি, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার জাতিগত সংঘাত এবং শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে গবেষণা করেন। জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে থাকা তার প্রোফাইল এখন ব্যক্তিগত করা হয়েছে এবং এটি অ্যাক্সেস করতে লগইন প্রয়োজন।

ড. সুরির স্ত্রী মাফেজ সালেহ গাজার বাসিন্দা এবং বর্তমানে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির আধুনিক আরব গবেষণা কেন্দ্রে (সেন্টার ফর কনটেমপোরারি আবর স্টাডিস) প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক।

ড. সুরির গ্রেপ্তার এবং বহিষ্কারের ঘটনাটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।

নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন :-

নিউজ বিজয়ের সম্পর্কে

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

এইচবিএল প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর: আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন অঙ্গীকার

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেপ্তার, ভারতীয় শিক্ষককে ফেরত পাঠানোর পেছনে কারণ

প্রকাশিত সময়:- ০৩:৩৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টরাল অ্যাসোসিয়েট হিসেবে কর্মরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত গবেষক ড. বদর খান সুরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়াও চলছে। তিনি ‘দক্ষিণ এশিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠবাদ ও সংখ্যালঘুদের অধিকার’ বিষয়ে ক্লাস করাতেন। খবর এনডিটিভির।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্রের বিবৃতি অনুসারে, মি. সুরি ‘ইরাক ও আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর তার ডক্টরেট গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য’ মার্কিন ভিসা পেয়েছিলেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, গত সোমবার (১৭ মার্চ) রাতে ভার্জিনিয়ার বাড়ির বাইরে মুখোশধারী এজেন্টরা তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে ‘হামাসের পক্ষে প্রচারণা চালানো’ এবং ‘একজন পরিচিত বা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার’ অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন— ‘সুরি ছিলেন একজন বিদেশি শিক্ষার্থী, যিনি জর্জটাউন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার সময় হামাসের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে ইহুদিবিরোধী মনোভাব প্রচার করেছেন।’

ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন আরও জানান, সুরি ‘একজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী’, যিনি হামাসের সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। ১৫ মার্চ মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবের আদেশের ভিত্তিতে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইন (আইএনএ) ২৩৭(এ)(৪)(সি)(আই) ধারা অনুযায়ী বহিষ্কারের উপযুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়।

কে এই বদর খান সুরি?

ড. বদর খান সুরি জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির এডমন্ড এ. ওয়ালশ স্কুল অব ফরেন সার্ভিসের আওতাধীন আলওয়ালিদ বিন তালাল সেন্টারে মুসলিম-খ্রিস্টান সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক হিসেবে কাজ করছিলেন।

তিনি ২০২০ সালে নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার নেলসন ম্যান্ডেলা সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট রেজোলিউশন থেকে শান্তি ও সংঘাত গবেষণায় পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘সংক্রমণকালীন গণতন্ত্র, বিভক্ত সমাজ ও শান্তির সম্ভাবনা: আফগানিস্তান ও ইরাকে রাষ্ট্র গঠনের চ্যালেঞ্জ’।

তিনি মূলত ধর্ম, সংঘাত ও শান্তি, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার জাতিগত সংঘাত এবং শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে গবেষণা করেন। জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে থাকা তার প্রোফাইল এখন ব্যক্তিগত করা হয়েছে এবং এটি অ্যাক্সেস করতে লগইন প্রয়োজন।

ড. সুরির স্ত্রী মাফেজ সালেহ গাজার বাসিন্দা এবং বর্তমানে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির আধুনিক আরব গবেষণা কেন্দ্রে (সেন্টার ফর কনটেমপোরারি আবর স্টাডিস) প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক।

ড. সুরির গ্রেপ্তার এবং বহিষ্কারের ঘটনাটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।

নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন