রাজধানীতে বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের ২০ ফুট উঁচু ‘প্রতীকী মোটিফ’ থাকছে না। শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ‘প্রতীকী মোটিফ’ রাখার বিষয়ে প্রাথমিক চিন্তা ছিলো। কিন্তু এখন এই চিন্তা থেকে সরে এসেছেন আয়োজকেরা।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। আবু সাঈদের পরিবারও ‘ভাস্কর্য’ না রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ভাস্কর্য না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়ে হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শহীদ আবু সাঈদের ‘প্রতীকী মোটিফ’ (তারা এটাকে ভাস্কর্য বলছেন না) নিয়ে প্রাথমিক স্কেচ হয়েছিল। এর মাধ্যমে আবু সাঈদের বীরত্বকে তুলে ধরার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কেউ কেউ চিন্তা করেছিলেন। যেহেতু আবু সাঈদের পরিবার চাইছে না, তাই এ বিষয়ে অনেকের চিন্তা থাকলেও সেখান থেকে সরে আসা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে আবু সাঈদের মেজো ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবু সাঈদের ভাস্কর্য চাই না, ভাস্কর্যের পক্ষে আমরা নই। ইতিমধ্যে ওর বন্ধু-বান্ধবরা এসব নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে প্রতিবাদ করেছে। ফেসবুকে দেখে আমিও তাদের প্রতিবাদে সম্মতি জানিয়েছি যে, আমরা ভাস্কর্য চাই না।’
এর আগে গত সোমবার আজাহারুল ইসলাম বলেছিলেন, এবার শোভাযাত্রায় প্রাথমিকভাবে বড় আকারের চারটি ভাস্কর্য রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে থাকবে ২০ ফুট দীর্ঘ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদের ভাস্কর্য। আরও থাকবে একটি করে বাঘ, প্যাঁচা,পাখি, ফুল ও স্বৈরাচারের প্রতীকী ভাস্কর্য। আর অনেক মুখোশ থাকবে। নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা থাকবে, না পরিবর্তন করা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। সামনে আরও সময় আছে, তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
চারুকলা ১৯৮৯ সাল থেকে পয়লা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে। শুরুতে নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নামকরণ হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’।
পরে জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে।
নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন