ঢাকা ১২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে রৌমারীর গ্রামগুলো হুমকির মুখে

নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী ও সোনাপুর; স্থায়ী সমাধানের দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়ন ও যাদুরচর ইইউনিয়নেও ভয়াবহ নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পরেছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীব্র ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী ও সোনাপুর,যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর চরের গ্রামসহ একাধিক গ্রাম। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই নদীর ভাঙন অঞ্চলের মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। এবছর ভাঙ্গনের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সুখেরবাতি গ্রামের বাসিন্দা জিন্নাত আলী বলেন, “প্রতিটি নির্বাচনের আগে নেতারা এসে নদীভাঙন রোধে প্রতিশ্রতি ও
আশ্বাস দিয়ে ভোট নেয়া শেষ হলে আর তাদের দেখাও পাওয়া যায়না। আমরা প্রতি বছর ভিটেমাটি হারিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করি। স্থানীয়রা জানান, ভাঙনের কবলে ইতোমধ্যেই বহু কসতবাড়ি ও কৃষি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অনেক পরিবার বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছে, কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিগত সরকারের সময়কার এই এলাকায় বড় বড় এমপি মন্ত্রীরা বারবার এসেছিলেন। তারা শুধু মিথ্যা আশ্বাসের বানি শুনিয়েই আমাদের কাছ থেকে ভোট নিয়েছেন, কিন্তু নদী রক্ষা বা বাঁধ নির্মাণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। বরং আমাদের সরলতা নিয়ে তারা তাদের খেলা খেলেছেন।”চরাঞ্চলের এই দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের দাবী ব্রহ্মপুত্র নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীর পাড়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় মানবিক বিপর্যয় ঘটবে এমন আশংকা করছেন নদীর তীরঘেষা মানুষ গুলো। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। রৌমারীর ভাঙন প্রবণ এলাকার মানুষ গুলোর দাবি, সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্ররুত¦ হস্তক্ষেপ করে নদীভাঙন রোধে কার্যকর ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত ইউনুস আলী-আবু বক্কর সিদ্দিক-জাবেদ আলীসহ আরও অনেকোই জানান আমাদের সবকিছু নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে কেউ আমাদের সহযোগিতা করছেন না।

এ বিষয় চর শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলাল বলেন বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আর কতদিন এভাবে জীবনযাপন করতে হবে আমাদের জানিনা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। যেহেতু আমার ইউনিয়নটা প্রায় বিলিন হচ্ছে কোনকিছু করতে বা সাহায্য কোনটাই করতে পারছিনা আর কারে কি বলবো লাভ নেই।

এবিষয় রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপ কুমার হালদার বলেন নদী ভাঙ্গন রোধে আমি বিভিন্ন যায়গায় যোগাযোগ করছি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

নদী ভাঙ্গনের বিষয় কুড়িগ্রাম পানিউন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রকিবুল হাসান এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন রৌমারী নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হচ্ছে। তার কথার প্রেক্ষিতে নতুন কোন প্রকল্পের বরাদ্দ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখন পর্যন্ত পাইনি।
নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন :-

নিউজ বিজয়ের সম্পর্কে

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার মা-বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।
জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে রৌমারীর গ্রামগুলো হুমকির মুখে

প্রকাশিত সময়:- ০২:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী ও সোনাপুর; স্থায়ী সমাধানের দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়ন ও যাদুরচর ইইউনিয়নেও ভয়াবহ নদী ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পরেছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর তীব্র ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী ও সোনাপুর,যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর চরের গ্রামসহ একাধিক গ্রাম। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই নদীর ভাঙন অঞ্চলের মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। এবছর ভাঙ্গনের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সুখেরবাতি গ্রামের বাসিন্দা জিন্নাত আলী বলেন, “প্রতিটি নির্বাচনের আগে নেতারা এসে নদীভাঙন রোধে প্রতিশ্রতি ও
আশ্বাস দিয়ে ভোট নেয়া শেষ হলে আর তাদের দেখাও পাওয়া যায়না। আমরা প্রতি বছর ভিটেমাটি হারিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করি। স্থানীয়রা জানান, ভাঙনের কবলে ইতোমধ্যেই বহু কসতবাড়ি ও কৃষি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অনেক পরিবার বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছে, কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিগত সরকারের সময়কার এই এলাকায় বড় বড় এমপি মন্ত্রীরা বারবার এসেছিলেন। তারা শুধু মিথ্যা আশ্বাসের বানি শুনিয়েই আমাদের কাছ থেকে ভোট নিয়েছেন, কিন্তু নদী রক্ষা বা বাঁধ নির্মাণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। বরং আমাদের সরলতা নিয়ে তারা তাদের খেলা খেলেছেন।”চরাঞ্চলের এই দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের দাবী ব্রহ্মপুত্র নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থা নিতে হবে। নদীর পাড়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় মানবিক বিপর্যয় ঘটবে এমন আশংকা করছেন নদীর তীরঘেষা মানুষ গুলো। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। রৌমারীর ভাঙন প্রবণ এলাকার মানুষ গুলোর দাবি, সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্ররুত¦ হস্তক্ষেপ করে নদীভাঙন রোধে কার্যকর ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত ইউনুস আলী-আবু বক্কর সিদ্দিক-জাবেদ আলীসহ আরও অনেকোই জানান আমাদের সবকিছু নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে কেউ আমাদের সহযোগিতা করছেন না।

এ বিষয় চর শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলাল বলেন বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আর কতদিন এভাবে জীবনযাপন করতে হবে আমাদের জানিনা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। যেহেতু আমার ইউনিয়নটা প্রায় বিলিন হচ্ছে কোনকিছু করতে বা সাহায্য কোনটাই করতে পারছিনা আর কারে কি বলবো লাভ নেই।

এবিষয় রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুপ কুমার হালদার বলেন নদী ভাঙ্গন রোধে আমি বিভিন্ন যায়গায় যোগাযোগ করছি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

নদী ভাঙ্গনের বিষয় কুড়িগ্রাম পানিউন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রকিবুল হাসান এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন রৌমারী নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করা হচ্ছে। তার কথার প্রেক্ষিতে নতুন কোন প্রকল্পের বরাদ্দ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখন পর্যন্ত পাইনি।
নিউজ বিজয় ২৪ডট কম/এফএইচএন