কেন্দ্রীয় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগদিতে ঢাকা কাঁঠাল বাগান এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শহীদ নয়ন ইসলামকে বিএনপি ক্ষমতায় এলে বীরের মর্যাদা প্রদান,পরিবারকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে এবং তার এলাকার রাস্তাঘাট তার নামে নামকরণসহ পরিবারের পাশে বিএনপি সার্বক্ষণিক থাকবে।
তিনি সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নে নিহত শহীদ নয়ন ইসলামের শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নিহত নয়ন ইসলাম আদিতমারী উপজেলার দক্ষিণ গোবধা গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে। সে দুর্গাপুর ইউনিয়ন যুবদল কমিটিতে সদস্য পদে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এখনো পরাজিত শক্তি আওয়ামীলীগের দুসররা বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই সরকার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তাদের স্বপ্নের সোনার সিংহাসন থেকে বিচ্যুত ঘটার কারনে তারা আবার নতুন করে ষড়যন্ত্রে ফিরে যেতে চায়। আজকে আনসার বিদ্রোহ কালকে পাহাড় বিদ্রোহ তারপর সচিবালয় ঘেরাও সুতরাং সবাইকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থেকে ভূলন্ঠিত করা হয়েছিল। এখনো দ্বিতীয় যুদ্ধ বাকি আছে। দ্বিতীয় যুদ্ধকি? জনগণ কর্তৃক অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। ২য় যুদ্ধ অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
দুলু আরও বলেন, শেখ হাসিনা ছিল একটি অনির্বাচিত স্বেরচার সরকার। বিগত টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা ঘুম,খুন আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছিল। তার সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী,এমপি নেতাকর্মিরা দেশের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। আর বিএনপি লোকদের কোন কথা বলতে দিতনা তাদের নামে লাখ,লাখ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছিল। এজন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও জনগনের আন্দোলনের মুখে তাদের পতন হয়েছে। আজকে তারা কোথায়? পালিয়ে গিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সকল হত্যা,নির্যাতন,অপকর্মের দায় আওয়ামীলীগকেই নিতে হবে। কারন হাসিনার নির্দেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে। আর এর পিছনে যারা স্বৈরাচার দোসর ইন্দনদাতা ও হুকুমদাতা প্রত্যকটা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা আসামী করা হবে। এখনও তারা বিদেশে অবস্থান করে ক্ষমতায় আসতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সেই ষড়যন্ত্র যাতে নস্যাৎ হয় কোনদিন যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে তার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি নেতা কর্মিদেরকে উদ্দেশ্য বলেন, আওয়ামীলীগ যা করেছে আমরাও যদি তাদের রাস্তায় হাটি তাহলে আমাদের ফলাফল তাদের চেয়েও বেশি হবে।এই মানসিকতা থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। তাই মানুষের কাছে যেতে হবে বুকে বুক মিলিয়ে মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে হবে।এই বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নাই।মানুষ সন্মান করে তাদের কাজের উপর নির্ভর করে। আমরা একটি আলো দেখতে পেয়েছি সে আলো যাতে নিমজ্জিত না হয় সেই আলোটা আরও বিকশিত হয়। সকল মানুষকে যাতে আমরা আলোকিত করতে পারি। আপনারা জানেন,আমি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় এই জেলাকে আলোকিত লালমনিরহাট জেলা গঠন করেছিলাম। সেই আলোকিত জেলা আবার চালু করতে চাই। সেজন্য দুর্নীতি মুক্ত,বাল্য বিবাহ মুক্ত,মাদক মুক্ত একটি সুন্দর সমাজ গঠন করতে সবাইকে পাশে থাকতে বলেন।
শহীদদের রক্ত যাতে বৃথা না যায় আমরা কেউ যেন ভূলে না যাই স্বার্থক হয় তার জন্য দেশ গঠনে সবাইকে দেশ প্রেমিক হতে হবে। একটি আলোকিত,গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ করতে হবে সে বাংলাদেশে মানুষ মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিয়ে অধিকার আদায়ে সংগ্রামে নিয়োজিত থাকতে পারি সেই দেশ গড়তে হবে।
শোক সভায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আমিনুল ইলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যাদের মধ্যে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল, জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, পৌর বিএনপির সভাপতি আফজাল হোসেন, যুবদলের সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছ, আদিতমারী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ছালেকুজ্জামাম সালেক,সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক হবিবুর রহমান হবি,যুগ্ন আহবায়ক নাদিরুল ইসলাম মানিক,যুবদলের আহবায়ক ইদ্রিস আলী ও সদস্য সচিব হাসানুল হক বান্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নিহত শহীদ নয়ন ইসলামের কবর জিয়ারতের পর তার স্ত্রী ও সন্তানের হাতে নগদ ১ লক্ষ টাকা তুলে দেন।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রায় ৪৬ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মৃত্যুর কাছে হার মানেন নয়ন মিয়া।
নিউজবিজয়২৪ডট কম/এফএইচএন