ঈদ উপলক্ষে নতুন নোট বাজারে ছাড়া হলেও রাজধানীর ব্যাংক শাখাগুলোতে গিয়ে খালি হাতে ফিরছেন গ্রাহকরা। অথচ গুলিস্তান কমপ্লেক্সের নিচতলা, সদরঘাট ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান শাখার নিচে জমজমাটভাবে বিক্রি হচ্ছে নতুন চকচকে নোট। সরেজমিনে সোমবার ও মঙ্গলবার রাজধানীর অন্তত ১৪টি ব্যাংক শাখায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে—নতুন টাকা মিলছে না, কিন্তু খোলাবাজারে তা সহজলভ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এবারই প্রথম নতুন ডিজাইন করে টাকা ছেপেছে তারা। এসব টাকা সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, পূবালী, উত্তরা, ডাচ্-বাংলা, ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে কোন শাখা নতুন নোট দেবে, সেটি নির্ধারণ করছে প্রতিটি ব্যাংক নিজ নিজভাবে।
গুলিস্তান কমপ্লেক্সের নিচে পুরোনো টাকার বাজারে দেখা যায়, ফড়িয়ারা নতুন এক হাজার, ৫০ ও ২০ টাকার নোট সাজিয়ে গ্রাহকদের ডেকে বিক্রি করছেন। ১০ শতাংশ বেশি দামে এসব নোট বিক্রি হচ্ছে। যদিও সোমবার ৫০ ও ২০ টাকার নোট মেলেনি, মঙ্গলবার থেকে কিছুটা পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। ঈদের সালামির জন্য অনেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে এসব ছোট নোট কিনে নিচ্ছেন।
একজন ক্রেতা মো: আরিফুল ইসলাম বলেন, “ব্যাংকে পাইনি, কিন্তু গুলিস্তানে আসলেই পেলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিচেও একই অবস্থা।”
ফড়িয়াদের দাবি, তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমেই এই নতুন নোট পান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, “আমরা কমিশন দিয়ে টাকা কিনি, তাই একটু বেশি দামে বিক্রি করি। ৫০ ও ২০ টাকার নোটে চাহিদা বেশি।”
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা সরাসরি কোনো ফড়িয়াকে টাকা দিই না। ব্যাংক থেকে কেউ তুলে বাইরে বিক্রি করে থাকলে, সেটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।”
তিনি আরও বলেন, “এখন একটি চক্র এসব নতুন টাকা সংগ্রহ করে বাইরে বিক্রি করছে। আগে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এই কাজ করলেও এখন কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত।”
অগ্রণী ব্যাংক জাতীয় প্রেস ক্লাব শাখা এবং রূপালী ব্যাংক পল্লবী শাখায় গিয়ে দেখা যায়, নতুন নোটের জন্য ভিড় করছেন গ্রাহকরা। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে—তারা এখনো নতুন টাকা পাননি।