টঙ্গীর তুরাগতীরে আজ রোববার ফজরের পর বয়ানে ইজতেমার তৃতীয় দিন শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইলের সুরা সদস্য মোহাম্মদ জোবায়ের।
গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসুল্লির আগমনে মুখর ইজতেমার মাঠ ও আশপাশ।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে আসতে শুরু করেছেন। শীত উপেক্ষা করে লাখো মানুষ বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে এক ছাতার নিচে জড়ো হচ্ছেন।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে আমবয়ানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার কথা ছিল ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা; কিন্তু এ বছর মাঠে মানুষের চাপে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) যোহরের নামাজের পরই মূল কার্যক্রম শুরু করেন তাবলীগ জামাতের মুরুব্বিরা।
এবারের ইজতেমায় ৮ হাজারের মতো বিদেশি মেহমান অংশ নিচ্ছেন। অতিমারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিধিনিষেধ থাকায় গত দুবছর অনুষ্ঠিত হয়নি বিশ্ব ইজতেমা। সেজন্য এবার প্রথম পর্বেই তুরাগ তীরে মানুষের ঢল।
ইজতেমা মাঠের মুরুব্বিরা জানান, তাবলীগ জামাতের উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে বিদ্যুৎ, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের অনুসারীরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।
বিভিন্ন সমস্যা থাকার পরও এখানে কারো কোনো অভিযোগ নেই। বরং মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে কারোনা মহামারির সময় পেরিয়ে একত্রে আবারও সমবেত হতে পারায় কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন বারবার। এখানে নেই কোনো বৈষম্য, নেই ভেদাভেদ। সবার পরিচয় তারা আল্লাহর বান্দা ও রাসুলের (সা.) উম্মত। নবীওয়ালা জিন্দিগী গড়ে তুলতে দাওয়াতে তাবলিগের দীক্ষা নিতেই হাজির হয়েছেন এই সম্মেলনে। তারা বিশ্বকে জানাতে চান এটাই যে ইসলামের মহত্ব।
তৃতীয় দিন মুসল্লিরা ইবাদত বন্দেগি ও কোরআন হাদিসের আলোকে আলোকিত জীবন গড়ে তোলার বয়ান শুনে অতিবাহিত করেছেন। রোববার ফজর নামাজের পর থেকে শুরু হয় বয়ান। বয়ান শুরু করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। তার বয়ানের পরই হেদায়েতি বয়ান হওয়ার কথা রয়েছে। হেদায়েতি বয়ান শেষ হলে শুরু হবে আখেরি মোনাজাত। হেদায়েতি বয়ান ও আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইলের সুরা সদস্য কারি মোহাম্মদ জোবায়ের।
মোনাজাত বিষয়ে ইজতেমার প্রথম পর্বের আয়োজক কমিটির মিডিয়া সমন্বয়ক মুফতি জহির ইবনে মুসলিম বলেন, রোববার বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আবদুর রহমান মুসল্লিদের উদ্দেশে হেদায়াতি বয়ান করবেন। পরে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে যেকোনো সময় আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইলের সুরা সদস্য কারি মোহাম্মদ জোবায়ের।
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পক্ষের (যোবাইর অনুসারী) আয়োজনে এবারের ইজতেমা। চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পক্ষের (সা’দ অনুসারী) বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন।