প্রচণ্ড গরমের তীব্রতায় জনজীবন বিপর্যস্ত। এমন অবস্থায় ফ্যান, চার্জার, এসি, কুলার ও বাতির ব্যবহার বাড়েই চলেছে। আর এ কারণে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিলের টাকার পরিমাণও বাড়ছে। তাই নিম্নবিত্ত পরিবারের পাশাপাশি দুশ্চিন্তার রেখা এখন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতেও প্রভাব ফেলছে। এমন অবস্থায় গরমের সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে এই বিলের খরচ কমানো সম্ভব।
চলুন বিদ্যুৎ বিল কমানোর উপায়গুলো জেনে নেয়া যাক-
বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ কমাতে চাইলে প্রথমেই বাড়ির পুরোনো সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সরিয়ে ফেলতে হবে। কেননা এ ধরনের যন্ত্রপাতিগুলো প্রচুর পরিমাণে বৈদ্যুত খরচ করে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিল অনেকটা বেড়ে যায়। এখন বাজারে শক্তি সাশ্রয়ী ৫ স্টার রেটযুক্ত যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। আধুনিক সেই যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ অনেকটা সাশ্রয় করা সম্ভব।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি ঘরেই অ্যানার্জি সেভিং বাতি লাগান। এর চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে যদি ঘরে এলইডি লাইট লাগাতে পারেন। এই বাতিগুলো লোডশেডিংয়েও আপনার ঘর আলো করে রাখতে পারে। এই বাতির ব্যবহারে তাই আলাদা করে চার্জার বাতি, টর্চ লাইট চার্জ দেয়ার প্রয়োজন পড়বে না। ফলে বিদ্যুৎ অনেকটাই সাশ্রয় করতে পারবেন।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এমন ফ্যানগুলোকে ঘরে ব্যবহারের জন্য প্রাধান্য দিতে পারেন। এছাড়া একটানা ফ্যান চালিয়ে রাখলে ঘর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গরম হয়ে যায়। তাই টানা ৩ ঘণ্টা চালু থাকার পর ১ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে ব্যবহার করুন। ফ্যান বন্ধ অবস্থায় সেই ঘরে না থেকে অন্য ঘরে থাকুন। ঘরে জানালা থাকলে তা খুলে দিন।
আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলে বা বৃষ্টির দিনগুলোতে ফ্যান বন্ধ রাখতে পারেন। অপ্রয়োজনে খালি ঘরে ফ্যান বা লাইট বন্ধ করেও আপনি বিদ্যুৎ বিল কমাতে পারেন।
গরমে এসি ব্যবহারের পরিবর্তে এয়ার কুলার মেশিনকে প্রাধান্য দিলে আপনার বিদ্যুৎ বিল অনেকটাই কমে যাবে। আর আইপিএস ব্যবহারের পরিবর্তে এলইডি লাইট আর চার্জার ফ্যানের ব্যবহারেও আপনার আরামে কোনো ঘাটতি না রেখেই আপনি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারবেন।
প্রাচীন মিশরে গরম থেকে বাঁচতে ঘরে হালকা ভেজা পর্দা ব্যবহার করার প্রচলন ছিলো। এতে ঘরে শীতল আমেজ থাকে। কারণ বাইরের গরম হাওয়া ঘরে ঢোকার সময় এই পর্দা উত্তাপ অনেকটাই শুষে নিয়ে ঘরকে শীতল রাখবে।
ঘরে একাধিক ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট এক সঙ্গে চললে ঘর অনেকটাই গরম হয়ে যায়। তাই ঘরে কখনও একসঙ্গে এত প্রোডাক্ট চালু রাখবেন না। এছাড়া মাইক্রোওভেন ও ওয়াশিং মেশিন খুব প্রয়োজন না হলে ব্যবহার বন্ধ রাখতে পারেন।
গরমে প্রশান্তি পেতে ঠান্ডা পানীয় বা শরবত তৈরি করতে ইলেকট্রনিক ব্লেন্ডারের পরিবর্তে হাতে ব্যবহৃত ব্লেন্ডার আর জুসার মেশিনগুলোকে প্রাধান্য দিতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ বিল অনেকটা সাশ্রয় হবে।
দিনের বেলা যতটা পারা যায় প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত আলো অযথা না চালালে বিলও অর্ধেক আসবে। এছাড়া অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেট অযথা চালিয়ে রাখবেন না। প্রয়োজন না হলে বন্ধ রাখুন।
অনেকেই ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্টের স্যুইচ অফ করেন কিন্তু প্লাগ লাগানোই থাকে। এই অবস্থাতেও বিদ্যুৎ খরচ হয়। একে ‘ফ্যান্টম’ বা ‘স্ট্যান্ডবাই’ বলে। তাই ডিভাইস ব্যবহার না করলে সেটা আনপ্লাগ করতে হবে। এর ফলে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।
নিউজবিজয়২৪ডট কম/এফএইচএন