নেপালের পোখারায় ৭২ আরোহী নিয়ে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটিতে তিন শিশুসহ ৬৮ যাত্রী এবং চারজন ক্রু ছিলেন। রোববার এক প্রতিবেদনে নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে অন্তত ৪০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইয়েতি এয়ারলাইন্সের টুইন-ইঞ্জিনের এটিআর৭২ বিমানটি নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে যাত্রা করে এবং পোখরার পুরাতন এবং নতুন বিমানবন্দরের মধ্যবর্তীস্থানে বিধ্বস্ত হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন নেপালি, পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রুশ ও দুই কোরিয়ান ছিলেন। এছাড়াও আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্স থেকে একজন করে যাত্রী ছিলেন।
নেপালের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএএন) জানিয়েছে, বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে সকাল ১০:৩৩ মিনিটে উড্ডয়ন করেছিল এবং প্রায় ২০ মিনিট পরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। দুই শহরের মধ্যে ফ্লাইট সময় ২৫ মিনিট। তবে বিমানটি পোখারা বিমানবন্দরে অবতরণের মাত্র ৫ মিনিটের দূরত্বে একটি নদীর তীরে বিধ্বস্ত হয়।
একজন স্থানীয় কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার সাথে সাথে আগুন ধরে যায় এবং উদ্ধারকর্মীরা এটি নিভানোর চেষ্টা করছেন। ধ্বংসাবশেষে আগুনের কারণে উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র সুদর্শন বরতৌলা এএফপিকে বলেছেন, আমরা এখনই জানি না কেউ বেঁচে আছে কিনা। তবে উদ্ধার তৎপরতা এখনও চলছে।
এদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহল ‘প্রচন্ড’ মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলিকে উদ্ধার অভিযানে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এয়ারক্রাফ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিমালয়ের দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে দূরবর্তী এবং জটিল রানওয়ে রয়েছে, যেখানে আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তন ঘটে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চ্যালেঞ্জিং পাহাড়ী ভূখণ্ড যেখানে অতীতে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
গত মে মাসে, তারা এয়ারের মালিকানাধীন একটি বিমান পোখারা থেকে উড্ডয়নের ২০ মিনিটেরও কম সময় পরে বিধ্বস্ত হয়, যা তিব্বতের সীমান্তবর্তী মুস্তাং জেলার একটি জনপ্রিয় ট্রেকিং এবং তীর্থস্থান গন্তব্য জোমসোমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
২০১৮ সালে, কাঠমান্ডুতে অবতরণের সময় বাংলাদেশ থেকে ইউএস-বাংলার একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়, এতে থাকা ৭১ জনের মধ্যে ৪৯ জন নিহত হয়।