শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম মসজিদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে (আইসিসিএনওয়াই) জুমার নামাজ পড়িয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। একজন বিদেশি নেতা হিসেবে মসজিদটিতে এবারই প্রথম তিনি জুমার নামাজে ইমামতি করেন। এ সময় কোরআন তিলাওয়াত এবং আজান দেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান কারি শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ।
জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিতে আনোয়ার ইব্রাহিম নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন। শুক্রবার জুমার নামাজে অংশ নিতে তিনি মসজিদে যান। সেখানে তিনি জুমার আগে বক্তব্য প্রদান করেন এবং নামাজের ইমামতি করেন। নামাজের পর এক ব্যক্তি তাঁর হাতে কালেমা শাহাদাত পাঠ করে ইসলাম গ্রহণ করেন।
জুমার আগে আনোয়ার ইব্রাহিম মালয়েশিয়ায় বহুজাতিক ও বহুধর্মীয় সমাজ পরিচালনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। উপস্থিত প্রায় হাজার সংখ্যক মুসল্লির উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা সব সময় পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহনশীলতা প্রচার করার চেষ্টা করি। আমরা অন্যদের সংস্কৃতি ও ধর্ম বোঝার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছি। কেননা সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাসের জন্য এসব উপকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মুসলিম ঐক্য ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ার গুরুত্ব তুলে ধরে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, একজন মুসলিমের জীবনের সব ক্ষেত্রে ইসলামী অনুশাসন পালন করা কর্তব্য। যেন অমুসলিমরা আমাদের দেখেই ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহী হয়। আমাদের শুধুমাত্র ধর্মীয় জ্ঞান লাভ করে ক্ষান্ত হওয়া যাবে না; বরং আধুনিক প্রযুক্তি খাতেও ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
তা ছাড়া মুসলিম ঐক্য সুদৃঢ় করার পাশাপাশি সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় তিনি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধে ‘মালয়েশিয়া মাদানি’ ধারণার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
কোরআন অবমাননা নিয়ে তিনি বলেন, যখন কয়েকটি দেশে কোরআন অবমাননার ঘটনা ঘটেছিল, তখন মালয়েশিয়া পবিত্র কোরআনের ১০ লাখ কপি ছাপিয়েছে। এরপর আমরা কোরআনের ১৫ হাজার কপি সুইডেনে পাঠিয়েছি, যাতে করে তারা কোরআন দেখে এবং তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করে। অজ্ঞতার কারণে তারা যেন সংঘাতে না জড়ায়।
ইসলামিক সেন্টারের ইমাম সাদ জুল্লাহ বলেন, মুসলিমবিশ্বের প্রশংসিত নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম আমাদের মসজিদে উপস্থিত হওয়ায় আমরা অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। দিনটি আমাদের জন্য ঐতিহাসিকভাবে স্মরণীয়। কারণ তিনিই প্রথম বিশ্বের খ্যাতিমান নেতা, যিনি এই সেন্টার পরিদর্শন করেছেন এবং এখানে জুমা পড়িয়েছেন। সূত্র: মালয় মেইল