ঢাকা ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের ১৮ ভাগ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের ১৮ ভাগ তথা প্রায় ৩ কোটি মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে।
তিনি বলেন, আমরা জানি মানসিক সমস্যায় বিশ্বে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে। প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। আর বাংলাদেশের ১৮ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক বা তিন কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে এই সমস্যায় ভুগছে। অন্যান্য অনেক রোগেও এমনটা হয় না। মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত এসব রোগীর বড় একটি অংশ শিশু।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল পরিকল্পনা ২০২০-৩০ এর অবহিতকরণ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাহিদ মালেক বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সরকার নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা বলছি না যে অনেকিছু করেছি, কিন্তু আমরা উপলব্ধি করছি। পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আরও উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় কাউন্সিলিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ২শ উপজেলায় থাকা এনসিডি কর্নার রয়েছে, সেখানেও এই কাউন্সিলিং করার ব্যবস্থা থাকছে। তবে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। শুধু যে সুযোগ-সুবিধার কারণে সমস্যা হচ্ছে তা কিন্তু নয়। সচেতনতায়ও এখনো নানা গ্যাপ রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যে বাজেটেও এখনো ঘাটতি আমরা দেখছি। এটি কীভাবে বাড়ানো যায় চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে দক্ষ জনবল বাড়ানোর বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এটি হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। এই সমস্যার কারণে অনেকে চাকরি হারান, দেশের প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়, অপরাধের মাত্রা বাড়ে। এমনকি উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ে এই মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে।
তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পেছনে সায়মা ওয়াজেদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তার কারণেই অনেক গবেষণা হয়েছে, আইনি কাঠামো তৈরি হয়েছে। যা অনেক দেশেই নেই। এগুলো বাস্তবায়নের এখনই সময়।

এ সময় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে পরিবার থেকেই পরিবর্তন আনার ওপর গুরুত্ত্বারোপ করেন সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ।
তিনি বলেন, আমাদের শারীরিক চিকিৎসা নানা কর্মকৌশল থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ছিল না। এ জন্য নানা পরিকল্পনা আমরা করেছি। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটা উন্নত পরিবেশ দরকার। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চাইলেই হবে না, আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। পরিবার থেকেই এটি চালু করতে হবে। পরিবারেই তাকে যেন দুর্বল করে দেখা না হয়।
সায়মা ওয়াজেদ বলেন, আজ গর্ব করে বলতে হয় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বাংলাদেশের একটি কর্মকৌশল আছে, একটি আইন আছে। কিন্তু সবাই এগিয়ে না আসলে, কাজ না করলে এগোবে না। সবার আগে নিজেকের পরিবর্তন করতে হবে। জাতি হিসেবে আমরা অনেক কিছু হারিয়েছে। সেখান থেকে উন্নত দেশের কাতারে এসেছি, তাহলে কেন আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের মত জায়গায় এগোতে পারবো না?

আরও পড়ুন >  সাফজয়ীদের প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উন্নতি করতে চাইলে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এখাতে ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের ৬০ ভাগই খরচ হচ্ছে ট্রেনিংসহ অন্যান্য কাজে। তাই বরাদ্দ বাড়ানো খুবই জরুরি।
এ সময় জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেন সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই কর্মকৌশর বাস্তবায়নে একটা বডির প্রয়োজন। যেটি বিএমডিসি মাধ্যমে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ নয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দরকার। কিন্তু এগুলোতে এখনো ঘাটতি রয়েছে। গত দুই বছরের আত্মহত্যা বেড়েছে। কীভাবে এটি রোধ করা যায় সেই কৌশল এতে রয়েছে।
তিনি বলেন, পিতামাতা ও সবার সচেতনতা দরকার। আমাদের মনের যত্ন নিতে হবে। কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় এটি যুক্ত করতে হবে।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন

👉 নিউজবিজয় ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ✅

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন।

NewsBijoy24.Com

নিউজবিজয়২৪.কম একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উৎসর্গ করলাম আমার বাবার নামে, যাঁর স্নেহ-সান্নিধ্যের পরশ পরিবারের সুখ-দু:খ,হাসি-কান্না,ব্যথা-বেদনার মাঝেও আপার শান্তিতে পরিবার তথা সমাজে মাথা উচুঁ করে নিজের অস্তিত্বকে মেলে ধরতে পেরেছি।

ফের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ট্রাম্প: বাংলাদেশি জ্যোতিষী

দেশের ১৮ ভাগ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে

প্রকাশিত সময় :- ১১:৪১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের ১৮ ভাগ তথা প্রায় ৩ কোটি মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে।
তিনি বলেন, আমরা জানি মানসিক সমস্যায় বিশ্বে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে। প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। আর বাংলাদেশের ১৮ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক বা তিন কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে এই সমস্যায় ভুগছে। অন্যান্য অনেক রোগেও এমনটা হয় না। মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত এসব রোগীর বড় একটি অংশ শিশু।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল পরিকল্পনা ২০২০-৩০ এর অবহিতকরণ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাহিদ মালেক বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সরকার নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা বলছি না যে অনেকিছু করেছি, কিন্তু আমরা উপলব্ধি করছি। পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আরও উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় কাউন্সিলিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ২শ উপজেলায় থাকা এনসিডি কর্নার রয়েছে, সেখানেও এই কাউন্সিলিং করার ব্যবস্থা থাকছে। তবে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। শুধু যে সুযোগ-সুবিধার কারণে সমস্যা হচ্ছে তা কিন্তু নয়। সচেতনতায়ও এখনো নানা গ্যাপ রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যে বাজেটেও এখনো ঘাটতি আমরা দেখছি। এটি কীভাবে বাড়ানো যায় চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে দক্ষ জনবল বাড়ানোর বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এটি হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। এই সমস্যার কারণে অনেকে চাকরি হারান, দেশের প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়, অপরাধের মাত্রা বাড়ে। এমনকি উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ে এই মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে।
তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির পেছনে সায়মা ওয়াজেদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তার কারণেই অনেক গবেষণা হয়েছে, আইনি কাঠামো তৈরি হয়েছে। যা অনেক দেশেই নেই। এগুলো বাস্তবায়নের এখনই সময়।

এ সময় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে পরিবার থেকেই পরিবর্তন আনার ওপর গুরুত্ত্বারোপ করেন সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ।
তিনি বলেন, আমাদের শারীরিক চিকিৎসা নানা কর্মকৌশল থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ছিল না। এ জন্য নানা পরিকল্পনা আমরা করেছি। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য একটা উন্নত পরিবেশ দরকার। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চাইলেই হবে না, আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। পরিবার থেকেই এটি চালু করতে হবে। পরিবারেই তাকে যেন দুর্বল করে দেখা না হয়।
সায়মা ওয়াজেদ বলেন, আজ গর্ব করে বলতে হয় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বাংলাদেশের একটি কর্মকৌশল আছে, একটি আইন আছে। কিন্তু সবাই এগিয়ে না আসলে, কাজ না করলে এগোবে না। সবার আগে নিজেকের পরিবর্তন করতে হবে। জাতি হিসেবে আমরা অনেক কিছু হারিয়েছে। সেখান থেকে উন্নত দেশের কাতারে এসেছি, তাহলে কেন আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের মত জায়গায় এগোতে পারবো না?

আরও পড়ুন >  ফের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ট্রাম্প: বাংলাদেশি জ্যোতিষী

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উন্নতি করতে চাইলে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এখাতে ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের ৬০ ভাগই খরচ হচ্ছে ট্রেনিংসহ অন্যান্য কাজে। তাই বরাদ্দ বাড়ানো খুবই জরুরি।
এ সময় জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেন সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই কর্মকৌশর বাস্তবায়নে একটা বডির প্রয়োজন। যেটি বিএমডিসি মাধ্যমে হবে। মানসিক স্বাস্থ্য শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ নয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দরকার। কিন্তু এগুলোতে এখনো ঘাটতি রয়েছে। গত দুই বছরের আত্মহত্যা বেড়েছে। কীভাবে এটি রোধ করা যায় সেই কৌশল এতে রয়েছে।
তিনি বলেন, পিতামাতা ও সবার সচেতনতা দরকার। আমাদের মনের যত্ন নিতে হবে। কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় এটি যুক্ত করতে হবে।

নিউজবিজয়২৪/এফএইচএন